তীল চাষে খরচ কম ও লাভ বেশী হওয়ায় তিল চাষের দিকে ঝুঁকছে চাষীরা। আমন ধানের আবাদ শেষে শরীষার পরে জমিকে পতিত ফেলে না রেখে তিল চাষ করছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার কৃষকরা।
সরেজমিনে উপজেলার পার্বতীপুর ইউনিয়ন দায়েমপুর গ্রামের চাষী জামাল উদ্দিনের তিলের খেতে গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ বছর আমি ৫ বিঘা জমিতে
তিল চাষাবাদ করেছি। খরচ বলতে শুধু জমি চাষ, বীজ আর কীটনাশক ছাড়া আর কিছুই লাগে না। বিঘা প্রতি ৫ মণ করে তিল পেয়েছি। ৫ বিঘা জমিতে মোট ২০ মণ তিল পেলাম। তিনি আরও বলেন, কৃষি অফিস থেকে আমাকে পাঁচ কেজি তিলের বীজ দিয়েছিল। সাড়ে
চার বিঘা জমি ৫ হাজার টাকাতে বর্গা নিয়ে তিল চাষ করতে শুরু করি। তিল চাষে খরচ খুবই কম। প্রথমে জমিতে চাষ করে বপন করি। অল্প বিষ প্রয়োগ করতে হয়। তাছাড়া আর কোন খরচ নেই।
স্থানীয় কৃষক মোশান আলী বলেন, জামাল ভাইয়ের এই জমিটা আগে পতিত পড়ে থাকতো।
তার এই তিলের ফলন দেখে এবার আমিও সিদ্ধান্ত নিয়েছি সামনে বছর তিল চাষ করবো। কেননা তিলে খরচ একেবারে কম। আর লাভ অনেক বেশী।
স্থানীয় বাসিন্দা প্রভাষক মাহবুব আলী বলেন, তিল চাষ করে এবার অনেক লাভবান হয়েছি। ভাবছি আমিও সামনে বছর জমি পতিত ফেলে না রেখে তিল চাষ করব। সাধারণত বোরো চাষাবাদ করার পরে জমি পতিত পড়ে থাকে। ওই সময়টাতে যদি তিল চাষ করা
যায় তাহলে জমির উপকার হবে আবার আমি লাভবান হব। সে ক্ষেত্রে সরকার যদি প্রণোদনা দিত তাহলে আমার মতো আরও অনেক চাষি এ তিল চাষ করতে উদ্বুদ্ধ হত।
গোমস্তাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ তানভির আহমেদ সরকার জানান, এ বছর ১৫ হেক্টর জমিতে তিলের চাষ হয়েছে। তিল চাষে খরচ অনেক কম বলে বেশী লাভবান হওয়া যায়। বিঘা প্রতি জমিতে ১ কেজি হারে তিলের বীজ, সামান্য ছত্রাকনাশক কীটনাশক, কয়েকবার পানি ছাড়া আর তেমন কোন খরচ হয়না। তিল চাষাবাদের ৮৫ দিনের মধ্যে ঘরে তিল তুলা যায়। বিঘা প্রতি ৪/৫ মণ করে তিল হয়। বর্তমানে তিলের দামও বেশ ভালো। তিনি আরও বলেন, আমন করার পরে সরিষা চাষ শেষ করে এই তিল চাষ করা যায়। তিল চাষ করলে জমির উর্বরতাও বৃদ্ধি পায়।উপজেলায় এবার বীনা তিল-৩, বীনা তিল -৪ এর চাষাবাদ হয়েছে।
পত্রিকা একাত্তর/ ইয়াহিয়া খান রুবেল