বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার বলেছেন, বর্তমান ফ্যাসিষ্ট সরকার ভোট ডাকাতির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলে রেখে বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। জনগনের টাকা লুটপাট করে নিজেরা মোটাতাজা হয়েছে। মাথাপিছু আয় শুধু ক্ষমতাসীনদের বেড়েছে আর দেশের জনগণ ফকির হয়ে রাস্তায় এসে দাঁড়িয়েছে। দুর্নীতির দায়ে সরকারি দলের যে নেতাই ধরা পড়ছে তাদের কাছে হাজার হাজার কোটি কালো টাকা পাওয়া যাচ্ছে। এরা জনগণের সেবক নয় শোষক, এরা লুটেরার দল। এদের থেকে দেশের মানুষ মুক্তি চায়। দেশে গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে সকলকে আরও ঐকবদ্ধ হতে হবে। গণতন্ত্রের প্রতীক সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আপোষহীন নেতৃত্ব আমাদের অনুপ্রেরণা। অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।

তিনি শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) বিকালে পাঁচলাইশস্থ শাইলা স্কয়ারে পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে চট্টগ্রাম শাখা ড্যাবের উদ্যোগে ইফতার মাহফিল ও চিকিৎসক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

ডা. ডোনার বলেন, সরকার দেশের মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ থেকে দ্বিগুণ হারে ট্যাক্স, ভ্যাট নিয়ে মেগা প্রকল্পের নামে মেঘা দুর্নীতির মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। সেই কারণে আজ দেশের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসহ তেলের দাম, গ্যাসের দাম ঊর্ধ্বগতি হয়েছে। এই স্বৈরাচারী সরকারের দমন, নিপীড়ন নির্যাতনের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্ষবদ্ধ হতে হবে। গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় সোচ্চার হতে হবে। দেশ বাঁচানোর লক্ষ্যে, মানুষ বাঁচানোর লক্ষ্যে, রাজপথে আন্দোলনে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে ড্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশীদ বলেন, পবিত্র এই রমজান মাসে মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় চাল, ডাল, তেলসহ পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার আজকে বাংলাদেশকে এমন এক অবস্থানে নিয়ে গেছে যে মানুষ আর বেঁচে থাকার উপায় খুঁজে পাচ্ছে না। তারা জনগণের টুঁটি চেপে ধরে জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। কেউ সরকারের সমালোচনা করলে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। তারা গুরুতর অসুস্থ বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে অন্যায়ভাবে গৃহবন্দী করে রেখেছে। এ মামলাবাজ সরকার যতক্ষণ না পর্যন্ত বিদায় না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এদেশের মানুষ মানুষের জুলুম নির্যাতন শেষ হবে না।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, গত ১০ বছরে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি হয়েছে ৯০ শতাংশ, গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পেয়ছে ১৪৪ শতাংশ, ডিজেলের দাম বেড়েছে ৮২ শতাংশ, পানির দাম বেড়েছে ২৬৪ শতাংশ। এই দাম বৃদ্ধি নজিরবিহীন ও অস্বাভাবিক। জনগণের নির্বাচিত সরকার থাকলে এই ধরনের সীমাহীন দাম বৃদ্ধি পেতো না। জবাবদিহিতা নেই বলেই দাম বৃদ্ধির পেছনে অনৈতিক সিন্ডিকেট কাজ করছে। ক্ষুধা ও অনাহারে ক্লিষ্ট জনগণের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে নিপতিত করেছে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী। যেন সরকারের কোন দায় নেই। সারাদেশে দুর্ভিক্ষের ছায়া প্রতিদিনই বিস্তৃত হচ্ছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড্যাবের কেন্দ্রীয় মহাসচিব অধ্যাপক ডা. আবদুস সালাম বলেন, বর্তমান সরকার ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মত আর একটি পাতানো নির্বাচনের নীলনকশা শুরু করেছে। কিন্তু দলীয় কোন সরকারের অধীনে বিএনপি আর কোন নির্বাচনে অংশ নিবে না। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যথায় জনগণকে সাথে নিয়ে দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটিয়ে গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করা হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, বর্তমান ক্ষমতা দখলদার সরকার সম্পুর্ন জন‌বি‌চ্ছিন্ন ও অমান‌বিক সরকার। জনগ‌ণের প্রতি তা‌দের কোন দায়বদ্ধতা না থাকায় প‌বিত্র রমজান মা‌সে সরকারী সি‌ন্ডি‌কে‌টের কার‌ণে দ্রব‌্যমূল‌্য আকাশচু‌ম্বি। মানুষ প‌রিবার প‌রিজনের ভরণপোষণ মিটা‌তে দি‌শেহারা হ‌য়ে পড়েছে। এই জলুমবাজ ও জন‌বিচ্ছিন্ন সরকার‌কে দে‌শের মানুষ ক্ষমতায় দেখ‌তে চায়না।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সি. যুগ্ম সম্পাদক ডা. মো. ঈসা চৌধুরীর পরিচালনায় প্রধান বক্তা ছিলেন ড্যাবের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশীদ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, কেন্দ্রীয় ড্যাবের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. আবদুস সালাম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী।

বক্তব্য রাখেন ড্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি ডা, শহীদ হাসান, প্রফেসর ডা. তমিজ উদ্দিন আহমেদ মানিক, কোষাধ্যক্ষ ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, চট্টগ্রাম মহানগর ড্যাবের সভাপতি প্রফেসর ডা. মো. আব্বাস উদ্দিন, কেন্দ্রীয় ড্যাবের যুগ্ম মহাসচিব ডা. সাইফুদ্দীন নিসার আহম্মেদ তুষান, ডা. সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. রেজাউল আলম নিপ্পন, চট্টগ্রাম জেলা ড্যাবের সি. সহ সভাপতি ডা. মো. রকিব উল্লাহ, চমেক ড্যাবের সি. সহ সভাপতি আবদুর রব, মহানগর ড্যাবের সি. সহ সভাপতি ডা. রাসেল ফরিদ চৌধুরী, চমেক ড্যাবের সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. ফয়েজুর রহমান, জেলা ড্যাবের সাধারণ সম্পাদক ডা. বেলায়েত হোসেন ঢালী, চমেক ড্যাবের কোষাধ্যক্ষ ডা. সৈয়দ মাহতাবুল ইসলাম, ড্যাবের কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. এস এম সারোয়ার আলম প্রমূখ।

পত্রিকা একাত্তর/ ইসমাইল ইমন