কুপ্রস্তাবের অভিযোগে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, প্রধান শিক্ষককে গণধোলাই
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার মান্দ্রা-রাধাগঞ্জ ইউনাইটেড ইনস্টিটিউশনে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে গণিত শিক্ষক সাইফুদ্দিন কাজলের শাস্তির দাবিতে ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। অভিযোগ রয়েছে, বিষয়টি বারবার জানানো হলেও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কোনো ব্যবস্থা নেননি, যার ফলে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীরা তাকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
মঙ্গলবার (৬ মে) বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, অভিযুক্ত শিক্ষক সাইফুদ্দিন কাজল বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসান মোহাম্মদ নাসিরউদ্দিনের ভাই। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি ছাত্রীদের কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি কিছু অডিও রেকর্ড ছড়িয়ে পড়লে তা ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। শিক্ষার্থীরা জানায়, প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি জানানো হলেও তিনি কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
এ কারণে শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার বিক্ষোভে নামে এবং বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক প্রবেশ করলে তাকে ঘিরে ধরে অসন্তুষ্ট শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। পরে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়।
বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী আশালতাহাজরা, তিনাবাড়ৈ ও পিঙ্কি বিশ্বাস বলেন, “সাইফুদ্দিন কাজল দীর্ঘদিন ধরে আমাদের নানা ধরনের কুপ্রস্তাব দিচ্ছিলেন। প্রধান শিক্ষককে বারবার জানালেও তিনি কিছুই করেননি। তাই আমরা বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নেমেছি। যতদিন না অভিযুক্ত শিক্ষককে বরখাস্ত করা হবে, আমরা ক্লাসে ফিরবো না।”
প্রধান শিক্ষক হাসান মোহাম্মদ নাসিরউদ্দিন বলেন, “আমি অভিযোগ পেয়েছি। তবে বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি নুরুজ্জামান মিয়া এলাকায় না থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিতে পারিনি। তিনি এলেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
এদিকে, কোটালীপাড়া থানার ওসি মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, “এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঘটনার তদন্তে উপজেলা প্রশাসন এক সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিকনুর আলম বলেন, “উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার এস এম শাহজাহান সিরাজকে প্রধান করে গঠিত এই কমিটিকে দুই কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।”