কীর্তি সুরেশ একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী, যিনি মূলত তামিল, তেলুগু এবং মালয়ালম চলচ্চিত্রে অভিনয় করে থাকেন। আজ এই অভিনেত্রী ৩১তম জন্মদিন ১৭ অক্টোবর ১৯৯২ সালে জন্মগ্রহণ করেন। কীর্তির জন্ম মালয়ালম চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিচালক সুরেশ কুমার এবং তামিল অভিনেত্রী মেনকা’র পরিবারে।
রেবতী সুরেশ নামে তার একজন বড় বোন রয়েছে। চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত কীর্তি তামিলনাড়ুর চেন্নাইয়ের বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। পরবর্তীতে পার্ল একাডেমি, যেখানে তিনি পোশাক নকশাকরণে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন, সেখানে যোগদানের জন্য চেন্নাই ফিরে আসার পূর্বে তিনি তিরুবনন্তপুরমের পাত্তমে কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। লন্ডনে দুই মাসের ইন্টার্নশীপ শেষ করার আগে স্কটল্যান্ডে চার মাস ধরে একটি বিনিময় কর্মসূচিতেও সময় কাটিয়েছিলেন তিনি।
অভিনয়ে ক্যারিয়ার গড়ার পরেও এক বিবৃতিতে তিনি জানিয়েছিলেন যে, “নকশাকরণকেও তিনি গুরুত্ব সহকারে একটি পেশা হিসাবে বিবেচনা করেন”। ২০০০-এর দশকের গোড়ার দিকে কীর্তি তার পিতার প্রযোজিত চলচ্চিত্র, যেমন: পাইলটস (২০০০), আচানিয়ানেনিক্কিষ্টম (২০০১), কুবেরান (২০০২) এবং কয়েকটি টেলিভিশন ধারাবাহিকে শিশু অভিনেত্রী হিসাবে কাজ করেছিলেন। কুবেরান-এর ১১ বছর পরে তিনি প্রিয়দর্শনের ভৌতিক চলচ্চিত্র গীতাঞ্জলি-তে মূখ্য অভিনেত্রী হিসাবে অভিনয়ে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন, যেখানে তিনি দ্বৈত ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন।
তিনি তখনো পড়াশোনা করছিলেন এবং সেমিস্টার বিরতির সময় গীতাঞ্জলি-র শুটিংয়ে অংশ নিয়েছিলেন। চলচ্চিত্রটি ও তার অভিনয় সম্পর্কে মিশ্র মন্তব্যের সৃষ্টি হয়েছিল, সিফি তাকে নিয়ে লিখেছিল যে, “তিনি মোটামুটি চেষ্টা করেছেন, তবে দ্বৈত চরিত্রগুলিতে কেবল সীমিত অনুভূতিই তৈরি হয়েছে”,যখন রেডিফ লিখেছিল, “তিনি একটি দারুণ ভূমিকা পেয়েছেন, তবে তিনি তার অভিনয়ের ক্ষমতা দিয়ে অন্য বিষয়ে মুগ্ধ করেছেন”।
২০১৪ সালে কীর্তি অভিনীত পরবর্তী চলচ্চিত্রটি ছিল রাফি পরিচালিত রিং মাস্টার, যেখানে তিনি দিলীপের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন। ছবিটিতে তিনি একজন অন্ধ মেয়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন, যা তিনি গীতাঞ্জলি-তে তার দ্বৈত ভূমিকার চেয়ে অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং বলে দাবি করেছিলেন। চলচ্চিত্রটি বাণিজ্যিককভাবে সফল হয়েছিল এবং সিফি চলচ্চিত্রটিকে “সুপার হিট” হিসাবে অভিহিত করেছিল।
২০১৪ সালে কীর্তি মালয়ালমের বাইরেও কাজ শুরু করেছিলেন এবং একসাথে বেশ কয়েকটি তামিল চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন। তামিলে তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ছিলো এ.এল. বিজয়ের প্রণয়ধর্মী-কৌতুকপ্রদ ইধু এন্না মায়াম (২০১৫), এটিতে তিনি বিক্রম প্রভুর বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন, যদিও চলচ্চিত্রটি বক্স অফিসে দুর্দান্ত সাফল্য অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছিল। ২০১৫ সালের পুরো সময় ব্যস্ততা এবং বড় প্রকল্পগুলির জন্য তাকে কৃষ্ণা’র মানে থানে পায়ে এবং ডিকে’র কাভালাই ভেন্ডম-সহ যে চলচ্চিত্রগুলিতে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছিলেন, সেগুলি থেকে বেরিয়ে আসতে হয়েছিল।
ফলশ্রুতিতে, তিনি শিবাকার্তিকেয়নের সাথে পর-পর দুটি চলচ্চিত্র রজনী মুরুগান এবং রেমো-তে কাজ করেছিলেন; পাশাপাশি ধনুশের সাথে প্রভু সোলায়মানের থোদারি-তেও কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। তার অভিষেক তেলুগু চলচ্চিত্রটি ছিল নেনু সাইলাজা (২০১৬), যেখানে তিনি অভিনেতা রাম পথিনেনির বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে কীর্তি ভারতন পরিচালিত বৈরভা-য় অভিনেতা বিজয়ের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন। এছাড়াও ২০১৭ সালে তিনি তামিল চলচ্চিত্র পাম্ভু সত্তাই এবং তেলুগু চলচ্চিত্র নেনু লোকাল-এ অভিনয় করেছিলেন।
২০১৮-এর শুরুর দিকে তিনি অগ্নিয়াথবাসী এবং থানা সর্ন্ধা কুট্টম-এ অভিনয় করেছিলেন। তিনি নাগ অশ্বিন এর তেলুগু-তামিল দ্বিভাষিক চলচ্চিত্র মহানটী-তে অভিনয় করেছিলেন, যেখানে তিনি দক্ষিণের প্রয়াত অভিনেত্রী সাবিত্রীর ভূমিকা পালন করেন এবং যার জন্য তার অভিনয় সমালোচকদের দ্বারা প্রশংসিত হয়েছিল। তার মুক্তিপ্রাপ্ত সর্বশেষ চলচ্চিত্রগুলির মাঝে রয়েছে বিক্রমের বিপরীতে স্যামি এর সিক্যুয়েল স্যামি স্কয়ার, বিশালের বিপরীতে সান্দাকোজি ২ এবং সরকার শিরোনামে এ.আর. মুরুগাদোসের চলচ্চিত্র, যেখানে তিনি বিজয়ের সাথে অভিনয় করেছিলেন।
২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি প্রিয়দর্শন পরিচালিত মালয়ালম চলচ্চিত্র মারাক্কর: আরবিকাদালিন্তে সিংহাম-এর মতো একাধিক প্রকল্পে অংশ নেওয়ার জন্য স্বাক্ষর করেছিলেন।রাহুল রবীন্দ্রন পরিচালিত এবং নাগার্জুন অভিনীত চলচ্চিত্র মনমধুদু ২-এ তার একটি বিশেষ উপস্থিতি রয়েছে।
পত্রিকা একাত্তর / মাসুদ পারভেজ
আপনার মতামত লিখুন :