চলছে অনলাইন মার্কেটিংয়ের নামে প্রতারণা

উপজেলা প্রতিনিধি, বটিয়াঘাটা

উপজেলা প্রতিনিধি, বটিয়াঘাটা

২৪ জানুয়ারী, ২০২২, ২ years আগে

চলছে অনলাইন মার্কেটিংয়ের নামে প্রতারণা
ছবি গুগল থেকে সংগ্রহীত | পত্রিকা একাত্তর

আবারো শুরু হয়েছে অনলাইনের নামে প্রতারণা। ঢাকার একটি নাম ঠিকানা বিহীন প্রতিষ্ঠান অনলাইন ভিত্তিক মার্কেটিং এর ব্যবসা শুরু করেছেন। তাদের কাছে যে পর্ণ চাইবেন তাই তারা দিতে রাজি। অর্ডার করুন ২৪ ঘন্টার মধ্যে আপনার ঠিকানায় অর্ডারকৃত মালামাল পৌঁছে দেওয়া হবে। এইসব নানাবিধ কথা বলে এরা সোশ্যাল মিডিয়ায় গড়ে তুলেছে অনলাইন সিন্ডিকেট।

এই চক্রের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে টাকা খোয়াচ্ছেন উঠতি বয়সের যুবসমাজ ও কিশোর-কিশোরীরা। কোনভাবে এদেরকে ঠেকানো যাচ্ছে না। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বলছে তারা যদি অর্ডার করে মালামাল না পেয়ে থাকে আমাদের কি করণীয় আছে। গায়ে কাঁদা লাগাতে চাচ্ছেনা তারা। ফলে তারা দিনের পর দিন প্রকাশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়া বিজ্ঞাপন দিয়ে সাধারণ মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা। এ বিষয়ে একাধিকবার তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলে, আগের টাকা পাঠান। তারপরে পণ্য দেওয়া হবে। ভুক্তভোগী অনেকে বলেন, বুকিং বাবদ টাকা পাঠালে মালামাল আর পাওয়া যায়না। পরে কল দিলে এই পাঠাচ্ছি, আজকাল বলে গুরাতে থাকে। এই ভাবে চলছে দেশের প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলের নেটওয়ার্কিং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অনলাইনে মার্কেটিং।

ভুক্তভোগী রানা নামের এক যুবক বলেন,আমি Dhara Shop নামের একটি প্রতিষ্টানে অনলাইনে বিজ্ঞাপন দেখে তাদের মোবাইল নাম্বারে Vivo X80 pro নামের একটি মোবাইল অর্ডার করি। যার মূল্য ৪১০০ টাকা। তারা বলে বুকিং করতে হলে অগ্রীম ৫০০ টাকা আমাদের নগদ বিকাশ নাম্বার একাউন্টে দিতে হবে। সেই মোতাবেক আমি তাদের একটি নগদ মোবাইল 01755-220709 নাম্বারে ৫০০ টাকা মোবাইল বুকিং বাবদ টাকা দেই। পরের দিন আমার মোবাইল ডেলিভারি দেওয়ার কথা। যথাসময়ে পরেরদিন সকাল ১১ টার সময় 01936-807433 মোবাইল নাম্বার দিয়ে আমার নাম্বারে সজিব নাম পরিচয় দিয়ে কল দেয়। সে বলে আমি খুলনার নিউ মার্কেটে এসে গেছি।

আপনি বাকি টাকাটা আমাদের অনলাইনের ওই নাম্বারে পেমেন্ট করে আমার সাথে দেখা করুন। তারপর আমি আপনার মোবাইলটি দিব। তখন আমি কারণ জানতে চাইলে তারা বলে এটা একটি কান্ট্রি কোড দিয়ে মোবাইল খুলতে হয়। তাই আপনি টাকাটা পেমেন্ট করে কান্ট্রি কোড টা আমাকে বলবেন। আমি কান্ট্রি লক খুলে মোবাইলটি নিয়ে আপনার সাথে দেখা করব। এই বলে ঘন্টার পর ঘন্টা এমনকি দিন শেষে রাত দশটা যখন বাজে তখনও তাদের সাথে আর দেখা হয় না। আমি নিউমার্কেট তাদের অপেক্ষায় বসে থাকি। বারবার তাদেরকে কলদিয়ে দেখা করার জন্য বলি কিন্তু তারা এই আসছি এই আসছি বলে ঘুরাতে থাকে। একপর্যায়ে আমি ঢাকার রমিন নামের ব্যক্তির 01939-143562 মোবাইল নাম্বারে কল করি।

সে পরিচয় দেয়, আমার বাড়ি যশোর। ঢাকায় একটি অনলাইন মারকেটিং প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি। সে বলে ভাই আগে পুরো টাকাটা দিতে হবে। তারপর আমাদের এস আর আপনার সাথে মোবাইল নিয়ে দেখা করবে। তখন আমি কারন জিজ্ঞাসা করতে চাইলে তারা বলে এটা আমাদের সিষ্টেম। আগে টাকা পড়ে মাল। তখন আমি বলি ভাই আমার মোবাইল প্রয়োজন নাই। দয়া করে আমার উক্ত টাকা কি ফেরত পাঠানব। তখন তারা বলে ভাই দিচ্ছি এই বলে দুইদিন অতিক্রান্ত হয়ে গেল। আজ পর্যন্ত তারা আমার ফোনটি রিসিভ করেনা। এমনকি আমি আমার সেই টাকা আজও ফেরত পায়নি। শুধু এই নয় আমার এলাকার এরকম আক্তারুল,ইমরান,অজিত রায় সহ বেশ কিছু বন্ধুরা এই অনলাইন মার্কেটিং এর প্রতারণার শিকার হয়েছেন।

এবিষয় দারা সোপ কোম্পানিতে চাকরিরত orch al ruma madam তার মোবাইল 01817-562714 নাম্বারে কলদিয়ে সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার সাথে সাথেই কলটি কেটে দেন। পরে একাধিকবার কলদিয়ে তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

বটিয়াঘাটা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মমিনুর রহমান বলেন, এদের বিরুদ্ধে সাইবার ক্রাইম আইনে মামলা করা যেতে পারে। যদি কোন ব্যক্তি অভিযোগ দেয় সে ক্ষেত্রে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে পুলিশ ।

জেলা গোয়েন্দা সংস্থার সাথে কথা বললে নামপ্রকাশ না করার সর্থে এক কর্মকর্তা বলেন, দেশে প্রতারক চক্রের সংখ্যা ব‍্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এদের নিয়ন্ত্রণ করা খুবই কঠিন। তারপরও আমরা বসে নেই। এসকল চক্রের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে প্রমাণ সহ আটক করে আইনের আওতায় আনা হবে। অভিযুক্ত কারীরা আমাদের নিকট অভিযোগ দিলে অবশ্যই এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পত্রিকা একাত্তর/আক্তারুল ইসলাম

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news