দরিদ্র ও অসহায় মানুষের পরম বন্ধু প্রিসিলা ফাতেমার গল্প

মোহাম্মদ শাহেদ

মোহাম্মদ শাহেদ

২৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ২ years আগে

দরিদ্র ও অসহায় মানুষের পরম বন্ধু প্রিসিলা ফাতেমার গল্প
প্রিসিলা ফাতেমা

অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো এবং দুস্থ মা ও শিশুদের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে মানবতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছেন প্রিসিলা ফাতেমা। সাধারণ মানুষের কাছে মানবতার কন্যা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন ১৭ বছরের নিউইয়র্কে বসবাস করা বাংলাদেশি এই কিশোরী। সোশ্যাল মিডিয়ার উপস্থাপক হিসেবে বিশাল জনপ্রিয় প্রিসিলা ফাতেমা। পত্রিকা একাত্তরকে প্রিসিলা জানান, মাদার তেরেসার মত মানবকল্যাণে জীবন উৎসর্গ করতে চান তিনি।

তার যে বয়সে হেসে খেলে জীবন যাপন উপভোগ করার কথা সে বয়সে তার চারপাশের অধিকার বঞ্চিত অসহায় মানুষের জীবনের সুখে-দুখে নিজেকে সামিল করেছেন বাংলাদেশি কিশোরী প্রিসিলা ফাতেমা। ১৭ বছর বয়সী প্রিসিলা ছোটবেলা থেকেই সামাজিক কাজে জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন। তিনি নিউ ইয়র্কে বাস করলেও নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বাংলাদেশের দরিদ্র ও অসহায় মানুষদের জন্য।

প্রিসিলা ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে ব্যক্তিগত ও তার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের কাছে সহযোগিতা পৌঁছে দেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন গ্রামে বিশুদ্ধ পানির জন্য টিউবওয়েল ও স্যানিটারি ল্যাট্রিন তৈরি করে দিয়েছেন। মহামারী চলাকালীন ত্রাণ বিতরণ করেছেন, এমনকি প্রতি বছরই তিনি শীতবস্ত্র বিতরণ করেন অসহায়দের মাঝে, মানবতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন অনেক অসহায় বৃদ্ধ বাবা-মা ও শিশুদের প্রতি। দরিদ্র শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার দায়িত্ব ও নিয়েছেন তিনি।

প্রিসিলা ফাতেমা জানান, আমি এই কাজ করা শুরু করেছি কারণ আমি বাংলাদেশী হিসেবে বাংলাদেশকে আমি অনেক ভালবাসি, আমি বাংলাদেশের মানুষকে অনেক ভালবাসি। আমি কখনো চাইনা কোন বাংলাদেশী মানুষ যেন কষ্ট পান অথবা জীবন ভালোভাবে কন্টিনিউ করতে পারবেন না এটা আমি চাইনা। এবং যখনই আমি দেখি যে কেউ ভালোভাবে জীবনকে সামনের দিকে এগোতে পারছে না অথবা জীবনে অনেক কষ্ট পাচ্ছে তখন আমারও ব্যক্তিগতভাবে অনেক কষ্ট লাগে তখন আমি চেষ্টা করি আপনাদের কে সহযোগিতা করতে যতটা আমার দ্বারা সম্ভব।

প্রিসিলা পত্রিকা একাত্তরকে জানান, মাদার তেরেসার জীবন দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনি সমাজসেবার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছেন এবং এটি তিনি বেছে নিয়েছেন। প্রিসিলা বলেন প্রতিবছর আমি ভেবে থাকি যে বাংলাদেশে যাবো কারণ বাংলাদেশে হচ্ছে আমার প্রাইমারি হোম কান্ট্রি, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি যে, যেই টাকাটা বাংলাদেশে যাওয়ার জন্য আমার ব্যয় হবে সেই টাকাটা আমি গরীব অসহায়দের মাঝেই বিলিয়ে দেয়।

সমাজের নানা নির্যাতন-নিপীড়ন বিষয় নিয়ে প্রিসিলা ফাতেমা তার মতামত তুলে ধরেন তার অফিসিয়াল ভেরিফাইড ফেইসবুক এবং ইউটিউব চ্যানেলে। বর্তমানে তার ভেরিফাইড ফেইসবুক পেইজে অনুসারী রয়েছে প্রায় ৪০ লক্ষ এবং তার অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে অনুসারী রয়েছে ৫ লক্ষের অধিক যেখানে অতিথিদের নিয়ে নানা ধরনের টকশো করেন প্রিসিলা। তার এই অনুষ্ঠান দেখেন কয়েক লক্ষ মানুষ।

প্রিসিলা বলেন, বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে যারা অনেক ভালো এক্টিভিটিস মোটিভেশনাল স্পিকার, বিভিন্ন জ্ঞান মূলক কথা বলেন আমি ওনাদের ইনভাইটেশন করি আমার লাইভ স্ট্রিমে আসছে এবং গেস্ট হিসেবে থাকতে। আমার মেইন উদ্দেশ্য হচ্ছে ভার্সিটি কলেজ স্টুডেন্ট অথবা ইয়ং জেনারেশনের যারা রয়েছেন উনারা যাতে মোটিভেটেড থাকেন এবং ইন্সপায়ার থাকেন।

প্রিসিলা চার বছর বয়সে বাবা-মায়ের সঙ্গে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। প্রিসিলা দ্বাদশ শ্রেণি অধ্যায়ন শেষ করেছেন, প্রিসিলা নিউইয়র্ক ফিল্ম একাডেমি থেকে নাচ এবং গানের প্রশিক্ষণ নিয়ে মডেলিং ও অভিনয় করলেও এখন সেখান থেকে সরে এসে সামাজিক কর্মকাণ্ডে মনোনিবেশ করে। প্রিসিলা বলেন এত মানুষ আমাকে সাপোর্ট করবে ভালোবাসবে আমি তা স্বপ্নেও কল্পনা করেনি। ব্যক্তিগতভাবে আমার নিজের বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে যে, এত মানুষ আমাকে ভালোবাসেন এবং আমার কনটেন্ট দেখেন আমার কনটেন্ট পছন্দ করেন আমার কাজে আমাকে সাপোর্ট করেন।

১৭ বছরের এই তরুণী অন্ধকার দূরে ঠেলে দিয়ে মানুষের মধ্যে সুন্দরভাবে বাঁচার অণুপ্রেরণা যোগাতে বিভিন্ন ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করেন। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ইনকামের পুরোটুকু ব্যয় করেন মানুষের কল্যাণে। প্রিসিলা স্বপ্ন দেখেন ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশের। মানবতার ফেরিওয়ালা প্রিসিলা মানবিক বিশ্ব গঠনে নিজের জীবন বিলিয়ে দিতে চান।

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news