স্কুল শিক্ষকের জমি জবরদখলের অভিযোগ

ভোলা জেলা প্রতিনিধি

৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১ year আগে

স্কুল শিক্ষকের জমি জবরদখলের অভিযোগ

ভোলা সদর উপজেলা ২নং পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের গুপ্তমুন্সি গ্রামের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে এক স্কুল শিক্ষকের এক একর জমি জবরদখলের অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। প্রতিপক্ষ গ্রুপের লোকজন ওই জমি থেকে ২৩টি সুপারি গাছ কর্তন করেছে বলে অভিযোগ করেন শিক্ষক আব্দুল করিম। এ ঘটনায় ভোলা সদর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে গাছ কর্তনের ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। ভুক্তভোগী শিক্ষক ভোলা সদর উপজেলা ইলিশা ইউসি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। বর্তমানে তিনি অবসরপ্রাপ্ত।

ভুক্তভোগী শিক্ষক অভিযোগ করে সাংবাদিকদের বলেন, তাঁর পৈত্রিক ও নিজস্ব এক একর জমি স্থানীয় জসিম, সবুজ ও মনির গংরা জবরদখল করার চেষ্টা করে আসছে। ওই জমি প্রায় ৫০ বছর ধরে তাঁর ভোগদখলে রয়েছে। হঠাৎ করে স্থানীয় একটি গ্রুপ ওই জমি তাদের দাবি করে তাঁর সাথে দ্বন্দ্ব করে আসছে। যা নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে একাধিকবার সালিসি বৈঠক হয়েছে। তাঁর দাবি, স্থানীয় বিচারকরা সালিসি বৈঠকে জমির কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে তাঁর পক্ষেই রায় দিয়েছিলেন।

এরপরও প্রতিপক্ষরা সেই রায় না মেনে ওই জমি জবরদখলের চেষ্টা করে আসছেন। এবং গতকাল মঙ্গলবার প্রতিপক্ষরা ওই জমি থেকে ২৩টি সুপারি গাছ কর্তন করেছেন বলেও অভিযোগ শিক্ষক আব্দুল করিমের। এছাড়াও আব্দুল করিম আরো অভিযোগ করে বলেন, ওই প্রতিপক্ষরা প্রায় সময়ই তাদের সঙ্গে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করেন। এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। তবে প্রতিপক্ষরা বলছেন, ওয়ারিশ সূত্রে ওই এক একর জমির মালিক তাঁরা। তাদের দাদা কেরামত আলী ওই জমির প্রকৃত মালিক। দাদা মারা যাওয়ার পর ওয়ারিশ সূত্রে ওই জমির মালিক হোন তাঁরা।

তাদের দাবি, তাঁরা দিনমজুর ও নিরক্ষর হওয়ার সুযোগে স্কুল শিক্ষক আব্দুল করিম তাদের সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করে রেখেছেন। এবং স্থানীয় সালিসি বৈঠকে ওই জমির রায় তাদের পক্ষেই দেয়া হয়েছে। জমি থেকে গাছ কর্তনের বিষয়টি অস্বীকার করে প্রতিপক্ষরা বলছেন, জমি থেকে তাঁরা কোনো গাছ কর্তন করেননি। জমি থেকে মাটি কেটে তাঁরা ঘের বানিয়েছিলেন। তবে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের বিষয়টি তাঁরা অস্বীকার করেছেন।

ভোলা সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. জসিম উদ্দিন জানান, জমি থেকে গাছ কর্তনের ঘটনায় গতকাল রাতে ভোলা সদর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন আব্দুল করিমের ভাতিজা মো. জসিম উদ্দিন। সেই অভিযোগের তদন্তভার পেয়ে তিনি ঘটনাটি তদন্ত করে অভিযুক্ত দুইজনকে থানা নিয়ে এসেছিলেন। পরে ওই ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন ছোটন বিষয়টি স্থানীয় পর্যায়ে মিমাংসা করে দিবেন এ মর্মে অভিযুক্ত দুইজনকে থানা থেকে নিয়ে গেছেন।

চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন ছোটন জানান, ওই জমির ঘটনায় প্রতিপক্ষরা ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দিয়েছিলেন। তখন উভয়পক্ষকে বলা হয়েছিল কোনো সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ওই জমিতে যেনো কেউ না যায়। কিন্তু তাঁর কথার অবাধ্য হয়ে প্রতিপক্ষরা ওই জমিতে মাটি কেটে ঘের তুলেছিলেন সেই বিষয়টি তিনি জানতে পেরেছেন। তবে সুপারি গাছ কে বা কারা কেটেছে তা তিনি এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হতে পারেননি। তিনি আরো জানান, থানা থেকে অভিযুক্তদের নিয়ে এসেছি ইউনিয়ন পরিষদে এ ঘটনার বিচার হবে সেজন্য।

তাঁরা যেহেতু ইউনিয়ন পরিষদে একটি অভিযোগ দিয়েছে। সেহেতু পুরো ঘটনাটি খুব দ্রুতই খতিয়ে দেখা হবে। এবং তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠ একটি সমাধান করে দিবেন বলেও জানিয়েছেন। ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন ফকির জানান, এ বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে সমাধান করে দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। চেয়ারম্যান এ বিষয়টি সমাধান করে দিবে।

পত্রিকা একাত্তর /নিয়াজ মাহমুদ

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news