ঋতু পরিক্রমায় প্রতিবছরের মতো এবারও সামনে চলে এসেছে বৈশাখ। নতুন বছরকে বরণ করে নিতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ।
অতিমারি করোনায় দুই বছর বিরতির পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ফের সশরীরে আয়োজন হতে যাচ্ছে পহেলা বৈশাখ। এ উপলক্ষে দিনব্যাপী (১৪ এপ্রিল) থাকছে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন। মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ আয়োজন করা হবে। এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার মূল প্রতিপাদ্য ‘প্রকৃতি’। পাশাপাশি থাকবে পাখি, ফুল ও বিভিন্ন প্রতিকৃতিক বস্তু।
এবারও মঙ্গল শোভাযাত্রায় আবহমান বাংলার প্রকৃতির নানা অনুষঙ্গের প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তোলার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে সবাই। বাংলার প্রকৃতিকে প্রাধান্য দিয়ে প্রকৃতির ছবি, ফুল, দোয়েল ও পেঁচার মুখোশ ও আমন্ত্রণ পত্র বানাচ্ছে তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে এসব উপকরণ তৈরিতে। রঙ-তুলির আঁচড়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা রাঙিয়ে তুলছে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজনকে।
এদিকে বর্ষবরণ দিনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে সকাল ৯ টা ৩০ মিনিটে মঙ্গল শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে রায়সাহেব বাজার মোড় থেকে ঘুরে পুরান ঢাকার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ক্যাম্পাসে এসে শেষ হবে। শোভাযাত্রা শেষে সকাল ১০টা ৩০ মিনিট থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মুজিবমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মাঝে যোহর নামাজের বিরতি থাকবে। এতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন অংশগ্রহণ করবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা বৈশাখ উদযাপনের লক্ষ্যে শেষ সময়ে সাজসজ্জার কাজে কর্মব্যস্ত দিন পার করছেন। চারুকলা বিভাগের এক শিক্ষার্থী জানান, গত দুই বছর করোনার কারনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাঙালির প্রানের এ উৎসব উদযাপন সম্ভব হয়নি। প্রায় দু বছর পর বিশ্ববিদ্যালয়ে পয়লা বৈশাখ উদযাপন করা হবে এ নিয়ে সকল শিক্ষার্থীদের মাঝেই এক উচ্ছ্বাস কাজ করছে। ইতিমধ্যে বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে সব ধরনের প্রস্তুতি প্রায় শেষের দিকে।
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক বলেন, আমাদের এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রায় মূল থিম ‘প্রকৃতি’। এর পাশাপাশি থাকবে পাখি, ফুল ও বিভিন্ন প্রতিকৃতিক বস্তু। রমজান মাস হওয়াতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বিকেল ৩টার মধ্যেই শেষ করবো।
বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে আরেক শিক্ষার্থী শাহরিয়ার রাকিব বলেন, পয়লা বৈশাখ হচ্ছে বাঙালি সংস্কৃতিকে ঢেলে সাজানোর এক সূচনা, পয়লা বৈশাখ বাঙালি সংস্কৃতিকে মননে ধারন করার জন্য আমাদের কাছে আলোকবর্তিকার ন্যায় আবর্তিত হয়। বিগত দুই বছর আমরা পয়লা বৈশাখ উদযাপনে করোনার জন্য যদিও ঘর থেকে বের হতে পারিনি তারপরও এর প্রতি টান বিন্দু মাত্র কমেনি।
পত্রিকা একাত্তর/ অশ্রু মল্লিক