বানিয়াচংয়ের চলাচলের রাস্তা ও খাল রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার অভিযোগ সাবরেজিস্টার ইসমত পাশার বিরুদ্ধে

উপজেলা প্রতিনিধি, বানিয়াচং

২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২২, ২ years আগে

বানিয়াচংয়ের চলাচলের রাস্তা ও খাল রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার অভিযোগ সাবরেজিস্টার ইসমত পাশার বিরুদ্ধে

হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার ৪নং দক্ষিণ পশ্চিম ইউনিয়নের যাত্রাপাশা মহল্লার জনসাধারণের চলাচলের রাস্তা ও একটি খাল রেজিস্ট্রি করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে বানিয়াচংয়ের সাবরেজিস্ট্রার ইসমত পাশা'রর বিরুদ্ধে।

অন্যদিকে এই জায়গার বিষয়ে বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশনা না মেনেই তিনি রেজিস্ট্রি করে দেন বলেও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শাহীন মিয়া।

এর আগে তিনি উক্ত রাস্তা ও খাল বিক্রির উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে গত ০২ ফেব্রুয়ারি বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ করেছিলেন।

এর প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার পদ্মা সিংহ বিষয়টি আমলে নিয়ে তড়িৎ গতিতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সাবরেজিস্ট্রারকে নির্দেশনা দেন।কিন্তু এই নির্দেশনা উপেক্ষা করেই সাবরেজিস্ট্রার মোঃ ইসমত পাশা মোটা অংকের টাকার উৎকোচের বিনিময়ে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি এই জায়গা গুলো দলিল করে দেন। যাহার দলিল নং-৮৫৫।

অভিযোগে জানা যায়, বানিয়াচং উপজেলা সদরের ৪নং দক্ষিণ পশ্চিম ইউপি'র গ্যানিংগঞ্জ বাজারের পশ্চিমস্থ মৌজা যাত্রাপাশা এস.এ জেএল নং-১০৩, এসএ খতিয়ান নং-৬২৪, এস.এ দাগ নং-১১০৬, শ্রেণি গোপাট, পরিমাণ ০.১৯ একর ভূমি। উক্ত খতিয়ানদৃষ্টে রেকর্ডীয় মালিক সৈলেন রঞ্জন চক্রবর্তী, পিতা-শৈলজা নন্দ চক্রবর্তী। উক্ত গোপাট দিয়ে হাজার হাজার লোক ও যানবাহন চলাচল করছে। নিয়মানুযায়ী গোপাট বা খাল রকম ভূমি কোনো ব্যক্তি মালিকের নামে রেকর্ড হইলেও তাহাতে ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ে আইনগত বাধাঁ রয়েছে। কারণ গোপাট বা খাল রকম ভূমি জনস্বার্থে ব্যবহার্য ভূমি। উক্ত গোপাট বা খাল রকম ভূমি ব্যক্তি মালিকের নামে রেকর্ড হলেও ক্রয় বিক্রয়ের অধিকার কারো থাকে না।

অথচ মৃত আহাম্মদ উল্লার পুত্র জাহাঙ্গীর আলম উক্ত গোপাট রকম ভূমি বিক্রয়ের লক্ষে নকশা অংকন করে এসএ দাগ নং-১১০৬ দাগে গোপাট রকম ভূমি থেকে আর এস জরিপে ১০৯০ দাগে নিজের ইচ্ছামতো খাল রকম ভূমিতে রূপান্তরিত করে আরএস জরিপের ৪৫৬ নং খতিয়ানের নিজ নামে রেকর্ড করেন।

উক্ত রেকর্ডের অনুবূলে এসএ ১১০৬ দাগ থেকে উদ্ভবকৃত আরএস ১০৯০ দাগের ০.১৬ একর ভূমি থেকে ০.০৪৫০ একর ভূমি ১ কোটি টাকার বিনিময়ে কিশোর সংঘের লোকজনের নিকট বিক্রি করেন। কিন্তু দলিলে মূল্য দেখানো হয় ৪৯ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা। জাহাঙ্গীর আলম আরএস ১০৯০ দাগের ভূমি থেকে ০.০৪৫০ একর বিক্রি করলেও দখল দিয়েছেন শাহীন মিয়ার ব্যক্তি মালিকানাধীন আরএস ১০৯১ দাগের ভূমিতে।এ নিয়ে আদালতে শাহীন মিয়া স্বত্ত্ব মোকদ্দমা করেন। যার নং-৪১৯/২০২১ইং মামলার দায় থেকে অবৈধভাবে ফায়দা হাসিলের উদ্দেশ্যে সব জেনে শুনে আরএসএস ১০৯০ দাগে ০.০৪৫০ একর ভূমি ক্রয় করেন। এর প্রেক্ষিতে তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে অভিযোগ করেছিলেন। তিনি এ ব্যাপারে উপজেলা সাবরেজিস্ট্রারকে বিষয়টি নিয়ে শুনানী পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। কিন্তু তিনি এ নির্দেশনা না মেনেই অবৈধভাবে ভূমিটি রেজিস্ট্রি করে দিয়েছেন। এতে করে জনগনের চলাচলের রাস্তার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে এবং শাহীন মিয়ার ব্যক্তিমালিকানাধীন সম্পত্তির নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে।এব্যাপারে বানিয়াচংয়ের সাবরেজিস্ট্রার মোঃ ইসমত পাশা'র বক্তব্য জানতে,আমার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন(০১৭১৭-২৮২৮৭১) নাম্বার দিয়ে তার ব্যাবহৃত মোবাইল ফোন(০১৭১৮-০৯৯৮৫১) নাম্বারে রাত ৮ টা ৩ মিনিটে ৩ টা ফোন করা হলে তার কোন সাড়া না পাওয়ায় বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

পরে তিনি রাত ৮ টা ৬ মিনিটে আমাদের তার নাম্বার থেকে আমাদের নাম্বারে ফোন বেক করেন। তখন থাকে এই জায়গা রেজিস্টি করার বিষয়ে জানতে চাইলে এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার এই জায়গার ব্যাপার ব্যাবস্হা নিতে সাবরেজিস্টারকে নির্দেশ দেওয়ার বিষয়েও জানতে চাইলে সাবরেজিস্টার বলেন, থাকে কোন এমন নির্দেশ দেওয়া হয়নি বা এব্যাপারে কোন চিঠি পত্রও পান নাই উপজেলা থেকে।

আর রেজিস্ট্রি সম্পর্কে বলেন বলেন, এই তারিখে কতো দলিল ঐতো রেজিস্ট্রি করা হয়েছে। এমন কোন অভিযোগও পাইনি আমি।

আর এই জায়গা রেজিস্টি করেছি কিনা আমার জানা নেই। কারন আমিতো আর কারও জায়গা চিনে রেজিস্ট্রি করিনি বলে ২ মিনিট ২২ সেকেন্ড আলাপকালে জানান।

পত্রিকা একাত্তর/ আকিকুর রহমান রুমন

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news