কালনী নদী থেকে ড্রেজার মেশিনে বালু উত্তোলন: রাস্তা-ঘাট-ফসলিজমি বিলীন

নিজস্ব প্রতিনিধি

নিজস্ব প্রতিনিধি

১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২২, ২ years আগে

কালনী নদী থেকে ড্রেজার মেশিনে বালু উত্তোলন: রাস্তা-ঘাট-ফসলিজমি বিলীন

হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কুশিয়ারার কালনী নদীর তলদেশ থেকে ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে অবৈধভাবে দীর্ঘ একমাস ধরে বালু উত্তোলন অব্যাহত রেখেছে বালুখেকোচক্র।

এতে নদীর তীরের রাস্তা-ঘাট ফসলিজমি নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে।

জানা যায়, আজমিরীগঞ্জের কুশিয়ারার কালনী নদীর তলদেশ থেকে দীর্ঘ এক মাস পূর্বে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করে নগদ অর্থের বিনিময়ে বিক্রি শুরু করে একটি প্রভাবশালী বালুখেকোচক্র। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করার সুবাদে ১৫ দিন পূর্বে বালু উত্তোলনের কাজে আরও একটি ড্রেজার মেশিন যুক্ত করে।বর্তমানে দু'টি ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে মোটা পাইপে বালু উত্তোলন করছে।সরবরাহের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে যথাক্রমে ৬ হাজার ও ১০ হাজার ফুট বালু বহনকারী ইঞ্জিনচালিত বড় ট্রলার।প্রতিফুট বালু বিক্রি হচ্ছে ৬ টাকায়।প্রতিটি ইঞ্জিনচালিত বালুবাহী ট্রলারে ৩৬ থেকে ৬০ হাজার টাকায় বিক্র করা হচ্ছে।প্রতিদিন কমপক্ষে ১০ টি করে ২০ টি ট্রলারে বালু সরবরাহ করা হয়ে থাকে। সরবরাহকৃত বালু প্রতিদিন বিক্রি হচ্ছে ছোট ট্রলারে ৩ লাখ ৬০ হাজার ও বড় ট্রলারে ৬ লাখ সর্বমোট ৯ লাখ ৬০ হাজার টাকায়। বিগত একমাসে ছোট ট্রলারে ১০ কোটি ৮০ লাখ ও বড় ট্রলারে ১৫ দিনে বালু বিক্রি করা হয়েছে ৯০ লাখ টাকা।সর্বমোট ১১ কোটি ৭০ লাখ টাকায় বালু বিক্রি করা হয়েছে।

অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের স্থান আজমিরীগঞ্জ সদর উপজেলার বাঁশ মহাল সংলগ্ন। এ ছাড়া এর বাইরেও গ্রামের অদূরে নদীর তীর সংলগ্ন স্থানে ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে দিবারাত্র বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। এভাবে ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে বালু উত্তোলনের ফলে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে নদী ভাঙ্গন। এতে করে রাস্তা-ঘাট ফসলিজমি বিলীন হওয়া সহ অবাধে মাছের বিচরণে ক্ষেত্রেরও ক্ষতি হচ্ছে।

নদীতে বালুমহালের ইজারা নীতিমালা রয়েছে। সে অনুযায়ী ড্রেজার অথবা বোমা মেশিন দিয়ে নদীগর্ভ থেকে বালু উত্তোলন করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিন্তু অধিকাংশ বালু ব্যবসায়ীই এ নিয়মের তোয়াক্কা করেন না। এতে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। তবে এ ব্যাপারে প্রশাসনের নেই কোনো কার্যকর পদক্ষেপ।

উল্লেখ্য,১৯৮৩ ইং সনের ডিমারগেশন চুক্তি অনুযায়ী কুশিয়ারার কালনী নদী শাসনের দায়িত্ব জেলা প্রশাসন হবিগঞ্জের।কিন্তু পরিবেশ ও নদীরক্ষা আইনের প্রয়োগ হতে দেখা যায় না।স্বভাবতই ধরে নেওয়া যায়, একশ্রেণির অসাধু কর্মকর্তার সঙ্গে বালুমহালের ও বালু ব্যবসায়ীদের যোগসাজশ রয়েছে।

সূত্র জানায়, কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক খলিলুর রহমানের ছোট ভাই মৃগা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ভুট্টো মিয়া সহ একই জেলার মিটামইন উপজেলার বাসিন্দা হাবিবুর রহমান নামে এক প্রভাবশালী ব্যাক্তি কুশিয়ারার কালনী নদীর তলদেশ থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করছে।

যদিও ১৯৮৩ ইং সনের ডিমারগেশন চুক্তি অনুযায়ী কুশিয়ারার কালনী নদী শাসনের দায়িত্ব জেলা প্রশাসন হবিগঞ্জের।কিন্তু পরিবেশ ও নদীরক্ষা আইনের প্রয়োগ হতে দেখা যায় না। স্বভাবতই ধরে নেওয়া যায়, একশ্রেণির অসাধু কর্মকর্তার সঙ্গে বালুমহালের ও বালু ব্যবসায়ীদের যোগসাজশ রয়েছে। কুশিয়ারার কালনী নদীর তলদেশ থেকে ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলনে কোন মন্ত্রণালয়য়ের অনুমোদন আছে কি-না? জানতে চাইলে ড্রেজারের মালিক হাবিবুর রহমান জানায়, এটি কিশোরগঞ্জের ইটনার এলাকা। তবে আজমিরীগঞ্জ পৌরসভার বাসিন্দা, স্বপনের সহিত এ আলাপ করেন। স্বপন জানায়,এ বিষয়ে তার কোন কিছু জানা নেই।

এ বিষয়ে আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ সুলতানা সালেহা সুমীর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অফিসে এসে কথা বলতে বলেন।

পত্রিকা একাত্তর/ আকিকুর রহমান রুমন

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news