স্ত্রীকে হত্যা মামলায় স্বামীকে আমৃত্যু কারাদন্ড ও ৩ সহযোগিকে ফাঁসি

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর

১১ মে, ২০২২, ১ year আগে

স্ত্রীকে হত্যা মামলায় স্বামীকে আমৃত্যু কারাদন্ড ও ৩ সহযোগিকে ফাঁসি

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে চাঞ্চল্যকর স্ত্রীকে হত্যা মামলায় স্বামীকে আমৃত্যু কারাদন্ড ৩জন সহযোগিকে ফাঁসিতে মৃত্যুদন্ড এবং অন্য আরেক সহযোগিকে ১০ বছরের কারাদন্ড দিয়েছেন দিনাজপুরের অতিরিক্ত দ্বায়রা জজ আদালতের বিচারক এস এম রেজাউল বারী। ছেলের দ্বায়েরকৃত মামলায় দোষি প্রমানিত হওয়ায় আজ বুধবার দুপুরে ওই রায় প্রদান করেছেন তিনি। রায় শেষে দন্ডিতদের কারাগারে পাঠিয়েছেন বিচারক।

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার দক্ষিন সুজালপুর গ্রামে গেল ২০১৭ সালের ৬ এপ্রিল রাতে বাড়ীর কাছে হত্যাকান্ডের শিকার হন তপতি রানী চৌধুরী নামে এক গৃহবধূ নারী। এঘটনায় পিতা হোমিও চিকিৎসক সাধনা নন্দ চৌধুরী এবং তার কথিত দ্বিতীয় মালিপাড়ার বাসিন্দা স্ত্রী প্রতিমা রানী এবং প্রতিমা রানীর আগের পক্ষের ছেলে আকাশ চৌধুরীসহ অজ্ঞান নামা কয়েকজনকে অভিযুক্ত করে পরদিন (৭ এপ্রিল) ফুলবাড়ী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন একমাত্র ছেলে ঢাকায় কর্মরত সহকারি রাজস্ব কর্মকর্তা শুভ নন্দ চৌধুরী।

পিতা গোপনে প্রতিমা রানীকে বিয়ে করায় পারিবারিক অশান্তির জেরে ভাড়াটে খুনি দিয়ে তার মাকে পিতা হত্যা করানো হােয়ছে বলে ওই মামলায় অভিযোগ আনেন তিনি। মামলার বিবরনে জানানো হয়েছে, ৬ এপ্রিল রাতে পল্লী চিকিৎসক স্বামী সাধনা নন্দ চৌধুরীকে ফুলবাড়ী শহরের নিউ লাইফ মেডিকেয়ার সেন্টার নামক প্রতিষ্ঠানে ভাত খাইয়ে রাত ৯টার দিকে একাই বাড়ী ফিরছিলেন স্ত্রী তপতি রানী চৌধুরী।

পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পথিমধ্যে কালভাটের নিচে তাকে গলাটিপে হত্যার পর আলামত নষ্ট করতে পাশের একটি বাঁশঝাড়ে মৃতদেহ পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা করেছিল হত্যাকারিরা। পরদিন আংশিক পড়ানো অবস্থায় তার মৃতহেদ উদ্ধার করে পুলিশ।

এঘটনায় প্রথমে পিতা সাধনা নন্দ চৌধুরী ,তার কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী প্রতিমা রানী এবং প্রতিমা রানীর আগের পক্ষের ছেলে আকাশ চৌধুরীর নামসহ অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে ফুলবাড়ী থানায় মামলা করেন একমাত্র ছেলে শুভ নন্দ চৌধুরী। পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যায় জড়িত কাজল মহন্ত এবং জীবন দাস নামে আরো দুজনকে সনাক্ত করে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে আনে পুলিশ।

হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবাব বন্ধী দেন তারা। মামলাটিতে ২৬জনের মধ্যে দিনাজপুরের অতিরিক্ত দ্বায়রা জজ আদালতে (৩) ২২জন স্বাক্ষ্য গ্রহন করা হয়। প্রায় ৫ বছর মামলা চলার পর আজ দুপুর পৌনে ২টার দিকে রায় পাঠ শুরু করেন বিচারক এস এম রেজাউল বারী।

রায়ে বয়স বিবেচনায় তপনি রানী চৌধুরীর স্বামী পল্লী চিকিৎসক সাধনা নন্দ চৌধুরীকে আমৃত্যু কারাদন্ড, তার কথিত প্রতিমা রানী এবং প্রতিমা রানী আগের পক্ষের ছেলে আকাশ চৌধুরী এবং কাজল মহন্তকে ফাঁসিতে মৃত্যুদন্ড ও জড়িত আরেক অভিযুক্ত জীবন চন্দ্র দাসকে ১০ বছরের কারাদন্ডে দন্ডিত করেন বিচারক। এছাড়াও প্রত্যেককে ১লাখ করে টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত করা হয়েছে।

মাশরাটি সরকার পক্ষে এপিপি এ্যাডভোকেট, আতাইর রহমান আতা, এ্যাডভোকেট মাজহারুল ইসলাম সরকার, এ্যাডভোকেট হযরত আলী বেলাল এবং আসামি পক্ধেসঢ়; সাবেক পিপি এ্যাডভোকেট হামিদুল ইসলাম জাকারিয়া হোসেনসহ নিযুক্ত ছিলেন বেশ কয়েকজন আইনজীবি।

এদিকে রায় প্রকাশে খুশী রাষ্ট্র পক্ষের কৌশলী আতাউর রহমান আতা এবং মা হত্যার বিচার পেয়ে খুশী মামলার বাদী ছেলে ফাকায় কর্মরত কাষ্টম কর্মকর্তা শুভ নন্দ চৌধুরী। হত্যার হুমকি থাকায় জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে আতংকে ভুগছেন তিনি। একারনে মামলা চলার ৫ বছর ধরে নিজের নাড়ী পুতা ভিটায় উঠতে পারেনি বলে অভিযোগ তার।

পত্রিকা একাত্তর /মোঃ আরমান হোসেন

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news