স্বপ্নের সোনালী ফসলে সেঁজেছে মাঠ, হাসি কৃষকের মুখে

সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি

২২ এপ্রিল, ২০২২, ২ years আগে

স্বপ্নের সোনালী ফসলে সেঁজেছে মাঠ, হাসি কৃষকের মুখে

ঝলমলে সোনা রাঙা রোদ পড়েছে গ্রামের মাঠে মাঠে। যতদূর চোখ যায় দেখা মেলে অফুরান সবুজের সমারোহ। আর পতিত জমিতে স্বপ্নের বোরো ফসল ও তরমুজ ফলাতে আগ্রহী কৈখালী ইউনিয়নের কৃষকরা। ভোর হতে না হতেই কেউ ধান কাটা শুরু করেছেন, কেউ ধান তরমুজ নিয়ে টানছে মাথায় করে।

আবার অনেকেই ফসলি জমিতে সেচ দেওয়ার কাজও করছেন। কৃষি প্রধান সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ৫ নং কৈখালী ইউনিয়নের শস্যভার খ্যাত শৈলখালী যাদবপুর, বৈশখালী, শৈলখালী, সাপখালী, গ্রামের মাঠে মাঠে দেখা মেলে কৃষকদের দিনমান এমন কর্মযজ্ঞ।

মাঠের পর মাঠে ঠিক যেন এক সবুজ দিগন্ত রেখা ঢেউ তুলছে। নিজেদের স্বপ্ন সোনা হয়ে ফললে তবেই স্বস্তি কৃষক কুলের।সম্প্রতি ওই গ্রামে সরেজমিনে, গিয়ে কৃষকের এমন কর্মব্যস্তই দেখা যায়।ঘাম ঝরানো বোরো ফসল আর তরমুজ নিয়ে অনেক স্বপ্ন ও সাধের কথা উচ্চারিত হলো স্থানীয় কৈখালী গ্রামের কৃষকদের কন্ঠে।

ভাল মানের বোরো ধানের ফসল ও তরমুজ পেয়ে এসব কৃষকের চোখে-মুখে আশার সোনালি ঝিলিক দেখে প্রথমেই মনে হলো তারা নিজেদের জমিতে চারা রোপণে মেতেছেন। কিন্তু কয়েকজন কৃষক-চাষীদের সঙ্গে আলাপ জমাতেই জানা যায়,তারা একেকজন দিনমজুর।

স্থানীয় গৃহস্থ কিছু মানুষের জমিতে তারা বোরো ধান ও তরমুজ চাষ সফল করছেন। প্রতিদিন তারা একেকজন তিনশ’থেকে সাড়ে তিনশ টাকা মজুরি পাচ্ছেন। এ মৌসুমের পুরোটা সময় থাকছেন তারা এ কাজে। স্মিত হেসে আঞ্চলিক ভাষায় শওকত নামের একজন মধ্যবয়সী যুবক বলেন, ‘আমগোর তো ভাই জমি নাই। মায়নার (মাইনে) বিনিময়ে অন্যের জমিতে কাম করি।

তাই এ মৌসুমে এই কাজ বাইছা নিছি। ভোর থেকেই বোরো আবাদে নেমে পড়ায় দুপুরে বাড়ি গিয়ে খাবারও সময় পাচ্ছেন না এসব শ্রমিক। সকালে ডাল ভাত আলু মাগনা দিয়ে আটার রুটি খেয়ে খেতে নেমে পড়েছিলেন শওকত ও রশীদরা। স্বপ্নের ফসল ফলাতে সফল হওয়ায় জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য অনেক চাষিকে গভীর নলকূপের পানি নোনা হওয়ায় বর্ষার পানি ধরে রাখতে প্রস্তুত করতে দেখা যায় পুকুর খনন।

গত মৌসুমে বোরো ধানের এবং তরমুজের ভালো ফলন পেয়েছিলেন চাষীরা। কিন্তু মাটির তলদেশের পানি লবণাক্ত হওয়ায় সরকারি খাস খাল ও মালিকানা পুকুরগুলোতে পর্যাপ্ত চাষের পানি থাকায় ফসলের আবাদ হয়েছিলো কম। এছাড়াও লাভবান দাম পাননি তারা। এ নিয়ে খানিকটা দুশ্চিন্তা রয়েছে।

তবুও আশাবাদী এ কৃষকরা। এবার তরমুজ ও ধানের ভালো দাম পাওয়ার প্রত্যাশা নিয়ে তরমুজ চাষ ও ধান চাষ গতবারের তুলনায় একটু বাড়িয়ে কৃষকরা বলেন,এইবারও ফলন ভালো হয়েছে। আমগোর স্বপ্ন সোনা হইয়াই মহান সৃষ্টিকর্তার হাজার হাজার শুকুরিয়া। এবং এইবার সরকার ধানের ন্যায্য দাম দিচ্ছে।

তবে এমন সোনার ফসল ধান, তরমুজের পাশাপাশি আর ও বিভিন্ন রকম ফসল ফলাতে ইউনিয়নের সরকারি খাস খালগুলো সংস্কার ও নতুন করে কাটতে সরকারের কাছে দাবি রাখেন কৈখালী ইউনিয়নের বসাবসকারী স্থানীয় কৃষক চাষা সহ বিভিন্ন পেশার মানুষ (শেখ মুজিব) শেখের বেটি আমগোরে (কৃষকদের) কান্দাইবো না।

কৈখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ আব্দুর রহিম জানান কৈখালী ইউনিয়নের মাটির তলদেশের পানি নোনা হওয়ায় সেটা দিয়ে চাষ করা সম্ভব নয়, তবে কৈখালী ইউনিয়নের অনেক খাস খাল আছে সেগুলো ভালোভাবে সংস্কার করে পুনঃ খনন করার উদ্যোগ নিতে হবে

তাহলে সম্ভব কৈখালীর প্রতিটা বাড়ির আনাচে কানাচে শাক সবজির বাগান সহ ধান তরমুজ ফলবে সোনার ফসল, থাকবে না পতিত জমি, আমি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি অতি জরুরি জানাবো,এবং খাল কাটানোর জন্য দ্রুত পদক্ষেপে নিবো।

পত্রিকা একাত্তর / মোঃ আলফাত হোসেন

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news