মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার দিঘিরপাড় বাজার সংলগ্ন পদ্মার শাখা নদীতে সেতুর অভাবে তিন জেলার লক্ষাধিক মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে চরাঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম হিসেবে ট্রলারই ভরসা। মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর ও চাঁদপুরসহ তিন জেলার অন্তত ১১টি ইউনিয়নের দুই লাখেরও বেশি মানুষ প্রতিদিন এই নদী পার হয়ে যাতায়াত করেন।
নদীর দুই পাড়ের মানুষ মুন্সীগঞ্জ সদর, টঙ্গিবাড়ী উপজেলা ও ঢাকা শহরে যাতায়াতের জন্য ট্রলারের ওপর নির্ভরশীল। তবে মাঝে মাঝে ট্রলার না পাওয়া, অতিরিক্ত ভাড়া, ঝড়-তুফানে ঝুঁকি ও সময়ক্ষেপণ এই পথে যাতায়াতকে অনেক কষ্টকর করে তোলে। বিশেষ করে কাল বৈশাখীর মৌসুমে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা চরম ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার দিঘিরপাড় ঘাটে ট্রলারে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। অতিরিক্ত যাত্রী নিয়েই প্রতিদিন ট্রলারগুলো ছুটে চলে। চরাঞ্চল থেকে ট্রলার ভরে মানুষ বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করে। দীঘিরপাড় হাটে কিছু মানুষ মালপত্র বিক্রি করে, আবার কেউ প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে বাড়ি ফিরছেন, সব কিছুই হচ্ছে ট্রলারের ওপর নির্ভর করে।
স্থানীয়রা বলছেন, পদ্মার শাখা নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণ করলে মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী, শরীয়তপুরের নওপাড়া, চাঁদপুরের হাইমচরসহ সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষ উপকৃত হবে।
দীঘিরপাড় গ্রামের বাসিন্দা আউয়াল মিয়া বলেন, "এই নদীর ওপারে চরাঞ্চল, এবং সেখানে একমাত্র বাহন ট্রলার। শরীয়তপুর, চাঁদপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় যোগাযোগ সহজ করতে পদ্মার শাখা নদীর ওপর সেতু নির্মাণ করা দরকার।"
শরীয়তপুরের নওপাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা মাসুদ জমাদ্দার বলেন, "রাতের বেলা ট্রলার পাওয়া যায় না এবং পাওয়া গেলেও ভাড়া বেশি দিতে হয়। মুন্সীগঞ্জের দিকে যাতায়াত করতে প্রচুর সমস্যা হয়।"
টঙ্গিবাড়ী উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, "দিঘিরপাড় বাজার সংলগ্ন পদ্মার শাখা নদীতে ১০০ মিটারের একটি সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া নদীর পশ্চিম পাড়ে চার কিলোমিটার দীর্ঘ আরসিসি সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনাও আছে।"
স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন, যাতে তাদের যাতায়াত সহজ হয় এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রমে গতি আসে।