সারাদেশে জামুকার ৮১ জন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিলের সিদ্ধান্তে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার ৬ জন ভুয়ামুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিলের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয়।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় (জামুকা)কতৃক তদন্তে মিথ্যে তথ্য প্রদানকারী অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মুক্তিযোদ্ধা সনদ সহ গেজেট ও লালমুক্তিবার্তা বাতিল করা হয়েছে বলে জামুকার গত ৭৮তম সভায় এ তথ্য জানানো হয়। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক জামুকার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন কালে বলেন, মিথ্যে তথ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সনদ নিয়েছিলেন এমন ৮১ জনের সনদ, গেজেট, লাল মুক্তিবার্তা বাতিল করা হয়েছে। এছাড়াও যাদের শুধু গেজেট রয়েছে তাদের গেজেট বাতিল; যাদের শুধু সনদ রয়েছে তাদের সনদ বাতিল; যাদের লাল মুক্তিবার্তা আছে তাদের লাল মুক্তিবার্তা বাতিল করা হবে। অথচ তাদের অধিকাংশই গত দুই দশক ধরে নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধা ভাতা এবং সরকারি চাকরিতে সন্তান-পোষ্যদের জন্য নির্ধারিত কোটার সুবিধাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেছেন। সেসব সুবিধা বাতিলের পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধা ভাতার টাকা ফেরত আনার চেষ্টা করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে জামুকা ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, 'অল্প টাকার জন্য মামলা করে তেমন সুবিধা হয় না। রায় হতেও সময় লাগে। মামলা চালানোর খরচ আছে। তবুও আমরা চেষ্টা করব মুক্তিযোদ্ধা ভাতা হিসেবে তারা যে ভাতা নিয়েছেন, সেটি ফেরত পাওয়া যায় কিনা।'
স্বীকৃতি বাতিল হলো যাদের: বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের সরোয়ার হোসেন, হাবিলদার রুস্তম আলী, মো. তৈয়বুর রহমান, হাফিজুর রহমান কাশেম, আসাদুজ্জামান, শেখ মজিবুর রহমান;জামুকার সভার নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, উল্লিখিত মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসার পর ২০২০ থেকে ২০২২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত দুই দফা শুনানি গ্রহণ করা হয়েছে। এসব শুনানিতে উপস্থিত হয়েও তারা অভিযোগ খণ্ডন করে মুক্তিযোদ্ধার সপক্ষে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস ও সহযোদ্ধাদের সাক্ষী হাজির করতে পারেননি। তাদের অনেকেই মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেননি। কেউ কেউ মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সদস্য, কিন্তু সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেননি।ফৌজদারি আইনের ৪১৬ ধারা অনুযায়ী, মিথ্যা তথ্য দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সনদ নেওয়া দণ্ডনীয় অপরাধ। এই অপরাধের জন্য তিন বছর জেল এবং মুক্তিযোদ্ধা ভাতাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নেওয়ার জন্য সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড আইন রয়েছে বলে জানায় মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয়।
পত্রিকা একাত্তর/মোঃ নাজমুল