সুনামগঞ্জে কৃষকদের দুঃখ শুরু

সুনামগন্জ জেলা প্রতিনিধি

২ এপ্রিল, ২০২২, ২ years আগে

সুনামগঞ্জে কৃষকদের দুঃখ শুরু

বাঁধ ভেঙে শনিবার সকাল থেকে পানি ঢুকতে শুরু করেছে হাওড়ে। এতে ফসলহানির শঙ্কা প্রকাশ করেছেন কৃষকরা। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তা বলেছেন, ভেঙে যাওয়া ভাগতে ফসল রক্ষার জন্য করা হয়নি। এটি ভাঙলেও ফসলহানির শষ্কা নেই।

এবছর সুনামগঞ্জে আগেভাগেই বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে। বৃষ্টি হচ্ছে ভারতের মেঘালয়েও। ফলে উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সুনামগঞ্জের নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই ঢলেই শনিবার টাঙ্গুর হাওর "নজর খালী" বাঁধ ভেঙ্গে গেছে।

তাহিরপুরের ১ নম্বর উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়ন ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও কৃষক সাজিনুর মিয়া বলেন,এবার বাঁধের কাজে অনেক গাফিলতি হয়েছে। নজর খালি বাঁধ নির্মাণে জন্য আমি অনেকবার কথা বলেছি। এই বাঁধ ভাঙ্গনের ফলে কৃষকরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। বাঁধ দিয়ে পানি ঢুকতে থাকলে অনেক ফসল তলিয়ে যাবে।

সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এই বছর টাঙ্গুর হাওড়ে প্রায় ১২০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে তাহিরপুর অংশে চাষ হয়েছে ২৫ হেক্টর জমিতে।

হাওরবেষ্টিত সুনামগঞ্জে অতিবৃষ্টি ও ঢলের কারণে দেখা দেয় অকালবন্যা। এত নষ্ট হয় হাওড়ার একমাত্র ফসল বোরো ধান। ধান রক্ষায় প্রতিবছর হাওরাঞ্চলের নির্মাণ করা হয় ফসল রক্ষার বাঁধ।

ডিসেম্বরের ১৫ তারিখ থেকে শুরু হয় এই বাঁধের কাজ, যা ২৮ ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়ার কথা। প্রতি বছরই এই বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম ও দীর্ঘসূত্রতার অভিযোগ করেননি স্থানীয়রা।

পাউবো কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ৭২৪ টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) মাধ্যমে ৫৩২ দশমিক ৩৯ বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭২৪ কোটি টাকা। এর আগে সর্বশেষ ২০১৭ সালে অকাল বন্যায় বাঁধ ভেঙ্গে তলিয়ে যায় হাওরের বোরো ফসল।

পাউবোর সুনামগঞ্জ জেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নজরখালী বাঁধ নির্মাণের জন্য এবার ৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয় পাউবো। তবে পাউবো কর্মকর্তা বলছেন, এই বাঁধটি ফসল রক্ষার জন্য নয়, এলাকাবাসীর অনুরোধে বিশেষ বরাদ্দের মাধ্যমে নির্মিত হয়েছিল।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামসুদ্দোহা বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওর রামসার সাইট (আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ জলাভূমি) ঘোষণার পর থেকে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয় না।মৎস্য অভয়ারণ্য হাওড়ের ধান চাষও হয় না। তবে এলাকাবাসী অনুরোধে বিশেষ বরাদ্দের মাধ্যমে এখানের বাঁধ নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। তবে টাঙ্গুয়ার হাওরেও এবার বোরো চাষ করেছেন জানিয়ে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রায়হান কবির বলেন, টাংঙ্গুয়ার হাওরে কৃষকরা নিজ উদ্যোগে কিছু ফসল রোপণ করেছেন। তাহিরপুর অংশে মাত্র ২৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। এছাড়া যে বাঁধটি ভেঙে গেছে সেটি ফসল রক্ষার বাঁধ নয়। বাঁধ ভাঙ্গার খবরে আমি এলাকায় এসেছি।

পত্রিকা একাত্তর/ শাহীন মিয়া

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news