সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী পাউবোর বাঁধে অগণিত অবৈধ পাইপ, সুইচ গেট অপসারণের কার্যক্রম চলছে লোক দেখানো নয় ছয় এ যেন এক স্বজনপ্রীতি, বন্যা-জলোচ্ছাস আর প্রাকৃতিক দুর্যোগে বারবার ক্ষতিগ্রস্ত শ্যামনগরের উপকূলীয় বেড়ি- বাঁধগুলো। ক্ষতিগ্রস্ত বেড়ি-বাঁধগুলো সংস্কারের পরেও কিছু অসাধু মাছ চাষি ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের গাফিলতির কারণে দিন দিন আরো ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে উপকূলের এসব বেড়ি-বাঁধ।
উপকূলবাসীরা জানান, বাঁধের অবৈধ পাইপ ও সুইচ গেট অপসারণের নির্দেশ দিয়েছে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন। এরপর ও কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে শ্যামনগর উপকূলের প্রত্যেক বেড়ি-বাঁধ কেটে নীচে পাইপ বসিয়ে ফসলি জমিতে লবণ পানি তুলে চিংড়ি চাষ করে আসছিল কৈখালী কিছু অসাধু চিংড়ী চাষিরা। তারা জানান, অবৈধভাবে বাঁধ কর্তনের ফলে বেড়ি- বাঁধ নষ্ট হয়ে উপকূলীয় শ্যামনগর অঞ্চল ইতিপূর্বে কয়েকবার প্লাবিত হয়েছে।
এর আগে আইলায় বাঁধ ভেঙে শ্যামনগরের বিস্তীর্ন অঞ্চল প্লাবিত হয়ে হাজার হাজার মানুষ ঘর বাড়ি হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। হাজার হাজার একর ফসলি জমির ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মারা গেছে গবাদি পশু-পাখি। তারপরও কতিপয় কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে অসাধু চিংড়ি চাষিরা সাধারণ মানুষের ক্ষতি করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। উপকূলবাসীরা আরো জানায়, বিগত ১২ বছরে আইলার ক্ষতি এই এলাকার মানুষ কাটিয়ে উঠতে পারিনি। এরপরে আরও কয়েকটি প্রাকৃতিক দুর্যোগে বারবার এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
আঘাত হেনেছে উপকূলের এসব জনপদে। তারা জানান, অসাধু মাছ চাষিদের কারণে ওয়াপদা বাঁধ ভেঙে এলাকা বার বার প্লাবিত হলেও এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়ে কোন প্রতিকার পায়নি। জানা গেছে, পাউবোর বাঁধের অবৈধ পাইপ বন্ধ ও অবৈধ গেট অপসারণের জন্য সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক বরাবর ২২ মার্চ তারিখে পাউবো থেকে চিঠি দিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট চাওয়া হয়। এ চিঠির আলোকে জেলা প্রশাসকের অফিস থেকে গত ২৮ অক্টোবর শ্যামনগরের ও কালিগঞ্জের এসিল্যান্ডকে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিয়ে বাঁধের অবৈধ পাইপ লাইন সুইচ গেট অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হয়,কিন্তু এরমধ্যে দীর্ঘ তিন মাস অতিবাহিত হলেও বেড়ি বাঁধের অবৈধ পাইপ বন্ধ ও সুইচ গেট অপসারণের একটিও উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত না হওয়ায়,যে কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষ থেকে জনস্বার্থে হাইকোর্টে ৮১৭৫/২০২১ নং রিট মামলা দায়ের করেন।
এই মামলায় গত ২ রা নভেম্বর তারিখে শুনানি নিয়ে আদালত ওয়াপদা বাঁধের অবৈধ পাইপ বন্ধ ও কল অপসারণ করে প্রতিবেদন আদালতে পেশ করার জন্য সরকার পক্ষের প্রতি নির্দেশ প্রদান করেন। ওই রিটে আগামী ৩রা জানুয়ারি পুনরায় শুনানিপূর্বক পরবর্তী আদেশের দিন ধার্য করেছিলেন। রিট আবেদনকারী হুমায়ুন কবির জানান, বিগত ২০০৯ সাল থেকে বেড়ি- বাঁধ ক্ষতিগ্রস্থকারী মাছ চাষীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে মিথ্যা অভিযান পরিচালনার তথ্য দিয়ে আসছিল। অথচ বাস্তবে অবৈধ পাইপ ও সুইচ গেট থেকে যায় আর উপকূলের মানুষ পানিতে ডোবে। এসব কারণেই আমি মহামন্য হাইকোর্টে রিট করেছিলাম।
হাইকোর্টে রিট পরিপ্রেক্ষিতে এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত শ্যামনগরের এসিল্যান্ড মোঃ শহিদুল্লাহ বলেন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের উক্ত অফিস আদেশ তিনি উপজেলার নুরনগর ইউনিয়নের কুলতলি সীমান্ত কালিন্দী নদী হতে কৈখালী ইউনিয়নের ভেড়ার হাট পর্যন্ত ২৭ তারিখ বৃহস্পতিবার অবৈধ সুইস গেট পাইপ অপসারণ করি এবং সন্ধ্যা নেমে আসায় আবার জানুয়ারির ২৮ তারিখ শুক্রবার কোনো একটা কারণ বশতঃ আমি কার্যক্রমে যাইতে না পারায় কালিগন্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা এস ও তন্ময় হালদারকে অবৈধ পাইপ কালভার্টের অপসারণের নির্দেশ দেই। তবে সাংবাদিকদের দেওয়া অনিয়মের অভিযোগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিসার তন্ময় হালদারের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। কৈখালী ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আব্দুর রহিমের অভিযোগে তিনি আরো জানান আগামী কাল আমি উপস্থিত থেকে অভিযান পরিচালনা করব।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে ওয়াপদা বাঁধের অবৈধ পাইপ বন্ধ ও অবৈধ সুইচ গেট এর ৮- ১০ জন জনবল নিয়ে উচ্ছেদ অভিযান চালান তবে প্রভাবশালী ২টা সুইসগেট অপসারণ করতে পারেননি এসও তন্ময় হালদার। এ বিষয়ে স্থানীয় বসবাসকারী অনেকেই সাংবাদিকদের জানান পাউবো কর্মকর্তা এসও তন্ময় হালদার আমাদের লোক দেখানো নয় ছয় করে পাইপ অপসারণ ও সুইসগেট অপসারণের কাজ করছেন কৈখালী ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আব্দুর রহিমে বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে সংশ্লিষ্ট ওয়াব্দা বাঁধের অবৈধ পাইপ ও সুইচ গেটের উচ্ছেদ কার্যক্রম দেখে আমি হতবাক এটা কোনো স্বার্থনেষী মহলের ইশারায় কারোর পাইপ ভাঙ্গছে আবার ভাঙ্গছে না বিশেষ করে দুটি সুইসগেট রয়ে গেছে যাহা সম্পূর্ণ বড় ধরনের কোনো লেনদেন হয়েছে বলে মনে করেন এবং দূর্নীতি অনিয়মের পরিপ্রেক্ষিতে আর ও বলেন এই পাউবো কর্মকর্তা এসও তন্ময় হালদারের অতীতে ও অনেক অনিয়ম দূর্নীতি ছিল যা অনেক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল।
পত্রিকা একাত্তর / মোঃ আলফাত হোসেন