আসন্ন ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষ্যে নীলফামারীর ডোমার উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বসুনিয়া হাটে কোরবানির গরু কেনা-বেচায় অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। হাটে আসা ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
সোমবার (৪ঠা জুলাই) উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নে অবস্থিত বসুনিয়া হাটে সরেজমিনে ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আসন্ন ঈদ-উল-আযহাকে কেন্দ্র করে অতিরিক্ত টোল আদায় করছেন হাট ইজারাদার মামুন। সরকারী ভাবে নির্ধারিত মূল্যে ২১০ টাকা করা হলেও, জোরপূর্বক ক্রেতা ও বিক্রেতার কাছ থেকে ৮০০ টাকা টোল আদায় করা হচ্ছে।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ৮০০ টাকা টোল আদায় করলেও রশিদ বইয়ে লেখা হচ্ছে না টোলের পরিমাণ। বহুল পরিচিত হাটটিতে দেশের দূরদূরান্ত হতে আসা ক্রেতা বিক্রেতার সাথে টোল নিয়ে প্রতিনিয়ত হচ্ছে বাকবিতণ্ডা। কোনোভাবেই মানছেন না হাট ইজারার টোল আদায়ের শর্ত।
অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গকে হাত করে হাটটিতে চলছে অতিরিক্ত টোল আদায়।
সরেজমিনে বসুনিয়ার হাটে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতার কাছ থেকে ৬শ টাকা ও বিক্রেতার কাছ থেকে ২শত টাকায় আদায় করছেন রশিদ লেখকরা। তবে রশিদে কোনো টাকা উল্লেখ করছেন না তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রশিদ লেখক বলেন, হাট ইজারাদার আমাদের যে ভাবে বলেছে আমরা সেই হিসাবে টোল আদায় করছি।
হাটে গরু কিনতে আসা সাজ্জাদ কিবরিয়া হোসেন (পাপ্পু) জানান, আমি একটি গরু কিনেছি, আমাকে ৬শ টাকা টোল দিতে হয়েছে এবং বিক্রেতার কাছ থেকে ২শ টাকা নিয়েছে। ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ের কাছ থেকে মোট ৮শত টাকা আদায় করে হাট ইজারাদার।
এ ব্যাপারে কোরবানির পশুর ক্রেতা মেহেদী, মো. রাসেল, রবিউল ও মোকছেদ একই অভিযোগ করেন। ক্রেতারা জানান, গতবারের চেয়ে চলতি হাটে প্রায় তিনগুণ টোল আদায় করা হচ্ছে। এতে ক্রেতাদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
গরুর বেপারী তরিকুল ইসলাম বলেন, আমরা বিভিন্ন হাটে গরু কিনে বসুনীয়া হাটে নিয়ে বিক্রি করি। অন্যান্য হাটের চেয়ে এখানে বেশি টোল নেওয়া হচ্ছে। গরুর আমদানি অনেক, কিন্তু বিক্রি কম। আমি দুটি গরু বিক্রি করেছি সীমিত লাভে। কিন্তু আমাকে টোল দিতে হলো ২শত করে মোট ৪শত টাকা। আর আমি যার কাছে বিক্রি করেছি ওনাদের কাছ থেকে ২টি গরুতে নেওয়া হয়েছে ৬শত করে ১২শ টাকা।
সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে হাট ইজারাদার মামুন সটকে পড়ে। ফোন দিলে রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রমিজ আলম অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি নিয়ে দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
সোনারায় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফিরোজ চৌধুরী বলেন, ৮শত টাকা টোল আদায়ের কথা জেনেছি। এ বিষয়ে আমি ইজারাদারকে সরকারি ভাবে টোল আদায় করতে বললেও সে আমার কথা উপেক্ষা করেছে।
পত্রিকা একাত্তর/ রিশাদ