গ্রাম্য কোন্দলের ঘটনায় জাবি শিক্ষার্থীকে ফাঁসানোর চেষ্টা

নড়াইল জেলা প্রতিনিধি

৯ জুন, ২০২২, ১ year আগে

গ্রাম্য কোন্দলের ঘটনায় জাবি শিক্ষার্থীকে ফাঁসানোর চেষ্টা

নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলায় খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘটিত লুটপাটের কথিত অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোঃ বোরহান শেখকে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

জানা যায়, গত ৩১ মে লোহাগড়া উপজেলার কোটাকোল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ নিজাম শেখকে (৫৫) বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে একই গ্রামের প্রতিপক্ষরা। এঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে ১৯ জনকে আসামি করে লোহাগড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিজাম শেখের স্ত্রী মেরিনা বেগম।

সম্প্রতি এই মামলার প্রতিক্রিয়ায় হত্যায় অভিযুক্ত আসামিগণ বাদীপক্ষ তথা নিহত আওয়ামীলীগ নেতা নিজাম শেখের পরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের চাঁদাবাজি ও লুটপাটের কথিত অভিযোগে জড়িয়ে লোহাগড়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। উক্ত অভিযোগপত্রে নিহত নিজাম শেখের ভাতিজা (চাচাত ভাইয়ের ছেলে) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী মোঃ বোরহান শেখকে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে অভিযুক্ত করে।

অভিযোগপত্রে বোরহান শেখকে চাঁদাবাজি ও লুটতরাজের দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এ ঘটনার অনুসন্ধানে জানা যায়, উক্ত অভিযোগ পত্রে উল্লেখিত তারিখের অনেক আগেই গত ২৩ মে হতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শুরু হওয়ায় ২১ মে তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন আবাসিক হলে চলে আসেন জাবি শিক্ষার্থী বোরহান।

পরীক্ষা চলায় হত্যাকান্ডের দিন এবং পরবর্তী দিনগুলোতেও বোরহান নিজ গ্রামে যেতে পারেন নি। তবুও তাকে চাঁদাবাজির দায়ে অভিযুক্ত করে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয় প্রতিপক্ষরা। এবিষয়ে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মোঃ বোরহান শেখ হত্যাকান্ডের দিনগুলোতে তার ক্লাসে উপস্থিতির প্রত্যায়নপত্র দেখিয়ে বলেন, 'ওসময় আমার ক্লাস ও মিডটার্ম পরীক্ষা চলমান ছিল।

ফলে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলে অবস্থান করছিলাম। খুনের পর আমাদের পরিবার ও বংশের লোকজন আতঙ্কিত হয়ে গ্রাম ত্যাগ করায় আমি নিজেও গ্রামে যেতে পারিনি। তবুও আমাকে অভিযুক্ত করার কারণ একটাই, তাহলো আমার শিক্ষাজীবন ধ্বংস করে দেয়া। আমি এঘটনার সুষ্ঠু প্রতিকার চাই।'

এবিষয়ে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বোরহানের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক মোঃ শামসুল আলম বলেন, 'আমাদের শিক্ষার্থীর নামে উক্ত অভিযোগপত্রে উল্লেখিত তারিখের আরও কয়েক দিন আগে থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত সে আমাদের প্রতিটি ক্লাসে উপস্থিত ছিল। আমরা এ বিষয়ে প্রত্যায়নপত্রও দিয়েছি।

ঢাকায় অবস্থান করে ঢাকা থেকে ১৬০ কিঃমি দূরত্বের পথ নড়াইলের এই ঘটনার সঙ্গে সে কোনো ভাবেই জড়িত থাকতে পারে না। আমরা প্রশাসনের নিকট আহ্বান জানাবো যেন তারা আমাদের নির্দোষ ছাত্রকে হয়রানি না করে।'

এবিষয়ে জানতে চাইলে নড়াইল জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জনাব মোঃ রিয়াজুল ইসলাম বলেন, 'সে যেহেতু হত্যাকান্ড ও পরবর্তী ঘটনার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ছিল, সেহেতু হল প্রভোস্টের একটা প্রত্যায়নপত্র জমা দিক। তাহলে তার নামে কোনো মামলা হবে না। বিষয়টা আমরা দেখবো।'

পত্রিকা একাত্তর /হাফিজুল নিলু

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news