রাজশাহীতে সংবাদ প্রকাশের জেরে পত্রিকার সম্পাদকসহ চার সাংবাদিকের নামে মিথ্যা মামলা ও সারাদেশে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাব।

বুধবার (১৭ আগস্ট) সকাল ১০ টায় রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিক রবিউল ইসলাম ও দৈনিক নাগরিক ভাবনার সম্পাদকসহ চারজনের নামে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদ জানানো হয়। মানববন্ধনে লালমনিরহাট চার সাংবাদিকের ওপর হামলা ও ঢাকায় পুলিশের উপস্থিতিতে সাংবাদিকদের মারধরেরও তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়।

সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিমের সঞ্চালনায় ও সভাপতি আবু কাওসার মাখন এর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাজাহান আলী বরজাহান, জননেতা আতাউর রহমান স্মৃতি পরিষদের সহ-সভাপতি সালাউদ্দিন মিন্টু, রাজশাহী রিপোর্টাস ইউনিটির সভাপতি আব্দুল মুগনি নিরো, রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা দৈনিক রাজশাহীর আলো পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক আজিবার রহমান।

মানববন্ধনে রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ বলেন, সারাদেশে সাংবাদিকদের ওপর হামলা এখন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। দ্রুত হামলারকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে সাংবাদিক সমাজ ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন গড়ে তুলবে। সাংবাদিকদের ওপর হামলা কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার মত নয়। অবিলম্বে ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনার জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করা হয় মানববন্ধনে।

রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম বলেন, বারবার সাংবাদিকদের ওপর হামলা হচ্ছে কিন্তু যথোপযুক্ত শাস্তি হচ্ছে না। আমরা সরকারকে অনুরোধ করছি দ্রুত সাংবাদিকদের সুরক্ষায় আইন প্রণয়ন করুন। এভাবে সাংবাদিকদের উপর নির্যাতন, মামলা, হামলা হলে সাংবাদিক সমাজ ঘরে বসে থাকবে না।

এসময় মিথ্যা মামলার শিকার দৈনিক নাগরিক ভাবনার রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি রবিউল ইসলাম বলেন, হামলা ও মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে সাংবাদিকদের কলম আাটকে রাখা যাবে না। দূর্নীতিবাজদের তথ্য মানুষের সামনে আনায় শুরুতেই বড় বড় রাজনৈতিক নেতাসহ উর্ধতন সরকারি কর্মকর্তাদের নামে হুমকির শিকার হয়েছি। এরপরেও যখন সত্য প্রকাশ বন্ধ করিনি তখন হয়েছি মিথ্যা মামলার শিকার। তবুও আমি থেমে যাবো না। একদম শেষ পর্যন্ত দূর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কথা বলে যাবো।

এসময় বক্তারা বলেন, গত শুক্রবার (১২ আগস্ট) সংবাদ সংগ্রহ শেষে ফেরার পথে যমুনা টিভির লালমনিরহাট প্রতিনিধিসহ চার গণমাধ্যমকর্মীর ওপর হামলা হয়। হামলার শিকার সাংবাদিকরা হলেন- যমুনা টিভির আনিসুর রহমান লাডলা, প্রথম আলোর আব্দুর রব সুজন, এখন টেলিভিশনের মাহফুজুল ইসলাম বকুল ও যমুনা টিভির ক্যামেরাপারসন আহসান।

এদিকে রাজধানীর কামরাঙ্গীর চরে এসপিএ ডায়গনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতালে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সিনিয়র সাংবাদিক হাসান মিসবাহ ও ক্যামেরা পারসন সাজু মিয়ার ওপর হামলা হয়েছে।

অপরদিকে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার সরেরহাট কল্যাণী শিশু সনদের তিন পর্বের ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশ করেন জাতীয় দৈনিক নাগরিক ভাবনা পত্রিকা। সংবাদ প্রকাশের জেরে পত্রিকাটির সম্পাদক ও প্রকাশক ও রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি রবিউল ইসলামসহ চারজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। উক্ত হামলা ও মামলা প্রত্যাহারসহ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি জানানো হয় মানববন্ধনে।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহঃ সভাপতি শামসুল ইসলাম, সহ সভাপতি ফারুক আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল আমিন হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক লিয়াকত হোসেন, কোষাধ্যক্ষ ওদুদুজ্জামান সুবাস, নির্বাহী সদস্য, শাহিনুর রহমান সোনা, মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিক শাহিন সাগর, জুবায়ের আলম রাজন, সদস্য, আনসার তালুকদার স্বাধীন, এফ ডি আর ফায়সাল, শফিফুল ইসলাম, আজাদ আলী, রবিউল ইসলাম, শানাউল কবির, হাসেম আলী, কামাল, রিদয়, রাকিব, রাজিব হোসেন রাতুল, তমাল দাস, মেহেদি হাসান, সোনিয়া, রকি, লিটন, মিম, মামুন প্রমুখ।

পত্রিকাএকাত্তর /রবিউল ইসলাম