সাগরে ২০ ট্রলার ডুবি, নিখোঁজ ২৫, উদ্ধার ৩০

উপজেলা প্রতিনিধি, পাথরঘাটা

৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২২, ২ years আগে

সাগরে ২০ ট্রলার ডুবি, নিখোঁজ ২৫, উদ্ধার ৩০

বরগুনার দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরের গভীরে প্রবল ঝড়ের কবলে পড়ে ২০ টি মাছ ধরা ট্রলার ডুবির খবর পাওয়া গেছে। শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১ টার দিকে ২৫ জেলে ও ২০ ট্রলার নিখোঁজের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ফিশিং মালিক বোট এসোসিয়েশন ও বরগুনা জেলা মৎস্যজীবি ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী।

এর আগে শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে সুন্দরবন সংলগ্ন গভীর সমুদ্রের ফেয়ার বয়া এলাকায় এঘটনা ঘটে।

এখন পর্যন্ত ৩০ জেলে উদ্ধার হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলে ও ট্রলার মালিক সংশ্লিষ্টরা। ট্রলার ডুবি ও নিখোঁজের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করছেন তারা। তবে কোস্টগার্ডের পশ্চিম জোনের লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মো. রুস্তুম জানিয়েছে দুপুর ১টা পর্যন্ত ২টি ট্রলার ও ৩ জেলে উদ্ধার হয়েছে।

নিখোঁজ জেলেদের বাড়ি বরগুনা, পিরোজপুর, বাগেরহাট ও পটুয়াখালী জেলার বিভিন্ন এলাকায়। ডুবে যাওয়া ট্রলারগুলোর মধ্যে এফবি মায়ের দোয়া, এফবি আনিছ ও এফবি ইলিয়াসের নাম জানা গেছে।

এফবি মায়ের দোয়া ও এফবি আনিচ ট্রলার মালিকের বরাত দিয়ে মোস্তফা চৌধুরী বলেন, নিখোঁজ জেলেদের সন্ধানের জন্য জেলা ট্রলার মালিক সমিতির পক্ষ থেক উদ্ধার অভিযান কয়েকট ট্রলার ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে এবং কোস্টগার্ডকেও জানিয়েছি। নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের উদ্ধার অভিযান অভ্যাহত থাকবে।

তিনি আরো জানান, আজ শনিবার বেলা ১২টা পর্যন্ত ৩০ জেলেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এখনো ২৫ নিখোঁজ রয়েছেন ও ২০ টি ট্রলার ডুবির ঘটনা আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে এবং জেলেদের নিখোজের সংখ্যা বাড়তে পারেও বলে তিনি জানান।তিনি বলেন, ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটার প্রায় ১২ থেকে ১৩ ঘন্টা অতিক্রম করেছে। এই দীর্ঘ সময়েও যখন তাদেকে উদ্ধার করা যায়নি তাতে আমাদের ধরনা এখন আর কেউ বেচে নেই।

লেফটেন্যান্ট মো. রুস্তুম মুঠোফোনে বলেন, ট্রলার ডুবির খবর পাওয়ার পর রাত থেকে আমাদের পেট্রলিং টিম সাগরে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত ২টি ট্রলার এবং ৩ জেলেকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। তবে আমাদের পেট্রলিং টিম বর্তমানে নেটওয়ার্কের বাহিরে থাকায় এর চেয়ে আপডেট জানাতে পারছিনা। সর্বশেষ খবর পাওয়ার সাথে সাথেই গনমাধ্যমকে আমরা জানাবো।

বঙ্গোপসাগরের গভীরে প্রবল ঝড়ের কবলে পড়ে ট্রলার, জেলেদের নিখোঁজ ও নিহতের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রাট সৃষ্টি হয়েছে। জেলে, ট্রলার মালিক সমিতি ও কোস্টগার্ড কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্যে এ বিভ্রাটের সৃষ্টি হয়। তবে নিখোঁজ জেলেদের বাড়ি বরগুনা, পিরোজপুর, বাগেরহাট ও পটুয়াখালী জেলার বিভিন্ন এলাকায় বলে জানিয়েছেন জেলা মৎস্যজীবি ট্রলার মালিক সমিতি, জেলে ও কোস্টগার্ডসহ সংশ্লিষ্ঠরা।

বাংলাদেশ ফিসিং বোট মলিক এসোসিয়েসন ও বরগুনা জেলা ট্ররার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ডুবে যাওয়া ট্রলারগুলোর মধ্যে এফবি মায়ের দোয়া, এফবি আনিছ ও এফবি ইলিয়াস নামের ট্রালারের নাম জানা গেছে।

এফবি মায়ের দোয়া ও এফবি আনিচ ট্রলার মালিকের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, “জেলেদের কাছ থেকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ২০ ট্রলার ডুবির খবর পাওয়া গেছে ও ২৫ জেলে এখনো নিখোঁজ রয়েছে এবং ৩০ জেলেকে উদ্ধার করা হয়েছে।” তবে তিনি ধারনা করেন, ট্রলার ডুবির ঘটনার প্রায় ১২ থেকে ১৫ ঘন্টা অতিক্রম হলেও নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারের খবর না পাওয়ায় তাদের বেচে না থাকা সম্ভাবনা বেশী।

এদিকে দুবলা ফিশারম্যান গ্রুপের সভাপতি কামাল উদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, কতগুলো ট্রলার সাগরে ডুবে গেছে এখনো শতভাগ নিশ্চিতভাবে তার তথ্য জানা যায়নি। তবে মাঝিদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে ১৫ থেকে ২০টা ট্রলার ডুবে গেছে।

কোস্টগার্ডের দক্ষিন জোন পাথরঘাটা স্টেশনের কমান্ডার লে. হারুন অর রশিদ বলেন, ট্রলার ডুবির ঘটনার খবর আমাদের স্টেশনে এখন পর্যন্ত কোন তথ্য আসেনি।

কোস্টগার্ডের পশ্চিম জোন স্টেশনের লেফটেন্যান্ট মো. রুস্তুম বলেন, ট্রলার ডুবির খবর পাওয়ার পর রাত থেকে আমাদের পেট্রলিং টিম সাগরে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত ২টি ট্রলার এবং ৩ জেলেকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। তবে আমাদের পেট্রলিং টিম বর্তমানে নেটওয়ার্কের বাহিরে থাকায় এর চেয়ে আপডেট জানাতে পারছিনা। সর্বশেষ খবর পাওয়ার সাথে সাথেই গনমাধ্যমকে আমরা জানাবো।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত গভীর রাতে হঠাৎ ঝড়ের কবলে পড়ে সুন্দরবন সংলগ্ন গভীর সমুদ্রের ফেয়ার বয়া এলাকায় একাধীক ট্ররার ডুবির ঘটনা ঘটে। পরে এঘটনায় বেশকিছু জেলে উদ্ধার হলেও অনেক জেলে এখনো নিখোঁজ রয়েছে। নিখোঁজদের উদ্ধারের জন্য জেলা ট্রলার মালিক সমিতি ও কোস্টগার্ডের দক্ষিন জোনের সদস্যরা উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছেন।

পত্রিকা একাত্তর/তাওহিদুল ইসলাম

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news