এক নজরে বান্দরবানের দর্শনীয় স্থান দেখে নিন

পত্রিকা একাত্তর

পত্রিকা একাত্তর

১২ এপ্রিল, ২০২২, ২ years আগে

এক নজরে বান্দরবানের দর্শনীয় স্থান দেখে নিন
এক নজরে বান্দরবানের দর্শনীয় স্থান

চোখজুড়ানো প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর রোমাঞ্চকর অনেক জায়গার কারণে বান্দরবান বাংলাদেশের পর্যটন মানচিত্রে উল্লেখযোগ্য। বাংলাদেশের তিনটি উচ্চতম স্থান বান্দরবানে অবস্থিত। সেগুলো হচ্ছে- তাজিনডং (বিজয়), মৌদক মৌল (সাকা হাফং) ও কেওক্রাডং।

এই তিন পর্বতশৃঙ্গ জয় করার জন্য যে কেউ খুশিমনে জঙ্গল ও পাহাড়ি নদী বেয়ে উঠতে পারে। একবার পর্বতারোহণ শুরু করলে আকর্ষণীয় ঝরনার দেখাও মিলবে।

আদিবাসীদের কাছ থেকে পাওয়া ব্যতিক্রমী উপহার, খাদ্যসামগ্রী, হস্তশিল্প প্রভৃতি মনকে প্রফুল্ল করবে। এসবের মধ্যদিয়ে আদিবাসী সংস্কৃতির সান্নিধ্যও পাবেন।

নাফাখুম

বাংলদেশের সবচেয়ে আকর্ষণীয় জলপ্রপাতগুলোর মধ্যে নাফাখুম অন্যতম। থানচি উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা রেমাক্রিতে পাহাড় ও বনের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত খরস্রোতা সাঙ্গু নদীতে অবস্থান নাফাখুমের।

নাফাখুম আবার রেমাক্রি জলপ্রপাত নামেও পরিচিত। একবার এখানে গেলে বারবার যেতে মন চাইবে। এখানে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় বাহনও বান্দরবান জেলা শহরেই পাওয়া যাবে।

মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্স

বান্দরবান শহরে ঢুকতে বান্দরবান কেরাণীহাট রাস্তার পাশেই পার্বত্য জেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকায় এটি অবস্থিত। পাহাড়ের খাদে বাঁধ নির্মাণ করে কৃত্রিম হ্রদের সৃষ্টি করা হয়েছে। বান্দরবান শহর থেকে এই কেন্দ্রেটির দূরত্ব ৪ কিলোমিটার।

বেড়াতে আসা পর্যটকদের চিত্ত বিনোদনের জন্য এখানে রয়েছে শিশুপার্ক, নৌকা ভ্রমণের সুবিধা, ঝুলন্ত সেতু মাধ্যমে চলাচলের ব্যবস্থা এবং সাময়িক অবস্থানের জন্য একটি রেস্টহাউজ। এছাড়া আকর্ষণীয় একটি চিড়িয়াখানা এই কেন্দ্রের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে বহুগুন। বান্দরবান জেলা প্রশাসনের সার্বিক তত্তাবধানে পরিচালিত হয়।নীলাচল ও শুভ্রনীলা

বান্দরবান জেলার সদরের প্রবেশ মুখ টাইগার পাহাড় কাছাকাছি পাশাপাশি অবস্থিত এ পর্যটন কেন্দ্র দুটি। নীলাচল জেলা প্রশাসন ও শুভ্রনীলা বান্দরবান পার্বত জেলা পরিষদের সার্বিক তত্তাবধানে এই পর্যটন কেন্দ্র দুটি পরিচালিত হয়।

নীলাচলের উচ্চতা প্রায় ১৭০০ ফুট। বান্দরবান জেলা সদর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এ পাহাড়ের উপর নির্মিত এ দুটি পর্যটন কেন্দ্র থেকে পার্শ্ববর্তী এলাকার দৃশ্য দেখতে খুবই মনোরম।

চিম্বুক পাহাড়

বাংলাদেশ এর তৃতীয় বৃহত্তম পর্বত। চিম্বুক পাহাড় ভ্রমণ পিয়াসুদের কাছে পরিচিত নাম। বান্দরবান জেলা সদর থেকে ২৬ কিলোমিটার দূরে চিম্বুক পাহাড়ের অবস্থান। সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা প্রায় ৩২০০ ফুট।

