গাইবান্ধায় ১০ বছরের শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে ডোমারের দুই যুবক গ্রেফতার

উপজেলা প্রতিনিধি, ডোমার

উপজেলা প্রতিনিধি, ডোমার

৩ মার্চ, ২০২২, ২ years আগে

গাইবান্ধায় ১০ বছরের শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে ডোমারের দুই যুবক গ্রেফতার

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় ১০ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে নীলফামারীর ডোমার উপজেলার হাফেজ মোহাম্মদ মোরসালিন ও আব্দুল্লাহ আল মামুন নামে দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (৩রা মার্চ) বিকেলে গাইবান্ধা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে প্রেস করফারেন্সে বিষয়টি নিশ্চিত করেন গাইবান্ধার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।

নীলফামারীর ডোমার উপজেলার জোড়াবাড়ি ইউনিয়নের মো. জাহিদুল ইসলামের পুত্র হাফেজ মোহাম্মদ মোরসালিন গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের বড় সাতাইল বাতাইল গ্রামের এক মসজিদের মুয়াজ্জিন ও মক্তবের শিক্ষক। তিনি মসজিদ সংলগ্ন একটি কক্ষে থাকতেন। প্রতি সকালে এলাকার শিশুদের মক্তবে কোরআন শিক্ষা দিতেন মোরসালিন।

ভুক্তভোগী নিহত হাসনা (১০) এর মা মসজিদের অদূরে নানা খয়বর রহমান বাবলুর বাড়িতে থাকতেন। তার বাবা রাখালবুরুজ ইউনিয়নের কাজীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা, তিনি ঢাকায় কাজ করেন।

ঘটনাটিতে জড়িত সন্দেহে নীলফামারীর ডোমার উপজেলার জোড়াবাড়ি ইউনিয়নের মাহাতাব আলীর পুত্র আবদুল্লাহ আল মামুন, গোবিন্দগঞ্জের হিরোকপাড়া গ্রামের আজাহার আলীর পুত্র আলামিন হোসেন ও জঙ্গলমারা গ্রামের মোজাফফর আলী খন্দকারের পুত্র আরাফাত খন্দকারকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

প্রেস করফারেন্সে গাইবান্ধার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিনের ন্যায় গত ২৬ ফেব্রুয়ারী সকালে মুয়াজ্জিন হাফেজ মোহাম্মদ মোরসালিন ধর্ষণ ও ধর্ষণের পর হত্যার শিকার শিশুসহ আরো কয়েকটি শিশুকে মসজিদে মক্তব পড়ান। পড়া শেষে মোরসালিন গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার বর্ধনকুঠি এলাকার এক ব্যক্তির বাড়িতে আরবি পড়াতে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে রাস্তায় ভুক্তভোগী শিশুর সঙ্গে তার দেখা হলে তাকে মসজিদ সংলগ্ন কক্ষটিতে নিয়ে আসেন মোরসালিন। এসময় ঐ শিশুকে টাকা দিয়ে পার্শ্ববর্তী দোকান থেকে বিস্কুট কিনে আনতে বলেন তিনি।ঐ শিশু বিস্কুট কিনে আনলে মোরসালিন তাকে বিস্কুট খেতে দেয়। বিস্কুট খাওয়ার পর ঐ শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে সে বাধা দেয় এবং নানী কে বিষয়টি বলে দেবে এই কথা বলার পর হাসনার গলা টিপে ধরেন মোরসালিন। এর কিছুক্ষণ পর শিশুটি নিস্তেজ হলে তাকে ধর্ষণ করে মোরসালিন। তারপর শিশুর পড়নের হিজাব স্কার্ফ দিয়ে তার গলায় পেঁচিয়ে তাকে হত্যা করে মোরসালিন। পরে মোরসালিন নিহতের নিথর দেহ সিমেন্টের খালি বস্তায় ঢুকিয়ে দুই কিলোমিটার দূরে সাইকেলের পেছনে ক্যারিয়ারে বেঁধে নিয়ে বর্ধনকুঠি এলাকার একটি বাঁশঝাড়ে ফেলে দিয়ে আসেন। পরের দিন দুপুরে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় শিশু হাসনার মামা সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামী দেখিয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে মোরসালিন, আবদুল্লাহ আল মামুন, আলামিন হোসেন ও আরাফাত খন্দকারকে আটক করে ডিবি পুলিশ। তাদের মধ্যে মোরসালিন, আবদুল্লাহ আল মামুন, আলামিন হোসেনকে তিন দিনের রিমাণ্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে মোরসালিন ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকারোক্তি প্রদান করেন।

আটককৃত অন্যদের বিষয়ে তথ্য যাচাই-বাছাই চলছে বলে জানান পুলিশ সুপার। ঘটনাস্থল থেকে মোরসালিন সাইকেলে করে ওই শিশুটির লাশ বর্ধনকুঠি এলাকায় নিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তার পাশে একটি চায়ের দোকানে লাগানো সিসি ক্যামেরার ফুটেজে সংগ্রহ করা হয়। ফুটেজে মোরসালিনের সাইকেলের পেছনে করে লাশ পরিবহনের চিত্র দেখা যায়। এজন্য ওই দোকানের মালিককে পুরস্কার দেন পুলিশ সুপার।

পত্রিকা একাত্তর/রিশাদ

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news