নিষিদ্ধ ম্যাজিক জালে মাছশূন্য হচ্ছে নদী-খাল-বিল

জেলা প্রতিনিধি, দিনাজপুর

১০ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১ year আগে

নিষিদ্ধ ম্যাজিক জালে মাছশূন্য হচ্ছে নদী-খাল-বিল

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার নিচু এলাকার দেশীয় মাছশূন্য করতে নিরদ্বিধায় ব্যবহারিত হচ্ছে নিষিদ্ধ ম্যাজিক জাল। চলছে মাছের প্রজনন মৌসুম। পানি কমার সাথে সাথে অবাধে ধরা পড়ছে দেশী মাছ। আর মাছের প্রজনন মৌসুমে নিষিদ্ধ কারেন্ট জালের সাথে এবার ভয়ঙ্কর ম্যাজিক জালে নিঃশেষ হচ্ছে সবধরনের দেশীয় মাছের পোনা। সহজেই সব ধরনের মাছ ধরার আশায় খাল-বিল ও নদ-নদীতে জেলেদের সাথে পাল্লা দিয়ে সাধারণ মানুষও ব্যবহার করছে এই নিষিদ্ধ ম্যাজিক জাল।

উপজেলা জুড়ে বিভিন্ন হাট-বাজারেে বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল। দীর্ঘ দিন ধরে উপজেলা মৎস্য অফিস কারেন্ট জালের বিরুদ্ধে নেই কোন অভিযান। এমন কি ম্যাজিক জালের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযান পরিচালনা করেননি। অভিযান না করার কারণে দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এই অবৈধ জালের ব্যবহার।

বিশেষ করে বেলান নদী ও ইছামতি নদীতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হচ্ছে এই নিষিদ্ধ জাল। ফলে বিলের ও নদ-নদীর সব ধরনের মিঠা পানির দেশীয় মাছ সুক্ষ্ম এই জালে ধরা পড়ছে। বিশেষ করে পানি বৃদ্ধি ও মাছের প্রজনন মৌসুমে খানসামা উপজেলার ডিমওয়ালা পুঁটি, টেংরা, কৈ, শিং, মাগুর, তেলাপিয়া, শোল, টাকিসহ প্রাকৃতিক সব মাছ এই সর্বশেষ প্রযুক্তির ম্যাজিক জালে নিধন হচ্ছে। এতে ক্রমেই মাছ শূন্য হয়ে পড়ছে নদ-নদী ও খাল-বিল। সাধারণত ৬০ থেকে ৯০ ফুট দীর্ঘ ও ক্ষুদ্র ফাঁস বিশিষ্ট ঢলুক আকৃতির হয়ে থাকে।

লোহার চারটি রড ও রডের রিঙ দিয়ে খোপ খোপ আকারে বাক্স তৈরি করে চারপাশ সুক্ষ্ম জাল দিয়ে ঘেরাও তৈরি করা হয় ম্যাজিক জাল। এই জালের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো বিলের ও নদীর তলদেশে লম্বালম্বিভাবে লেগে থাকে। ফলে কোনো প্রকার খাদ্য দ্রব্য ছাড়াই দু’দিক থেকেই মাছ ঢুকতে পারে। তবে কেউ কেউ অতিরিক্ত মাছের আশায় ঘ্রাণ জাতীয় খাবার দিয়ে থাকে। একটি ম্যাজিক জালের দাম মানভেদে সাড়ে তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

স্থানীয় পেশাদার জেলেরা জানান, ম্যাজিক জালে সব ধরনের মাছ ছেঁকে ওঠে। সহজেই মাছ ধরা যায় এবং দাম কম হওয়ায় মৌসুমি মৎস্য শিকারিরা এই জাল দিয়ে মাছ ধরতে নেমেছে। ফলে তারা যারা চিরাচরিত কৌশল দিয়ে মাছ ধরতেন তাদের জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই অনেকেই বাধ্য হয়ে ম্যাজিক জাল কিনেছে। অনেকেই কিনেছে শখে। উপজেলার বিভিন্ন জলাশয় ও নদীতে হরহামেশাই দেখা মিলছে। ফলে দেশীয় প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় সব মাছ, নদনদী থাকা জলজ প্রাণী এমনকি ছেঁকে ওঠে মাছের ডিমও।

এ বিষয়ে এলাকার অনেকেই বলছেন এই জাল দিয়ে মাছ ধরলে কিছুদিন পর হয়তো আর কোনো দেশী মাছ পাওয়া যাবে না। এ বিষয়ে খানসামা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রতন কুমার বর্মন বলেন, আমরা ম্যাজিক জালের বিরুদ্ধে সব সময় অভিযান চালাচ্ছি এবং অভিযান এখনও অব্যাহত রয়েছে ম্যাজিক জাল কোথাও ধরা পড়লে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

পত্রিকা একাত্তর /আজিজার রহমান

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news