গ্ৰীন ভয়েসের উদ্যেগে আন্তর্জাতিক নদী কৃত্য দিবস পালিত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

১৪ মার্চ, ২০২২, ২ years আগে

গ্ৰীন ভয়েসের উদ্যেগে আন্তর্জাতিক নদী কৃত্য দিবস পালিত

সোমবার (১৪ মার্চ) আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস ২০২২ উদযাপন উপলক্ষে গ্ৰীন ভয়েস কর্তৃক আয়োজিত বুড়িগঙ্গাসহ দেশের সকল নদী দখল ও দূষণ মুক্ত করার দাবীতে এক সমাবেশ ও নৌকা মিছিলের আয়োজন করা হয়। এবারের আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস এর প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল "জীববৈচিত্র্যের জন্য নদী"

মূলত "গ্রীন ভয়েস" পরিবেশ সচেতন ছাত্র-যুবকদের একটি স্বাধীন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। বাংলাদেশের প্রথম পরিবেশবাদী এই সংগঠনটি পরিবেশ রক্ষা ও জনসচেতনতা বাড়াতে, কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সারা দেশের তরুণ সমাজকে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। দেশের খেলার মাঠ, পার্ক, নদী-নালা, প্রাকৃতিক সম্পদ, উন্মুক্ত স্থান রক্ষা করার জন্য আন্দোলন, তরুণদেরকে পরিবেশ রক্ষায় উৎসাহী, পরিবেশ সচেতন তরুণ সমাজ, টেকসই উন্নয়ন, পরিবেশবান্ধব দেশ বিনির্মাণে কাজ করে যাচ্ছে।

আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস ২০২২ প্রতিপাদ্য বিষয় গুলো হল- "অব্যহত নদী দখল মুক্ত করা, অবকাঠামো ও দূষনেধ্বংসের মুখে সারা দেশের নদ-নদী জলাশয়কে রক্ষা করা, নদী থেকে অবিলম্বে সকল দখলদার-মাছ-প্রকল্প অপসারণ করা, জাতিসংঘ পানি প্রবাহ আইন ১৯৯৭ ও হাইকোর্টের সকল রায় মেনে সকল নদীর সীমানা নির্ধারণ করা।

উক্ত সভায় অংশগ্রহণ করেন গ্রীন ভয়েসের প্রধান সমন্বয়ক মোঃ আলমগীর কবির, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখার সাবেক সভাপতি মিলন মূর্তজা, সাধারণ সম্পাদক মোঃ মীর হোসেন প্রধান, প্রচার সম্পাদক মাহমুদুল হাসান মিল্টন, বিভিন্ন বিভাগের সমন্বয়ক বৃন্দ ও এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্যরা।

এসময় গ্রীন ভয়েসের প্রধান সমন্বয়ক আলমগীর কবির বলেন, নদীর প্রতি মানুষের করণীয় কী, নদী রক্ষায় দায়িত্ব, মানুষের দায়বদ্ধতা কতটুকু; এসব বিষয় স্মরণ করিয়ে দিতে দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নদী সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে ও মানুষের মধ্যে নদী ভাবনা তৈরি করতে গ্রীন ভয়েস জন্মলগ্ন থেকে কাজ করে যাচ্ছে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি মিলন মূর্তজা বলেন- গ্রীন ভয়েস পরিবেশ সচেতন তরুনদের একটি স্বাধীন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন । জনসচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে পরিবেশ রক্ষা ও বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে ছাত্র সমাজকে সংগঠিত করে দেশের পরিবেশ রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে দেশে কল-কারখানাগুলো হচ্ছে নদী দূষণের প্রধান উৎস। এসব থেকে নানারকম দীর্ঘস্থায়ী বিষাক্ত তরল দূষক পরিবেশের সীমাহীন ক্ষতিসাধন করে চলছে। তাই প্রথমে সবাইকে সচেতন হতে হবে। নদীমাতৃকাকে বাঁচাতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।

সাধারণ সম্পাদক মোঃ মীর হোসেন প্রধান বলেন, নদী বাঁচলে দেশ বাঁচবে, দেশ বাঁচলে মানুষ বাঁচবে। সারাদেশের মৃতপ্রায় নদীগুলোকে দখলমুক্ত করে পুনর্জীবিত করতে হবে। শুধু মুখে নয় নদী রক্ষায় কার্যকরী পদক্ষেপ দেখতে চান তারা।

উক্ত সভায় আন্তর্জাতিক নদী রক্ষার করনীয় দাবীগুলোর মধ্যে ছিল-

আদালতের রায়ের ভিত্তিতে সকল নদীর সীমানা নির্ধারণ করতে হবে, নদী নামক জীবন্ত স্বত্তার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে, মৃত ও ভরাট নদীর ড্রেজিং করে তার প্রবাহ ও নাব্যতা পুনরুদ্ধার করতে হবে এবং নদীর মাটি ইজারা দেয়া বন্ধ করতে হবে, সকল শিল্প কারখানার বর্জ্য পরিশোধন প্লান্ট সংযোজন ও ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে, শহুরে গৃহস্থালী ও হাসপাতাল বর্জ্য নদীতে ফেলা বন্ধ ও তরল বর্জ্য পরিশোধন করা সম্পন্ন বাধ্যতামূলক করতে হবে, নদীর উপর কাঁচা/পাকা পায়খানা নির্মাণ বন্ধ করতে হবে এবং জমিতে রাসায়নিক সার কীটনাশক ব্যবহার বন্ধ করতে হবে, নৌ-যান নির্গত ময়লা, বর্জ্য, তেল পানিতে ফেলা নিষিদ্ধ ও নৌযানে তেলের পরিবর্তে গ্যাস বা সোলার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে।

পত্রিকা একাত্তর / অশ্রু মল্লিক

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news