প্রধানমন্ত্রীর ঘরে রাত হলেই ঢিল

উপজেলা প্রতিনিধি, বানিয়াচং

৬ মার্চ, ২০২২, ২ years আগে

প্রধানমন্ত্রীর ঘরে রাত হলেই ঢিল

হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে ভূমি ও গৃহহীন দশটি পরিবারেকে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়েও বর্তমানে আতংকে রাত-দিন পার করছেন সবাই।শান্তিতে বসবাসের বদলে উল্টো ভোগ করছেন যন্ত্রনা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের ঘরের একটি পাড়ায় রাত হলেই ঢিল ছুড়ে একদল দুস্কৃতিকারী প্রকৃতির লোকজন।

দিনের বেলা উপহার পাওয়া ঘরের পাশে শুরু খেলাধূলার নামে বল ছুড়ে মারা ও রাতের বেলা ইটের আধলা দিয়ে ইটপাটকেল মারা এসব ঘরের উপর।

এরকম অভিযোগ পাওয়া গেছে হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলা সদরের ২নং উত্তর-পশ্চিম ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের রঘু চৌধুরী পাড়া গ্রামের প্রধানমন্ত্রীর উপহারের আশ্রয়ন প্রকল্পে থাকা বাসিন্দাদের কাছ থেকে।

ওই পাড়ায় গৃহহীন দশটি পরিবারকে বসবাসের জন্য ঘর প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর বরাদ্ধ দেওয়া হয়।

তাদের বসবাসের শুরু থেকেই ঢিল ছোড়ার অভিযোগ থাকলেও সাম্প্রতিককালে মাত্রাতিরিক্তভাবে ইটের টুকরো দিয়ে সন্ধ্যা ও মাঝরাতে ঢিল মারার কারনে শিশু-কিশোর শিক্ষার্থী ও পরিবারের বৃদ্ধরাসহ সবাই আতংকিত হয়ে পড়ছেন এবং সারারাত ভয়ে ঘুমাতে পারেননাও কেউ।

এ অবস্থায় উপকারভোগী পরিবারগুলো দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও মহল্লার সর্দার প্রদানকে অবগত করলেও কোন প্রতিকার পান নাই তারা।

এমন অভিযোগ পেয়ে সরেজমিনে ঐ পাড়ায় গিয়ে পরিবারের লোকজনদের সাথে কথা বলে জানা যায়,প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে ১০টি পরিবারকে এসব ঘর বরাদ্ধ দেওয়া হয়।উপজেলার বিভিন্ন পাড়ার গৃহহীন অসহায় ১০টি পরিবার একসাথে বসবাস শুরু করেন প্রায় ৮ মাস পূর্ব থেকে।

বসবাস শুরুর প্রথম দিকে মাটির ঢিল মেরে মাঝেমধ্যে উত্যক্ত করলেও সাম্প্রতিককালে ইটের বড়,বড় টুকরো দিয়ে সন্ধ্যারাতে ও মাঝরাতে ঢিল মারার কারনে অজানা ভয় ও আতংকে পারছেননা বাসিন্দারা। আবার রাত জেগে পাহারা দিতে গিয়েও ঢিলের আঘাতে অনেক নারী-পুরুষ আহত হয়েছেন।

এ ব্যাপারে আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দা ভুক্তভোগী আলফাতুন বিবি(৫৫) জানান, আমরা দিনের পর দিন এই অত্যাচর সহ্য করতেছি। কিছুলোক চাইতেছে আমরা যেন এখান থেকে চলে যাই।আমরা নিরাশ্রয় হওয়ার কারনে এখানে বসবাস করতেছি। কিন্তু আমাদের যাওয়ার মততো আর কোন জায়গা নাই এই প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর ছাড়া।

এমন আরেক বাসিন্দা লিপি আক্তার(৩৫) জানান, যখনই ঢিল মারে একসাথে ৫থেকে ৬টা ইটের টুকরো দিয়ে ঢিল মারা হয়। এসময় আমার ছোট্ট ছোট্ট স্কুল পড়ুয়া ছেলা মেয়েরা ভয়ে আতংকিত হয়ে পড়ে।

আবার কেউ কেউ ভয়ে চিৎকার দিয়ে ঘুম উঠে পড়ে। এরপর ভয়ে আর সারারাত কেউ কেউ ঘুমাতেও পারেনা। আমাদের পাশে দিনের বেলায় পাশের বাড়ির বাচ্চারা বল মারে চালের মাঝে দরজা-জানালায়। তাদেরকে কিছু বললে আমাদেরকে খারাপ ভাষায় উল্টো গালিগালাজ করে। এমনকি তাদের অভিভাবকদের কাছে বিচার দিলে উল্টো আমাদেরকে এখান থেকে চলে যেতে বলে।

এসব ঘটনা এলাকার সর্দারপ্রদান ও মেম্বারকে অবগত করলে,তারা বলেন অফিসের লোকজনের কাছে বিচার দেওয়ার কথা বলেন। তারপর আগের ইউএনও মাসুদ রানা স্যারকে এসব বিষয়ে বলার পর তিনি এসেছিলেন। তখন কিছুদিন ঢিল মারা বন্ধ ছিলো বলেও জানান তিনি।

বর্তমানে তারা এসব থেকে প্রতিকার পাওয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট জোরদাবী জানান তাদের বাঁচানোর জন্য।

এব্যাপারে ২নং উত্তর পশ্চিম ইউপির ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য মোঃশহিদুল ইসলামের বক্তব্য জানতে তার ব্যাবহৃত মুঠোফোন নাম্বারে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করার কারনে তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার পদ্মাসন সিংহ সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমাকে কেউ কোন কিছু জানায় নাই।

তবে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে জানান তিনি।

পত্রিকা একাত্তর / আকিকুর রহমান রুমন

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news