প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ

উপজেলা প্রতিনিধি, রাণীশংকৈল

১৬ এপ্রিল, ২০২২, ২ years আগে

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার হলদিবাড়ি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবুল হোসেনের বিরুদ্ধে ওই বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে।

গত বুধবারের পর এলাকায় ঘটনাটি প্রকাশ হলে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তবে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের দাবি ঘটনাটি সাজানো। নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়কে কেন্দ্র করে গলযোগ সৃষ্টি হওয়ায় কারণে তাকে ফাঁসানো হয়েছে।

বিদ্যালয় ও এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেশ কিছু দিন আগে ওই বিদ্যালয় প্রধান টিফিন সময়ে ভূক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীকে তার কক্ষে ডেকে নিয়ে যায়। পরে তাকে টাকার প্রলোভন দেখিয়ে তার গায়ে হাত দেয়। সে সময় ওই শিক্ষার্থী ভয়ে অজ্ঞান হয়ে যান। এমন সময় স্কুলে বাকী শিক্ষার্থীরা আসা শুরু করলে কোনমতে তার জ্ঞান ফিরিয়ে তাকে বাসায় পৌছে দেওয়া হয়।

এমন ঘটনার পর ঘটনাটি ধামাচাপা দেয় শিক্ষক বাবুল। অভিযুক্ত শিক্ষক বাবুল বালিয়াডাঙ্গী শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ার কারণে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে তাকে সহযোগিতা করেন সকলে। কিন্তু পরে বিষয়টি কোনভাবে জানাজানি হলে ভূক্তভূগী ওই শিক্ষার্থীর বাবা বিচার নিয়ে যান স্থানীয় চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের কাছে।

ভূক্তভোগীর বাবা বলেন, আমার মেয়ে আমাকে ভয়ে কিছু বলেনি। তার বান্ধবীদের নিকট থেকে ঘটনার জানার পর স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ দিতে গেলে চেয়ারম্যান আমাকে আইনের আশ্রয় নিতে বলেন।

স্থানীয় ভানোর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি জঘন্য। আমার কাছে আসলে আমি আইনের আশ্রয় নিতে বলি এবং উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে মোবাইলে বিষয়টি অবগত করি। উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুর রহমান বলেন, ঘটনার শোনার পর আমি বিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম এবং ওই ছাত্রীর বাবার সাথে কথা বলার চেষ্টা করেনি। তিনি ওই সময় কথা বলতে রাজি হননি।

অভিযোগ অস্বীকার করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবুল হোসেন জানান, বিদ্যালয়টি এমএলএসএস পদে নিয়োগ নিয়ে একটি ঝামেলা সৃষ্টি হয়েছে। এই কারণে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে হয়রানী করা হচ্ছে। এটি একটি ষড়যন্ত্র।

তবে গত শুক্রবার এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ওই ভূক্তভোগীর বাবার সাথে ঘটনাটি মিমাংসা করেছেন বিদ্যালয় প্রধান। এরপর থেকে ওই ছাত্রী ও তার বাবাকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না।

স্থানীয় অভিভাবক মহসিন আলী বলেন, এমন যদি হয় পরিস্থিতি আর বাস্তবতা তাহলে আমরা যাবো কোথায়। আমরা মানবন্ধন করবো আন্দোলন করবো। যে অভিযোগ উঠেছে আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত চাই।আরেক অভিভাবক জিয়াউল হাসান বলেন, ঘটনাটি শোনার পর থেকে আমার মেয়েকে স্কুলে পাঠাতে ভয় পাই। আমরা গ্রামের সাধারণ মানুষ। গ্রামের চেয়ারম্যানেই আমাদের ভরসা। তার উপরই বিষয়টি ছেড়ে দিলাম। আমরা শুধু বলতে চাই। তিনি যেন কোন অপরাধীকে ছাড় না দেন।

বালিয়াডাঙ্গী থানা পরিদর্শক (ওসি) খায়রুল আনাম ডন বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় লিখিত অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে ঘটনা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পত্রিকা একাত্তর/আনোয়ার হোসেন আকাশ

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news