গ্রামীণ প্রেক্ষাপটে নির্মিত হয়েছে ‘গলুই’। এতে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন অনুষঙ্গ তুলে ধরা হয়েছে। সেই সঙ্গে একটি সহজ-সরল প্রেম কাহিনি। এতে শাকিব অভিনয় করেছেন লালু চরিত্রে, আর পূজা আছেন মালার ভূমিকায়। ঈদ উপলক্ষে মুক্তি পেয়েছে সরকারি অনুদানের নির্মিত সিনেমা ‘গলুই’। জামালপুর শহরে কোনো সিনেমা হল না থাকায় শিল্পকলা একাডেমিসহ ৪ মিলনায়তনে সরকারি অনুদানে নির্মিতেএই সিনেমার প্রদর্শনী চলছিল। এর মধ্যেই ১৯১৮ সালের সিনেমাটোগ্রাফ আইন দেখিয়ে জেলা প্রশাসন সিনেমার ‘প্রদর্শন বন্ধ করে দিয়েছে’ বলে অভিযোগ করেন প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু।
বিষয়টি নিয়ে চলচ্চিত্রঙ্গনের অনেকে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এবার পূজা চেরি 'গলুই' সিনেমার প্রদর্শনী বন্ধ করে দেওয়ায় প্রতিবাদ জানালেন, ১০ মে মঙ্গলবার নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে পূজা চেরি এই বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন। তিনি লেখেন,
Hello Everyone ……
আশা করছি সবাই ভালো আছেন ।
জামালপুরের তিনটি অডিটোরিয়ামে "গলুই" চলচ্চিত্রের প্রদর্শন হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আপনারা সবাই যেভাবে প্রতিবাদ করছেন তা দেখে আসলেই খুব ভালো লাগছে । এর জন্য আমি আমার সকল দর্শক আমার সহকর্মী আমার সাংবাদিক ভাই এবং বোন , নাট্য ও চলচ্চিত্র প্রযোজক,পরিচালক, লেখক,কলাকুশলী এবং গুণীজন আপনাদের সবার কাছে আমি অনেক বেশি কৃতজ্ঞ 🙏 ।
আমি অনেক বেশি অবাক হয়েছি যে চলচ্চিত্রের এ খরার সময়ে এই ঈদে সব দর্শক হলমূখী হয়েছে । হলে গিয়ে বাংলা সিনেমা দেখছে ।
আপনারা সবাই জানেন আমাদের “গলুই” সিনেমার দৃশ্যধারণের প্রায় ১০০ ভাগের মধ্যে ৯০ ভাগই শুটিং হয়েছে জামালপুরে । এর জন্য জামালপুরবাসীর আলাদা একটা আগ্রহ থাকতেই পারে গলুই সিনেমাটি দেখার প্রতি ।
যেহেতু জামালপুরে বিভিন্ন জায়গায় হল নেই এর জন্য দর্শকদের কথা ভেবে তিনটি অডিটোরিয়ামে সিনেমাটি দেখানোর ব্যবস্থা করে দেওয়া হয় ।
আমি জামালপুরে যাওয়ার আগে ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে আমার দুইটি সিনেমার বিভিন্ন হল প্রর্দশনে গিয়েছিলাম এবং বেশিরভাগ জায়গায় হাউসফুল ছিলো । সোশ্যাল মিডিয়া এবং বিভিন্ন ফোনের মাধ্যমে জানতে পারলাম জামালপুরে যেসব জায়গায় সিনেমাটি চালানো হচ্ছে শুধুমাত্র সকালের শো বাদে সব শো হাউজফুল যাচ্ছে ।
তখন ভাবলাম জামালপুরে অবশ্যই যাওয়া দরকার । আমি এবং আমার গলুই টিমের প্রায় সকলে মিলে চলে গেলাম জামালপুর । আমি সত্যিই খুব অবাক হয়েছি যেসব জায়গায় গলুই চলছে ভেতরে তিল ফেলানোর জায়গা তো নেই তার উপর গাড়ি অডিটোরিয়ামের ভেতর রাখা যাচ্ছিলো না দর্শকদের ভীড়ে । ইতিমধ্যেই আপনারা সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখেছেন সেসব ছবি এবং ভিডিও ।
তবে হঠাৎ করে জামালপুরের তিনটি অডিটোরিয়ামে "গলুই" চলচ্চিত্রের প্রদর্শন বন্ধ হয়ে যাওয়ার ব্যাপারটি অত্যন্ত দুঃখজনক । যেখানে কিনা গলুই একটি সামাজিক সিনেমা যেখানে কিনা দর্শক নিজেরা চাইছে সিনেমাটি দেখার জন্য যেখানে কিনা প্রত্যেক শো হাউজফুল যাচ্ছে সেখানে এভাবে শো বন্ধ হয়ে যাওয়াটা অতি দুঃখজনক ।
আমরা আমাদের চলচ্চিত্রের এ সময়ে যদি নিজেরা নিজেদের পাশে না দাঁড়াই তাহলে আমাদের চলচ্চিত্র ধ্বংস হতে বেশিক্ষণ লাগবে না। তবে আমি চাইবো জামালপুরবাসীরা যেহেতু তারা পরিবার নিয়ে সিনেমাটি দেখতে চাইছে তাদের এই অধিকার থেকে বঞ্চিত না করা হোক ।
একজন চলচ্চিত্রপ্রেমী হিসাবে আমি চাইবো দর্শকদের হলমূখী করাতে এবং আগের সেই স্বর্নালী যুগের মতো চলচ্চিত্র দেখার অভ্যাস করাতে যেখানে কিনা আমরা ভুলেই গিয়েছিলাম বাংলা সিনেমা দেখা ।
গলুই সিনেমাটি যেহেতু একটি সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত বাংলা সিনেমা সেহেতু দেশ এবং সরকারের প্রতি শ্রদ্ধা এবং সন্মান রেখেই সিনেমাটি তৈরি করা হয়েছে । তাই বিনয়ের সাথে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষন করে বলছি , জামালপুরের দর্শকদের যেনো পুনরায় সিনেমাটি দেখার ব্যবস্থা করে দেন ।
বাংলা চলচ্চিত্রের জয় হবেই ।
জয় বাংলা চলচ্চিত্রের
জয় বঙ্গবন্ধু ✊✊
পত্রিকা একাত্তর / মোঃ মাসুদ পারভেজ রানা