হাতির আক্রমণে গুরুতর আহত যুবক

উপজেলা প্রতিনিধি, নালিতাবাড়ী

১৯ মার্চ, ২০২২, ২ years আগে

হাতির আক্রমণে গুরুতর আহত  যুবক

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার দাওধারা-কাটাবাড়ি এলাকার পাহাড়ে অবস্থান করছে শাবকসহ ২২-২৫টি বন্যহাতির একটি দল।

শনিবার দুপুরে দাওধারা গ্রামের মোহাম্মদ আলীর মানসিক প্রতিবন্ধি ছেলে হযরত আলী (২২) বাড়ি থেকে বেড়িয়ে পাহাড়ের গহীনে গেলে খাদ্যের সন্ধানে নেমে আসা বন্যহাতি তার উপর আক্রমণ চালায়। শুঁড় দিয়ে পেচিয়ে এবং বা দিয়ে পিষে গুরুতর জখম করে।

এসময় হযরত আলী ও হাতির চিৎকার শোনে পাহাড়ে গরু চড়াতে যাওয়া সৈয়দ আলী ও মোখলেছসহ অন্যরা গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

খাদ্যের সন্ধানে গত দুই সপ্তাহ ধরে বন বিভাগের সামাজিক বন ও লোকালয়ে হানা দিচ্ছে বন্যহাতির সেই দল। খেয়ে সাবাড় করছে বোরো ফসলের মাঠ। বিনষ্ট করলে গাছপালা।

সূত্রমতে, গত দুই সপ্তাহ যাবত শাবকসহ ২২-২৫টি বন্যহাতির একটি দল শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার দাওধারা-কাটাবাড়ি এলাকার পাহাড়ে অবস্থান করছে। একটি নির্দিষ্ট সময় হাতির দলটি পাহাড়ের গহীন জঙ্গলে থাকলেও দিন এবং রাতের বেশিরভাগ সময় বন বিভাগের সামাজিক বন ও পাহাড়ি টিলার মাঝখানে থাকা বোরো ধানের ক্ষেতে হানা দিয়ে চলেছে। এতে করে সামাজিক বনের গাছপালা বিনষ্টসহ বোরো ধান ক্ষেতের ক্ষয়ক্ষতি বেড়েই চলেছে। আগে বন্যহাতি তাড়াতে স্থানীয় বাসিন্দারা নানা পদ্ধতি ব্যবহার করলেও সম্প্রতি সরকারের কড়াকড়ির কারণে সেসব পদ্ধতির অধিকাংশ কাজে লাগাতে পারছে না। দিনের বেলায় পটকা ফাটিয়ে এবং রাতের বেলায় পটকা ফাটিয়ে ও টর্চ লাইট জ্বালিয়ে চেষ্টা করছে ফসল রক্ষার। হাতি হত্যা বা আক্রমণে সরকারের কঠোরতার কারণে এখন আর কেউ বৈদ্যুতিক বেড়া বা আক্রমণাত্মক কোন পদ্ধতি অনুসরণ করছে না। উপরন্তু স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ এলাকাবাসী হাতিকে উত্যক্ত করা থেকে বিরত রাখতে পাহাড়া বসিয়ে রাখছেন।

এদিকে প্রতিদিন দিনের বেলায় প্রকাশ্যে হাতির দলটি খাদ্যের সন্ধানে বেড়িয়ে আসায় কাজকাম ফেলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হাতি পাহাড়াই যেন এখন সীমান্তবাসীর নিত্যদিনের রুটিনে পরিণত হয়েছে।

স্থানীয় মধুটিলা রেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল করিম আহত হওয়া যুবক সম্পর্কে জানান, আমরা ইতিমধ্যেই আহতদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেছি। আবেদনসাপেক্ষে নিয়ম অনুযায়ী আহত ব্যক্তিকে এক লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, হাতি-মানুষ সহাবস্থানে রাখতে আমরা দিনরাত কাজ করছি। ইতিমধ্যেই কিছু সফলতা পাওয়া গেছে। বন্যহাতি দ্বারা যে কেউ যে কোন ধরণের ক্ষতির শিকার হলে সরকারীভাবে সে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

পত্রিকা একাত্তর/ মনোয়ার হোসেন

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news