ভোলার চরফ্যাশনে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় তার স্বামী ও শ্বশুরকে গ্রেফতার করেছে চরফ্যাশন থানার পুলিশ। গৃহবধূর নাম সাসাতি রায় চৈতি।
শুক্রবার (০৪ মার্চ) দিবাগত রাতে চরফ্যাশন পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড কলেজ পাড়া রোডের চৈতির শ্বশুর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে চরফ্যাশন থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম খান জানান, গত রাতে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চৈতির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সিলিং ফ্যান থেকে শাড়ি পেঁচানো অবস্থায় ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পরিকল্পিত হত্যা দাবি করে চৈতির পিতা সুভাষ চন্দ্র রায় বলেন, বছর খানেক আগে চৈতির সঙ্গে একই ওয়ার্ডের চরফ্যাশন উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সমীর মজুমদারের ছেলে শাওন মজুমদারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে দেওয়া হয়। আমার মেয়ে মাস্টার্সের ছাত্রী। আমার মেয়েকে তার শ্বশুর, শাশুড়ি ও স্বামী দীর্ঘ দিন ধরে যৌতুকের দাবিতে অত্যাচার-নির্যাতন করে আসছে। তারা যৌতুকের টাকা না পেয়ে পরিকল্পিতভাবে আমার মেয়েকে হত্যা করেছে। আমি এ হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।
এদিকে চৈতির স্বামীর পরিবারের দাবি, চৈতি আত্মহত্যা করেছেন।
চরফ্যাশন থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) রিপন সাহা জানান, এ ঘটনায় ছেলে ও তার বাবাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মেয়ের বাবা বাদী হয়ে থানায় এজাহার দাখিল করেছেন। আত্মহত্যার প্ররোচনার ৬ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। মামলার ভিত্তিতে রাতেই চৈতির শ্বশুর চরফ্যাশন উপজেলার কৃষি অফিসে কর্মরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সমীর মজুমদার, স্বামী বোরহানউদ্দিন উপজেলা কৃষি অফিসে কর্মরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শাওন মজুমদার শাশুড়িকে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে আটক করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে বলা যাবে এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা। পাশাপাশি এ ঘটনায় তদন্ত চলছে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
চরফ্যাশন থানা অফিসার ইনচার্জ মো. মনির হোসেন মিয়া জানিয়েছেন, এ ঘটনায় ৩ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নম্বর- ০৪ তারিখ ০৫/০৩/২০২২। মামলার দ্বিতীয় ও তৃতীয় আসামীকে আটক করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে৷ পোস্টমর্টেম রিপোর্টের অপেক্ষায় আছেন বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
পত্রিকা একাত্তর/ শামছুদ্দিন খোকন