ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার, গোমস্তাপুর

২৩ জুন, ২০২২, ১ year আগে

ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের  মৃত্যু

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুরে চিকিৎসক ও নার্সের অবহেলায় এক নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। জন্মের ঠিক ২৪ ঘন্টা পর নবজাতক কন্যা শিশুটি মারা যায়। ঘটনাটি গত বুধবার সকালের।

রহনপুর পৌর এলাকার বাগদুয়ার পাড়ায় অবস্থিত 'মর্ডান ক্লিনিক ও ডায়াগনেস্টিক সেন্টার' এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ মৃত নবজাতকের পরিবারকে ম্যানেজ করে স্থানীয় যুবলীগ নেতৃবৃন্দের মধ্যস্থতায় ঘটনাটি মীমাংসা করে নিয়েছেন বলে সরজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে।

মৃত শিশুর পরিবার ও ক্লিনিক সূত্রে জানা যায়, পার্শ্ববর্তী ভোলাহাট উপজেলার বিরেশ্বরপুর গ্রামের আব্দুল হালিমের সন্তানসম্ভবা স্ত্রী এই ক্লিনিক এ ভর্তি হন। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ সিজার করতে চাইলে পরিবারের পক্ষে মৃত শিশুর মামা ও খালা সিদ্ধান্ত নিতে দেরী করেন। ততক্ষণে প্রসূতির অবস্থা খারাপ হয়। এক পর্যায়ে ঢাকায় অবস্থানরত স্বামীর সাথে কথা বলে সিজার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। মঙ্গগলবার সকালে সিজার হলে কন্যা শিশুর জন্ম হয়। পরে চিকিৎসক ও নার্সের অবহেলায় শিশুটির সঠিক পরিচর্যার অভাবে বুধবার সকালে শিশুটি মারা যায়।

মৃত শিশুটির মামা মোরসালিন ও খালা মিহিম বলেন, কোন অভিযোগ না করলেও একটা সত্য কথা যে, আমাদের বোনের বাচ্চাটি চিকিৎসক ও অদক্ষ নার্সের অবহেলায় মারা গেল। আর যেন কোন শিশুর বা মায়ের এই অবহেলার মৃত্যু না হয় সে বিষয়ে তারা ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে দাবীর সুরে বলেন।

সিজারিয়ান অপারেশনের দায়িত্ব পালন করা ডাক্তার ও ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডাঃ শেখ মোজাম্মিল হক বলেন, সিদ্ধান্ত নিতে দেরী হওয়ায় অপারেশন হয় পরে। ফলে শিশুটির সমস্যা দেখা দেয়। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি অবশ্য সে সময় দায়িত্ব পালন করা নার্স ট্রেনিং প্রাপ্ত নয় বলে স্বীকার করেন।

ঘটনা নিয়ে পরিবার ও তাদের আত্মীয় স্বজনরা ক্লিনিকে এসে হৈ চৈ করলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ স্থানীয় যুবলীগ নেতৃবৃন্দের সহায়তায় বিষয়টি নিষ্পত্তি করে নেন। বুধবার রাতে ক্লিনিকে বসে উভয়পক্ষের সম্মতিতে এ সমঝোতা হয়। গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুল হামিদ জানান, সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ ও অভিযোগ পেলে উদ্ধোর্তন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

সিভিল সার্জন চাঁপাইনবাবগঞ্জ ডা. এস এম মাহমুদুর রশিদ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,বিষয়টি আমি এখনও অবগত নই। আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। বিষয়টি নিয়ে গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সাথে কথা বলে, এর সত্যতা পেলে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে বিভিন্ন ক্লিনিকে ডা. শেখ মোজাম্মিল হক কর্তৃক একাধিক প্রসূতি ও নবজাতক শিশু হত্যার অভিযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে। আর এ অভিযোগগুলো মোটা অংকের টাকা দিকে রফাদফা হয়েছে। এছাড়াও বিলবোর্ডে লেখা যে চিকিৎসকের নামগুলো দেয়া থাকে, সে চিকিৎসকরা আদৌ জানে না যে, তাদের নাম ভাঙিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ টাকা আয় করছে।

পত্রিকাএকাত্তর / রুবেল

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news