চিম্বুক যাওয়ার রাস্তার দুই পাশের পাহাড়ী দৃশ্য খুবই মনোরম। যাওয়ার পথে সাঙ্গু নদী চোখে পড়ে। পাহাড়ের মাঝে বাংলাদেশ এর সর্বোচ্চ সড়ক দিয়ে এঁকেবেঁকে যাওয়ার সময় মনে হবে গাড়িতে করে বুঝি চাঁদের বুকে পাড়ি জমাচ্ছেন।

৩২০০ ফুট উঁচুতে দাঁড়িয়ে এ অপরূপ বিচিত্র প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে পাবেন চিম্বুকে। পাহাড়ের উপর দাঁড়িয়ে দেখতে পাবেন নিচে ভেসে যাচ্ছে মেঘের ভেলা। পার্শ্ববর্তী জেলা কক্সবাজার আর চট্টগ্রাম এর বিভিন্ন উপজেলা গুলোকে দেখা যায় এখান থেকে। বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ের পাশ দিয়ে ভেসে যাওয়া মেঘ দেখে মনে হয় মেঘের স্বর্গরাজ্য চিম্বুক পাহাড়।

শৈলপ্রপাত

বান্দরবান রুমা রাস্তায় ৮ কিলোমিটার দূরে শৈলপ্রপাত অবস্থিত। এটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপূর্ব সৃষ্টি।

সারাক্ষণ ঝর্ণার দৃশ্য দেখা গেলেও ঝর্ণতে নামা বেশ কঠিন। বছরের বেশিভাগ সময় পর্যটকদের ভিড় বেশি দেখা যায়।

এখানে দূর্গম পাহাড়ের কোল ঘেঁষে আদিবাসী বম সমপ্রদায়ের সংগ্রামী জীবন প্রত্যক্ষ করা যায়।

বান্দরবান শহর থেকে চাঁদের গাড়ি কিংবা জীপ ভাড়া করে শৈলপ্রপাতে যাওয়া যায়।

মিলনছড়ি

মিলনছড়ি বান্দরবান শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্ব শৈলপ্রপাত বা চিম্বুক যাওয়ার পথে পড়ে।

এখানে একটি পুলিশ পাড়ি আছে। পাহাড়ের বেশ উপরে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে পূর্ব প্রান্তে অবারিত সবুজের খেলা এবং

সবুজ প্রকৃতির বুক ছিঁরে গতিতে বয়ে যাওয়া সাঙ্গু নামের মোহনীয় নদীটি দেখা যাবে।

এই জায়গা গুলো দেখতে যাওয়া-আসা মিলিয়ে হাতে তিন থেকে চার দিনের সময় নিয়ে যেতে হবে।

সবচেয়ে ভালো হয় রাতে ভ্রমণ করে ভোরে বান্দরবান পোছানো। আর সেখান থেকে বিকালে রওনা দিয়ে ফিরে আসা।

এতে করে দুই দিনেই বান্দরবানের এই জায়গা গুলো ঘুরে আসা সম্ভব।

একটি জীপ ভাড়া করে এই এলাকা গুলো ঘুরে আসতে খরচ পড়বে ৫ হাজার টাকার মতো।

একটি জীপ গাড়িতে ১২ থেকে ১৫ জন বসতে পারে।

তুইনুম ঝর্ণা

তুইনুম ঝর্ণাটির (Tuinum Jhorna) অবস্থান বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার ৪ নং কুরুকপাতা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত তুইনুম ঝিরিতে। এলাকাটিতে ম্রো সম্প্রদায়ের বাস। তাদের ভাষায় ” তুইনুম অ”।

ম্রো ভাষায় ” তুই ” অর্থ পানি, “নুম” অর্থ কালো আর “অ” অর্থ ঝিরি। তার মানে “তুইনুম অ” এর অর্থ দাঁড়ায় “কালো পানির ঝিরি”। এই ঝর্ণার উপর থেকে বাঁশ কেটে এর এক সাইড দিয়ে গড়িয়ে নিচে ফেলা হয় তাই লম্বা গড়িও বলে অনেকে।

তবে “তুইনুম ঝর্ণা” নামেই বেশী পরিচিত। পোয়ামুহুরী বাজার থেকে মাতামুহুরি ধরে আরো একটু উপরে গেলে হাতের বামে তুইনুম ঝিরি পড়বে। ঝিরি ধরে ১৫/২০ মিনিট হাটলেই ঝর্ণাটির দেখা পাবেন।

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news