সিন্ধু চুক্তি বাতিলে অটল মোদি, উত্তেজনায় ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক চরমে
কাশ্মিরের পেহেলগামে প্রাণঘাতী হামলার পর পাকিস্তানের সঙ্গে বহুল আলোচিত সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মঙ্গলবার (৬ মে) সন্ধ্যায় নয়াদিল্লির এক অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, “সিন্ধু চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্তে কোনো পরিবর্তন আসবে না। ভারতের পানি কেবল ভারতের স্বার্থে ব্যবহৃত হবে।”
সিন্ধু নদীর পানির অধিকারের প্রশ্নে মোদি বলেন, “ভারতের অধিকারের পানি দেশের বাইরে চলে গেছে, এখন থেকে তা আর হবে না। এই পানি দেশের উন্নয়ন ও কৃষকের কল্যাণেই ব্যবহৃত হবে।”
পেহেলগাম হামলার রেশ
গত ২২ এপ্রিল কাশ্মিরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৫ ভারতীয় ও এক নেপালি নাগরিক নিহত হন। এই হামলাকে ২০১৯ সালের পুলওয়ামার পর সবচেয়ে প্রাণঘাতী বলে উল্লেখ করছে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার। তাদের দাবি, এই হামলার পেছনে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ও ডিপ স্টেটের প্রত্যক্ষ মদদ রয়েছে। যদিও পাকিস্তান সরকার অভিযোগ অস্বীকার করে নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।
চুক্তি বাতিলে কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়া
পেহেলগাম হামলার পরই ভারত পাকিস্তানি নাগরিকদের সব ধরনের ভিসা বাতিল, স্থল সীমান্ত ও আকাশপথ বন্ধ এবং ৬৫ বছর পুরনো সিন্ধু চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দেয়। ভারতের এমন পদক্ষেপের পাল্টা জবাবে পাকিস্তানও শিমলা চুক্তি স্থগিত এবং ভিসা ও সীমান্ত কার্যক্রমে কড়াকড়ি আরোপ করেছে। ইসলামাবাদ সতর্ক করে বলেছে, “সিন্ধু চুক্তি বাতিল যুদ্ধ ঘোষণার শামিল।”
চুক্তির তাৎপর্য
১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত এই চুক্তির আওতায় পাকিস্তান সিন্ধু, ঝেলম ও চেনাব নদীর পানি ব্যবহার করত, যা দেশটির প্রায় ৮০ শতাংশ কৃষিজমির সেচের জন্য নির্ভরশীল। চুক্তি অনুযায়ী ভারত ওই পানির প্রবাহ ব্যাহত করতে পারতো না। কিন্তু বাতিলের ফলে ভারত এখন নতুন বাঁধ ও জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ শুরু করেছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে দক্ষিণ এশিয়ায় জল সম্পদকে ঘিরে একটি নতুন উত্তেজনার সূত্রপাত হয়েছে, যার প্রভাব পড়তে পারে সমগ্র অঞ্চলজুড়ে।