বাঁশখালীতে বৈদ্যুতিক ফাঁদে হাতি হত্যার অভিযোগ, মরদেহ উদ্ধার বন বিভাগের!
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ধানক্ষেত রক্ষায় স্থাপিত বৈদ্যুতিক ফাঁদে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একটি বন্য হাতির মৃত্যু ও পরে মাটিচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে। ধারণা করা হচ্ছে, প্রায় ৩-৪ দিন আগে হাতিটি মারা গেলে তা গোপনে মাটিচাপা দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (৬ মে) দুপুরে জলদী রেঞ্জের আওতাধীন চট্টগ্রাম বন বিভাগের একটি দল পূর্ব পুঁইছড়ি গ্রামের বশিরা বাড়ি এলাকার বহরা গাছতলায় ধানক্ষেত থেকে হাতিটির মরদেহ উদ্ধার করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই এলাকার মৃত পুতন আলীর দুই ছেলে বাদশা ও মিজানুর রহমান কয়েক একর জমিতে ধান চাষ করেন। ক্ষেত রক্ষার জন্য তাঁরা চারপাশে বৈদ্যুতিক ফাঁদ স্থাপন করেন। কয়েকদিন আগে রাতে একটি হাতি ফাঁদে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেলে তারা মরদেহটি পলিথিনে মুড়ে তড়িঘড়ি করে মাটি চাপা দেন এবং সেখানে গাছ রোপণ করেন।
মঙ্গলবার সকাল থেকে এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় স্থানীয়রা বিষয়টি টের পান এবং বন বিভাগকে খবর দেন।
স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কাশেম জানান, “আমার বাড়ির পাশের জমিতে দুর্গন্ধ পেয়ে গিয়ে দেখি মাটির নিচে কিছুর আভাস, উপর থেকে ঘাস দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। সন্দেহ হলে বন বিভাগকে খবর দিই। পরে তারা এসে মাটি খুঁড়ে হাতিটির মরদেহ উদ্ধার করে।”
জলদী রেঞ্জের ফরেস্টার আনিসুজ্জামান শেখ বলেন, “মৃত হাতিটির বয়স আনুমানিক পাঁচ বছর। বৈদ্যুতিক ফাঁদে পড়ে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করছি। এটি হত্যাকাণ্ড বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে, কারণ প্রাকৃতিক মৃত্যু হলে মরদেহ লুকানোর প্রয়োজন হতো না।”
চকরিয়া ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. হাতেম মো. জুলকারনাইন (মানিক) এবং বাঁশখালী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শাহজাদা মো. জুলকারনাইন (শাওন) ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেন। তবে মরদেহ পচে যাওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে হাতিটির লিঙ্গ শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
ডা. শাহজাদা জানান, “হাতিটির বয়স আনুমানিক ৬-৭ বছর এবং এটি একটি মাদী হাতি ছিল। ৫-৬ দিন আগে ইলেকট্রিক শকে মারা হয়। এরপর পলিথিনে মুড়িয়ে মাটিচাপা দেওয়া হয় যাতে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে না পড়ে।”