খাবার চোর
লেখকঃ মোহাম্মদ সাইমুন ইসলাম
হে ধরনী খেলা করো কাহার সনে?
কাহারো ভান্ডার পূর্ণ ধনে,
কাহারো উদর শূন্য অনাহারে।
এইতো এক নিঝুম তিমির রাত্রে,
চাঁদ মামা নেই হয়তো ঢাকা পরেছে মেঘের ঈশানকোনে।
নিস্তব্ধ রজনী পক্ষীকুল ও নিন্দ্রার দলে,
শয়নগৃহে করিয়া শয়ন ভাবিয়াতাছি ভার্যালয়ে।
ঘুম নাহি তবে শুনিয়াতাছি তন্দ্রার ছলে,
শপাং-শপাং আওয়াজ রান্না ঘরে।
ভাবিলাম হবে হয়তো মার্জার।
চুক্ষু মেলিয়া ভাবনা ছাড়িয়া উঠিলাম করিতে ব্যবস্তা তাহাকে তাড়াবার।
ক্রমে হইয়ে নিকটবর্ত্তী উঠিলাম শিহরে,
এতো বিড়াল নহে এক রুগ্ন চোর বটে।
বাধিয়া বক্ষে সঙ্গে বৃক্ষে হস্তে লইয়া যষ্টি,
শুধাইলাম কতো ঘা পরিলে ছাড়িবা চুরি?
বললি ব্যকুল অনুরোধে অশ্রু ফেলিয়া জমিনে ক্রন্দনে ক্রন্দনে,
অভুক্ত আমি সাত দিন অনাহারে।
চোর আমি রুগ্ন - সিগ্ন খাবার করি চুরি
একটু করিয়াতে উদরসাৎ ঢুকিয়াছিলাম তোমারি বাড়ি।
মারপিট কেনো একটু বিচার করিয়া দেখো ফালাইয়া যষ্টি,
সঠিক বিচার পাইলে করিবো না আর চুরি।
ফেলিয়া হাতের লাঠি,
বসিলাম প্বার্শে চোর বাপজির।
ভুবন ভরা চোর সাধু কোন জন,
কেহ প্রকাশ্য কেহ গোপন।
মেধা নহে ঘুষ দিয়ে হয় চাকরি,
শিক্ষিত তবু চাকরি বিনা পথে পথে ঘুরি।
সাধু বেশে মিছে আশ্বাস দিয়ে,
দেখো না কতো পদবিদারী করে কাঙ্গালের আহার চুরি।
আবার দেখো শিক্ষালয়ে ছাত্রের অন্যত্র চুক্ষুদান গুরু দেখে আড় চোখে,
ভাবে পারে না ছেলেটা দেখুক একটু পিছে।
আমাকে বাধিলা বক্ষে বৃক্ষ যেথায়,
ওগুলো যে প্রকাশ্য চুরি কিন্তু হায় দন্ড দেওয়ার সেচ্ছাসেবী কোথায়?
ধনীর ভুরি সামনে গরিবের ভুরি পিঠে,
তবু পায় না আহার্য দিনটির শেষে।
প্রয়োজনের অতীব ধন সঞ্চার করে জ্ঞানী ,
বিজাইয়া মোর চক্ষু বলিলো চোরের মূল যে কৃপণ ধনী।
দন্ড কেনো কৃপন নির্দয়তার নয় শুধু চোরেরই হয়,
ভরা পেটে কাতর ক্ষুৎপিপাশা বুঝিবে কী উপায়?
অদ্য হইতে তিনটি দিবস উপবাস করো,
বিচার করিয়ো মোর তখন যদি ভান্ডার ঘরে নাহি ধরা পরো।
মুছিয়ে অশ্রু চোক্ষে জড়াইয়া বক্ষে মুছাইয়া গাঁয়ের মাটি,
বলিলাম থাম থাম উপদেশ তোর খাটি।
করিস না আর চুরি থাকিস না অনাহারি,
ক্ষুদা পেলে খেয়ে যাস এক মুঠো ভাত আমারি বাড়ি।
পত্রিকা একাত্তর/ সৌরভ কুমার