সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরি ইউনিয়নের যমুনা তীরবর্তী চর কৈজুরি গ্রামের মুদি দোকানি মোঃ রমজান আলী স্বপ্ন দেখতেন মৃত্যুর পর যেন তার নিজের সন্তান জানাজা করেন। সেই জন্যই তার ৪ সন্তানের মধ্যে তৃতীয় সন্তান আবু রাহাতকে ২০১৭ সালে স্থানীয় গোপালপুর আল মদিনাতুল মনাওয়ারা হাফিজিয়া মাদরাসায় ভর্তি করে দেন।
অসম্ভব প্রতিভার অধিকারী এই আবু রাহাত মাত্র ৯ মাসেই কোরআনের হাফেজ হন। এরপর রাহাতের চমৎকার প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে মাদ্রাসার শিক্ষকরা আবু রাহাতের বাবাকে পরামর্শ দেন ঢাকায় ভর্তি করে দিতে। শিক্ষকদের পরামর্শ অনুযায়ী পরে ছোট্ট রাহাতকে গ্রাম থেকে নিয়ে গিয়ে ২০১৮ সালে রাজধানী ঢাকায় কোরানের আলো ইন্সটিটিউটে ভর্তি করে দেন পিতা মোঃ রমজান আলী।
এসময় ছোট্ট রাহাত পিতা-মাতাকে ছেড়ে দূরে থাকতে কষ্ট হয় বলে অনেক কান্নাকাটি করতো, চলে আসতে চাইতো বাড়িতে। রাহাতের পিতা মাতা শত কষ্ট বুকে চাপা দিয়ে রাহাতকে বুঝিয়ে সেখানেই থাকতে বলেন। সেখানে পড়াশোনা করা অবস্থায় ২০২০ সালে এনটিভির পিএইচপি কোরআনের আলো প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে দেশের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেন। পরবর্তীতে ঢাকার মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসায় ভর্তি হন।
এখান থেকেই হাফেজ আবু রাহাত কুয়েত আমিরের তত্ত্বাবধানে দেশটিতে অনুষ্ঠিত ১১তম বিশ্ব কোরআন প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। দেশটিতে তিন ক্যাটাগরিতে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় ১১৭টি দেশকে পেছনে ফেলে তৃতীয় স্থান অর্জন করেন হাফেজ আবু রাহাত।
স্থানীয় সময় বুধবার (১৯ অক্টোবর) সকালে সালওয়ার নিকটবর্তী হোটেল রেজিন্সিতে অনুষ্ঠিত বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে তিন ক্যাটাগরির চূড়ান্ত বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। অনূর্ধ্ব ১৩ বছরের গ্রুপে তৃতীয় অর্জন করায় আবু রাহাতকে পুরস্কার ও সম্মাননা দেওয়া হয়।
পত্রিকা একাত্তর / শাহাদত হোসেন