চাষিরা লাভবান হওয়ায় প্রতি মৌসুমে বাড়ছে আবাদি জমির পরিমাণ

সুনামগন্জ জেলা প্রতিনিধি

১ ফেব্রুয়ারী, ২০২২, ২ years আগে

চাষিরা লাভবান হওয়ায় প্রতি মৌসুমে বাড়ছে আবাদি জমির পরিমাণ

সবজি এলাকা হিসেবে খ্যাত সীমান্ত ঘেঁষা জেলা সুনামগঞ্জ। স্থানীয় ভোক্তাদের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয় সুনামগঞ্জ জেলার সবজি। চাষিরা লাভবান হওয়ার কারণে প্রতি মৌসুমে বাড়ছে আবাদি জমির পরিমাণ।

সুনামগঞ্জ জেলার ১১ টি উপজেলায় গত (২০১৯-২০) রবি মৌসুমে শীতকালীন সবজি আবাদ হয়েছে ১১,৭৫৯ হেক্টর জমিতে উৎপাদন হয়েছে ২,৯৯,৮৫৪ মে. টন।চলতি (২০২১-২০২২) রবি মৌসুমে শীতকালীন সবজি আবাদ হয়েছে ১১,৭৮০ হেক্টর জমিতে উৎপাদন হয়েছে ২,৯৬,০৪ মে. টন। গত (২০১৯-২০) মৌসুমের তুলনায় চলতি রবি মৌসুমে ১৯ হেক্টর জমি বৃদ্ধি পেয়ে উৎপাদন ও বেড়েছে ৩২৫০মে. টন।

সুনামগঞ্জ জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলাতে সবচেয়ে বেশি জমিতে ২,১৩৫ হেক্টর ও সবচেয়ে কম জমি দিরাই উপজেলায় ৩৩০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি আবাদ হয়েছে।

সবজি একটি পচনশীল দ্রব্য। সবজিগুলো সুনামগঞ্জ জেলায় সংরক্ষণের কোন ব্যবস্থা নেই। জমি থেকে সবজি তুলে বিক্রি করেন চাষিরা। সুনামগঞ্জ সবজি বাজারে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে সবজি আসে

বাঁধাকপি, লালশাক, ফুলকপি, মুলা, গাজর,টমেটো, শালগম,ওলকপি,ডাটা,বেগুন, করলা, সীম,পাতিলাউ, মিষ্টিকুমড়া, স্কোয়াশ, খিরা,ঝাড়সীম, পালংশাক, বরবটি, বাটিশাক, পুইশাক, শসা সহ আরো অনেক জাতের সবজি।

জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে বিশ্বম্ভরপুর, জামালগঞ্জ, তাহিরপুর, সাচনা, বিন্নাখলী, হালুয়ারঘাট, কৃষ্ণনগর,ধনপুর,মথুরকান্দি, বালিজুরী ইত্যাদি স্থান থেকে সুনামগঞ্জ বাজারে সবজি আসে। প্রতি মৌসুমে ফসলের চাহিদা ভালো থাকায় দামও ভালো পাচ্ছেন কৃষকেরা। অনেক কৃষক খুচরা ও পাইকারী বিক্রি করছেন স্থানীয় বাজারে আবার কিছু অনেক কৃষক জমি থেকে সরাসরি সিলেট, ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। তাছাড়া পৌর শহরের বিভিন্ন স্থানে সবজি পাওয়া যায়, পুরান জেল রোড, ষোল ঘর সহ ভ্যান ভর্তি সবজি বিক্রেতারা শহরের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করতে দেখা যায়।

নারায়ণ তলা কোণা পাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল মালেক (৬০) হেসে হেসে তিনি বলেন, এই বছর ৩ বিঘা জমিতে সবজি চাষ করেছি।গতবছরের তুলনায় এই বছর আবহাওয়া অনেক ভালো সাথে ভোক্তাদের চাহিদা বেশি। জমি থেকে সবজি তুলে শহরে খুচরা বিক্রি ও অতিরিক্ত সবজি সিলেটে পাইকারী বিক্রি করি।

বিশ্বম্ভরপুর ভাদেরটেক গ্রামের পাইকারী ব্যবসায়ী মো. মুতি মিয়া(৫৫) তিনি জানান, বর্তমানে প্রতি কেজি বেগুন ৪৫-৫০ টাকা কেজি, টমেটোর মূল্য ২৫- ৩০ টাকা বর্তমানে ফুলকপি ৩০-৩৫ টাকা, আলু দাম ২০-২৫ টাকা তবে, সীম ৩০-৪০ টাকা, গাজর ২০-৩০ টাকা, পুইশাক ২৫-৩০টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তিনি আরো বলেন যাতায়াতের সমস্যা না থাকায় কারণে সহজেই ঢাকায় সবজি পাঠাতে পারছি।

ক্রেতা পৌর শহরে বাসিন্দা সাদিকুর রহমান বলেন, বাজারের সব ধরনের তাজা সবজি পাওয়া যায়, কিন্তু গত বছরের তুলনায় দাম একটু বেশি, সবজি ক্রয়ের জন্য সকালে বাজারে আসলে তাজা সবজি পাওয়া যায়।

সুনামগঞ্জ জেলার কৃষি কর্মকর্তা উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম তিনি বলেন, কৃষকদেরকে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শাক-সবজি চাষের পরামর্শ সহ কৃষকদের ৪% সুদের হারে ডাল ও তেল জাতীয় ফসলের চাষিদের ঋণ প্রদান করে থাকি।চাষিরা লাভবান হলে প্রতি মৌসুমে আবাদি জমির পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।

পত্রিকা একাত্তর/শাহীন মিয়া

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news