মাদকবিরোধী প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে মাদক ব্যবসায়ী, আদালতের ব্যতিক্রমী সাজা

উপজেলা প্রতিনিধি, রাণীশংকৈল

১০ এপ্রিল, ২০২২, ২ years আগে

মাদকবিরোধী প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে মাদক ব্যবসায়ী, আদালতের ব্যতিক্রমী সাজা

ঠাকুরগাঁয়ে মানবিক বিবেচনায় এক মাদকের আসামির কারাদণ্ডের রায় পরিবর্তন করে মাদকবিরোধী সচেতনতামূলক প্ল্যাকার্ড হাতে আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে থাকার ব্যতিক্রমী সাজা দিয়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের একটি আদালত।

আদালতের আদেশ কার্যকরের প্রথম দিন রোববার দুপুরবেলা এক ঘণ্টা প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে আসামি আব্দুল্লাহকে আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। তাকে এই ব্যতিক্রম সাজা একমাস ভোগ করতে হবে।

বুধবার ঠাকুরগাঁওয়ের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক গাজী দেলোয়ার হোসেন এ সিন্ধান্ত দেন বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল হামিদ জানান।

প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল- ‘মাদক ব্যবসার জন্য আমি দুঃখিত, লজ্জিত, অনুতপ্ত ও ক্ষমাপ্রার্থী। মাদক দেশ ও দেশের শত্রু, মাদক পরিহান করুন।’দণ্ডিত আব্দুল্লাহ (৫২) ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার রাউতনগর গ্রামের মৃত মনতাজ আলীর ছেলে।

মামলার বরাতে আব্দুল হামিদ বলেন, ২০১৫ সালে রাণীশংকৈল থানা পুলিশ আব্দুল্লাহকে ১২ বোতল ফেন্সিডিলসহ গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা হয়। তদন্ত শেষে মামলার রাণীশংকৈল থানার এসআই আক্তারুল ইসলাম ২০১৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন।

স্বাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে ঠাকুরগাঁওয়ের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক গাজী দেলোয়ার হোসেন বুধবার আব্দুল্লাহকে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন। অনাদায়ে আরও একমাসের কাদারদণ্ড ও তিনহাজার টাকা অর্থদণ্ডও দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী বলেন, রায় ঘোষণার সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী জাকির হোসেন আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন- দণ্ডিত আব্দুল্লাহ একজন গরীব কৃষক এবং তিনিই তার পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি। তার দুই মেয়ে সন্তান রয়েছে। এ সময় আব্দুল্লাহও অনুতপ্ত প্রকাশ করে আদালতে কাছে সংশোধনের সুযোগ প্রার্থনা করেন।

আসামি ও তার পক্ষের আইনজীবীর কথা শোনার পর মানবিক বিবেচনায় বিচারক রায় পরিবর্তন করে একমাস বিরতি ছাড়া বেলা ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত আদালত চত্বরে মাদকবিরোধী সচেতনতামূলক ‘প্ল্যাকার্ড’ হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার আদেশ দেন। আদালতের এই আদেশের ব্যত্যয় ঘটলে আসামি আব্দুল্লাহ সাজা ভোগ করবে বলেও বিচারক আদেশে উল্লেখ করেন বলে জানান আব্দুল হামিদ।

প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার সময় কথা হয় দণ্ডিত আব্দুল্লাহর সঙ্গে। এ সময় প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, “মানবিক বিবেচনায় আদালতের বিচারক যে সাজাটি দিয়েছেন এজন্য আমি খুশি। এই সাজাটি শেষ হলে মামলাটি নিস্পত্তি হবে। এরপর আমি সমাজে একজন ভাল মানুষ হিসেবে চলব এবং সৎভাবে উপার্জন করে পরিবার নিয়ে জীবনযাপন করব”।

পত্রিকা একাত্তর/ আনোয়ার হোসেন আকাশ

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news