অসহায় শিশুর চিকিৎসার দায়িত্বভার নিলেন অধ্যাপক

নিজস্ব প্রতিনিধি

নিজস্ব প্রতিনিধি

২৪ জানুয়ারী, ২০২২, ২ years আগে

অসহায় শিশুর চিকিৎসার দায়িত্বভার নিলেন অধ্যাপক
অধ্যাপক ডা: আফতাব ইউসুফ রাজ

দৌলতখান উপজেলার রাধাবল্লভ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্র মোঃ রনি (৬) অটোরিক্সা চাপায় গুরুতর আহত হয়। দিনমজুর বাবা পক্ষে ছেলের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা সম্ভব হয়ে উঠেনি।

গত ১৫দিন যাবৎ শিশু মোঃ রনি বিনা চিকিৎসায় প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে ঘরে পড়ে চিৎকার করতে থাকে। অবুঝ সন্তানের অসহ্য ব্যথা আর কষ্ট সইতে না পেরে রনির বাবা মোঃ বিল্লাল হোসেন সাংবাদিক ও বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেন। পরে সোস্যাল মিডিয়ায় ঘটনাটি উল্লেখ করে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অসহায় বাবার আর্তনাদ ও ছেলের চিকিৎসার খরচ যোগাতে সমাজের বিত্তবান মানুষের সাহায্য কামনা করেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও সাংবাদিকদের তথ্যে পাওয়া দৌলতখানে অসুস্থ শিশু রনির চিকিৎসার দায়িত্বভার নিলেন স্কয়ার হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট অধ্যাপক ডা: আফতাব ইউসুফ রাজ।

গত সপ্তাহ রনি কে তার বাবা-মায়ের সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। খবর পেয়ে ডা: রাজ বিডিএফের নের্তৃবৃন্দ কে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যান। ডা: রাজের এমন সহযোগিতাকে মানবিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বলে দৌলতখানের সর্বস্তরের মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছে।

জানা গেছে, গত ১৫ জানুয়ারী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘মানবিক সহযোগিতার আবেদন’ শিরোনামে একটি পোস্ট দেয়া হলে বিষয়টি নজরে আসে ডা: রাজের। পরে তিনি রবিবার সন্ধ্যায় ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে শিশু রনির চিকিৎসার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। রনির বাবা মোঃ বিল্লাল হোসেন উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তিনি দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে পৌরসভা ২নম্বর ওয়ার্ডে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করেন। পেশায় সে একজন দিনমজুর।

অসুস্থ রনির মা জানান, আমার ছেলে এক্সিডেন্ট হওয়ার পরে আমি হতাশায় ছিলাম চিকিৎসা করতে পারবো কি পারবো না। পরে যখন শুনেছি ডা: রাজ আমার ছেলের চিকিৎসার সকল ব্যয়ভার গ্রহণ করবেন তখন আমার মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। আমি ডা: রাজের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া কামনা করি।

পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র জাকির হোসেন বাবুল জানান,অটোরিক্সায় এক্সিডেন্ট হয়ে গেলে রনির পরিবারে নেমে চরম হতাশা। আমরা স্থানীয়ভাবে এলাকা থেকে চাঁদা কালেকশন করে রনির প্রাথমিক চিকিৎসা করেছি। পরে অবস্থা আশংকাজনক দেখে ঢাকা মেডিকেলে প্রেরণ করা হয়। তিনি আরো বলেন, ডা: রাজ শিশুটির চিকিৎসার দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন। এটা শুনে আমরা এলাকাবাসী সত্যিই আনন্দিত। ডা: রাজের সহযোগিতায় দ্রুতই তার অপারেশন করা হবে বলে আমরা জেনেছি। আমরা এলাকাবাসী ডা: রাজের এমন মানবিক কাজের জন্য আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অধ্যাপক ডাঃ আফতাব ইউসুফ রাজ জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শিশু রনির জন্য মানবিক আবেদনের পোস্টটি দেখতে পাই। পরে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছ থেকে বিস্তারিত জেনে শিশুটিকে দেখতে যাই এবং মানবিকতার টানে তার চিকিৎসার সব দায়-দায়িত্বভার গ্রহণ করি। পরিবারটি খুবই দরিদ্র ও অসহায়। মানবিক দিক বিবেচনা করে আমি তার পাশে দাড়িয়েছে। রনি সুস্থ হলে পরিবারে স্বস্তি নেমে আসবে।

পত্রিকা একাত্তর/নিয়াজ মাহমুদ জয়

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news