নিম্নমানের উপকরণ নেই গভীর নলকূপ, মেঝেতেও ফাটল

জেলা প্রতিনিধি, হবিগঞ্জ

১৮ আগস্ট, ২০২২, ১ year আগে

নিম্নমানের উপকরণ নেই গভীর নলকূপ, মেঝেতেও ফাটল

হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩বছরেও নতুন ভবনের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়নি। হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের বদলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মানাধীন স্কুলের ৩য় তলা বিশিষ্ট নতুন ভবনের নির্মাণকাজ ৩ বছরেও এখন পর্যন্ত সম্পন্ন করা হয়নি।

এছাড়া নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে চলছে ভবনের নির্মাণকাজ। গ্রাউন্ড ফ্লোর সহ ২য় ও ৩য় তলার মেঝেতে দেখা দিয়েছে ফাটল। নিম্নমানের লোহাড়পাত ও সীট দিয়ে তৈরি জানালা স্থাপন করা হয়েছে। যার কারণে জানালা বন্ধ করা যায় না। নিম্নমানের কাঠ জোড়াতালি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে দরজা।

ভবনের সামনে ও দুইপাশে স্থাপিত লোহাড়পাত ও পাইপ দিয়ে নির্মিত রেলিং ফিনিশিং করা হয়নি। এছাড়া আকারে ছোট এবং অদ্যাবধি স্থাপন করা হয়নি গভীর নলকূপ। ৩য় তলা ভবন নির্মাণকালীন সময়ে ফাইলিং করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি বলে এলাকাবাসী জানায়।

জানা যায়,হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার বদলপুর ইউনিয়নের বদলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয় ১৯৪৫ ইং সনে। পুরাতন স্থাপনাটি বিদ্যালয় পরিচালনায় অনুপযোগী হওয়ায় ও শিক্ষার্থীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় বিদ্যালয়ের নূতন ভবন তৈরির তাগিদ আসে।

এরই ধারাবাহিকতায়, বিদ্যালয় ভবন পুনঃনির্মাণের জন্য ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৯৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।বিদ্যালয় ভবন নির্মাণে বাস্তবায়নেরও দ্বায়িত্বে ছিল প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।তদারকির দ্বায়িত্বে ছিল স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। কাজের দ্বায়িত্ব পায় হবিগঞ্জের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্টান।

কাজের দ্বায়িত্ব যে পেয়েছে, নিয়মানুযায়ী ওই ঠিকাদারের কাজ করানোর কথা থাকলেও,কাজ করানো হয়েছে স্থানীয় এক সাব ঠিকাদারের মাধ্যমে। ৩য় তলা বিশিষ্ট নূতন ভবনের নির্মাণকাজের শুরুতে ফাইলিং করার কথা থাকলেও,ফাইলিং না করেই বেইজ ঢালাইয়ের মাধ্যমে কাজ শুরু করা হয়।

গ্রাউন্ড ফ্লোর অন্ততপক্ষে দেড় থেকে দুই ফুট উঁচু করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। কাজের শুরুতেই নিম্নমানের উপকরণ সিমেন্টের ভাগ কম ও বালুর পরিমাণ বেশী দেয়া হয়। যার কারণে কাজের মধ্যেই বা নির্মাণকৃত নূতন ভবন সমঝানোর পূর্বেই গ্রাউন্ড ফ্লোর সহ ২য় ও ৩য় তলার মেঝেতে ফাটল দেখা দিয়েছে।

ভবনের সামনের ও দু'পাশে স্থাপিত নিম্নমানের ও হালকা লোহাররড ও পাইপ দিয়ে নির্মিত রেলিং আয়তনে ছোট হওয়ায় দেয়ালের সহিত ভালভাবে ফিটিং হয়নি।নিম্নমানের লোহাররড ও সীট দিয়ে নির্মিত জানালা ভালভাবে বন্ধ করা যায় না।নিম্নমানের কাঠ জোড়াতালি দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে দরজা।

এ গুলোতে অদ্যাবধি রংয়ের প্রলেপ দেয়া হয়নি।বিদ্যালয় চত্বরে অদ্যাবধি স্থাপন করা হয়নি গভীর নলকূপ। এতে করে নব-নির্মিত ৩য় তলা বিশিষ্ট বিদ্যালয় ভবনের স্থায়িত্ব নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এছাড়া ভবনের মেঝেতে ফাটল দেখা দেয়ায় অভিবাবক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে আতংক দেখা দিয়েছে।

এদিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নিকট থেকে নব-নির্মিত বিদ্যালয় ভবনের ছাড়পত্র বা প্রত্যায়নপত্র নিতে বার বার ধর্না দিতে শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট সাব ঠিকাদার। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও শিক্ষা অফিসারকে মৌখিকভাবে অবহিত করা হয়েছে।

পত্রিকাএকাত্তর /আকিকুর রহমান

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news