অতি বৃষ্টি ও শ্রমিক সংকটে গোমস্তাপুরের বোরোচাষিরা

স্টাফ রিপোর্টার, গোমস্তাপুর

১৬ মে, ২০২২, ১ year আগে

অতি বৃষ্টি ও শ্রমিক সংকটে গোমস্তাপুরের বোরোচাষিরা

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে বোরোচাষিরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও শ্রমিক সংকটের কারণে চরম বিপাকে পড়েছেন। মাঠ ভরা পাকা ধান নুয়ে পড়ে রয়েছে। বোরোধানগুলো বৃষ্টির কারণে এবং ঝড়ো হাওয়ায় জমিতেই নুয়ে পড়েছে।

তারপরও শ্রমিক সংকটের কারণে ধান ঘরে তুলতে পারছেন না এ অঞ্চলের হাজার হাজার কৃষক। ফলে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় মাঝে মাঝে আতঙ্ক ও চরম উৎকণ্ঠার মধ্যে দিয়ে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে তাদের।

বৈরী আবহাওয়া ও ঝড়-বৃষ্টির কারণে আধা পাকা ধান মাটিতে নুয়ে পড়েছে। অনেক এলাকায় পাকা ধান রয়েছে পানির নিচে। কিন্তু শ্রমিক সংকটের কারণে সময়মতো ধান কেটে ঘরে তোলা নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। শেষ পর্যন্ত মাঠে ধান সুষ্ঠুভাবে তুলতে পারবেন কিনা তা নিয়েও তাদের মনে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

জানা যায়, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও উপজেলার ৮ টি ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠে ব্যাপকহারে বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এবার ১৫ হাজার ৪৮০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ করা হয়েছে।

হাইব্রিড ৭৪৫ হেক্টর, উফশী ১৪ হাজার ৭৩৫ হেক্টর। বর্তমানে এ ইউনিয়নগুলোর প্রতিটি মাঠ পাকা ধানের সোনালী রঙে রঙিন হয়ে রয়েছে। এখন পর্যন্ত বোরো ধান ৭০% কর্তন করা হলেও অধিকাংশ ধান এখন মাঠে পড়ে রয়েছে। শ্রমিক সংকটের কারণে কৃষক ঘরে ধান তুলতে পারছে না।

উপজেলার গোমস্তাপুর ইউনিয়নের নয়াদিয়াড়ী গ্রামের কৃষক মনিরুল ইসলাম জানান, ঈদুল ফিতরের দিন ভোর রাতে হঠাৎ করে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। সঙ্গে ছিল ঝড় ও হালকা বাতাস। ঘণ্টাব্যাপী বৃষ্টিতে পাকা ধানের জমিতে পানি জমে যায়।

পানিতে নুয়ে পড়ে পাকা ধান। এখন পুরোদমে কাটা মাড়াই শুরু হলেও চাহিদা মত শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি আরো বলেন, এবছর প্রথমে ধানের ফলন ভালো হওয়ায় আনন্দে ছিলাম। কিন্তু কয়েকবার ঝড় ও বৃষ্টির কারণে বিঘাপ্রতি ৩-৪ মণ ধান কম হবে বলে ধারণা করছি।

একজন শ্রমিক মজুরি দাবি করেছে ৭০০-৯০০ টাকা। এতে প্রতি বিঘা জমির ধান কাটা মাড়াই করে ঘরে তুলতে খরচ হবে ৭-৮ হাজার টাকা। ফসল কেটে সময়মতো ঘরে তোলা না গেলে ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা রয়েছে।

রাধানগর ইউপির কৃষক ইব্রাহিম খলিল বলেন, এ বছর বোরো ধান ৬ বিঘা করেছি। এদিকে হাইব্রিড সুপারগোল ও জিরা ধানের আবাদ হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৩ বিঘা ধান কাটা হয়েছে। তাতে শ্রমিককে ৫-৬ মণ ধান দিয়ে দিতে হচ্ছে।

আর প্রতি শ্রমিককে ৮০০-৯০০ টাকা করে দিতে হচ্ছে। এ বছর ধান করে অনেক ক্ষতি হলো। একদিকে ঝড়-বৃষ্টির কারণে ধান পড়ে যাওয়া অন্যদিকে বিঘা প্রতি ৪-৫ মন ধান কম এ নিয়ে কৃষকদেরকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানভীর আহমেদ সরকার জানান, চলতি বছরে এ উপজেলাতে শ্রমিক সংকট ব্যাপক হারে দেখা দিয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ফসলের তেমন কোন ক্ষতি না হলেও নিচু এলাকার জমির ধান কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শ্রমিক সংকট কাটাতে এ কৃষি কর্মকর্তা আগামীতে কৃষকদেরকে যান্ত্রিকরণের দিকে মনোনিবেশ করতে জোর তাগাদা দিয়েছেন।

পত্রিকা একাত্তর / ইয়াহিয়া খান রুবেল

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news