মঙ্গলবার (৭ জুন) ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস উপলক্ষে এক বিবৃতিতে রাজধানীর সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোঃ মোহসিন কবীর বলেছেন, বাঙালির গণজাগরণের প্রতীক হচ্ছে ছয় দফা।
তিনি আরও বলেন ''বাঙালি জাতির ইতিহাসে ছয় দফা হচ্ছে একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল। বঙ্গবন্ধু বাঙালিদের এই ঐতিহাসিক ৬ দফার মাধ্যমেই অধিকার আদায়ের সচেতন করে তুলেছিলেন। এই ছয় দফার মাধ্যমে পূর্ব বাংলার একজন কৃষকও অনুধাবন করতে পেরেছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানের শাসন ও শোষণ নীতি সর্ম্পকে- এটিই ছিল ছয় দফার সার্থকতা। এই ছয় দফার মাধ্যমেই বাঙালি জাতি নিজেদের অধিকার আদায়ে সচেতন হয় এবং স্বাধীনতাকামী হয়ে উঠে। ''
সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে প্রতিষ্ঠিত ছয় দফার উপর নির্মিত বাংলাদেশের প্রথম ভাস্কর্য ''মুক্তির সনদ''। এ ভাস্কর্যটির উদ্বোধন করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, এমপি। ভাস্কর্যটি উদ্বোধন করা হয় ২৪শে মার্চ ২০২০ (১০ চৈত্র ১৪২৬ বঙ্গাব্দ)।
এ দিন দুপুর ১২ টায় সকল শিক্ষক, অফিসার্স কাউন্সিল এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দিয়ে অধ্যক্ষ মুক্তির সনদ ভাস্কর্যে জাতির পিতা প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শ্রদ্ধাঞ্জলি জানান।'মুক্তির সনদ' ভাস্কর্য সর্ম্পকে জানতে চাইলে অত্র কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, ''মুক্তির সনদ হচ্ছে বাংলাদেশে ছয় দফার উপর নির্মিত প্রথম ভাস্কর্য। যেহেতু এই কলেজের ভবনগুলো একটু পুরাতন তাই সে সব কিছু মাথায় রেখে এ ভাস্কর্যটি করা হয়েছে স্থানান্তর যোগ্য।
অর্থাৎ যেকোন প্রয়োজনে এটি স্থানান্তর করা যাবে অতি অল্প সময়ে এবং কম খরচে। বাঙালির ঐতিহাসিক এই ছয় দফার যে দাবিগুলো অনেকে নিজের মনে মত করে মাধুর্য মিশিয়ে লিখতে শুরু করেছিল। কিন্তু এখানে বঙ্গবন্ধুর ঠিক যে ভাষায় এই দাবিগুলো তৎকালীন লাহোরে বিরোধী দলের অধিবেশনে তুলে ধরেছিলেন সে ভাষায়ই এ দাবিগুলো তুলে ধরেছেন ছয়টি স্তম্ভে। এতে সর্বাত্মক সহায়তা করছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, এমপি এবং শিক্ষা উপ-মন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী।''
ছয় দফা গুরুত্ব সর্ম্পকে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ বলেন,''ছয় দফা দাবির মূল উদ্দেশ্য- পাকিস্তান হবে একটি ফেডারেল রাষ্ট্র, ছয় দফা কর্মসূচির ভিত্তিতে এই ফেডারেল রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গরাজ্যকে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন দিতে হবে। ছয়দফা কর্মসূচীর ভিত্তি ছিল ১৯৪০ সালের ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাব।
পরবর্তীকালে এই ৬ দফা দাবিকে কেন্দ্র করে বাঙালি জাতির স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলন জোরদার হয়। যার ফলশ্রুতিতে আমরা পাই আমাদের লাল-সবুজের বাংলাদেশ। এই আন্দোলন এতোই গুরুত্বপূর্ণ যে একে ম্যাগনাকার্টা (Magna Carta) বা বাঙালি জাতির মুক্তির সনদও বলা হয়।
মূলত এই ছয় দফার প্রতিটি দাবিগুলোর গুরুত্ব সকলের নিকট উপস্থাপন করাই ছিল ভাস্কর্য মুক্তির সনদ প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ্য। এই দাবিগুলোই যে পরবর্তীতে জন্ম দিয়েছিল একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের, তরুণ প্রজন্মনের নিকট তা ফুটিয়ে তুলতেই ছিল এ আয়োজন।''
এদিকে ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস উপলক্ষে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের সাংবাদিক সমিতি (সোকসাস) পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানো হয়।
পত্রিকা একাত্তর /অপূর্ব চক্রবর্তী