কক্সবাজার থেকে ঢাকায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজের চাকা খুলে পড়ার ঘটনায় তদন্ত ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার
কক্সবাজার থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ড্যাশ-৮ কিউ ৪০০ মডেলের উড়োজাহাজের একটি চাকা বিয়ারিং ফেইলিওরের কারণে খুলে পড়ে গিয়েছিল বলে বিমান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। তবে সঠিক কারণ জানতে তদন্ত কমিটির রিপোর্টের অপেক্ষা করছেন তারা।
সোমবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পক্ষ থেকে প্রকাশিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কানাডার ডি-হেভিল্যান্ড এয়ারক্রাফট কোম্পানির তৈরি উড়োজাহাজটির চাকার বিয়ারিং ত্রুটি থাকায় সংশ্লিষ্ট চাকা বা টায়ার বিচ্যুত হতে পারে, যা এই ঘটনার মূল কারণ বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই প্রস্তুতকারকের সঙ্গে যোগাযোগ করে ঢাকায় কারিগরি টিম পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গত ১৬ মে, যখন বেলা দেড়টার দিকে কক্সবাজার থেকে উড়োজাহাজটি ঢাকা যাওয়ার জন্য উড্ডয়ন শুরু করে। তবে উড্ডয়নের পর মাত্র কিছুক্ষণ পরেই ল্যান্ডিং গিয়ারের পাশের একটি চাকা খুলে পড়ে যায়। ওই ফ্লাইটে ছিলেন ৭১ জন যাত্রী ও ২ জন ক্রু, যার নেতৃত্বে ছিলেন ক্যাপ্টেন জামিল বিল্লাহ। পাইলট ঘটনা বুঝে অবিলম্বে ইমার্জেন্সি ঘোষণা করে ফ্লাইটটি নিরাপদে ঢাকা পৌঁছায়।
খোলা চাকা কক্সবাজার শহরের সমিতি পাড়ায় পাওয়া যায়। বিমান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চাকা খুলে পড়ার ঘটনায় নিরাপত্তা ও তদন্তের জন্য দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি ‘সেফটি ইনভেস্টিগেশন কমিটি’ এবং অন্যটি প্রকৌশল ও ম্যাটেরিয়াল ম্যানেজমেন্ট পরিদপ্তরের তদন্ত কমিটি।
তদন্ত কমিটি তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে বলে জানা গেছে। এর পাশাপাশি উড়োজাহাজটির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রস্তুতকারকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের পর পুনরায় যাত্রী পরিবহনের জন্য ফ্লাইট চালানো হবে।
বিমান কর্তৃপক্ষের বক্তব্য অনুযায়ী, ড্যাশ-৮ কিউ-৪০০ মডেলের এই উড়োজাহাজটির ল্যান্ডিং গিয়ার সিস্টেমে রিডান্ডেন্সি বা ব্যাক-আপ ব্যবস্থা রয়েছে, যার কারণে একটি চাকা বিকল হলেও জরুরি অবস্থায় নিরাপদে অবতরণ সম্ভব। ক্যাপ্টেন জামিল বিল্লাহের প্রশিক্ষণ ও দক্ষতায় এই সংকট যথাযথভাবে মোকাবিলা করা হয়েছে।
উড়োজাহাজটির প্রস্তুতকারক ডি-হেভিল্যান্ডের তথ্য মতে, ২০১৩ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে এই মডেলের ৫৯টি চাকা সম্পর্কিত ঘটনা ঘটেছে। তবে এসব ঘটনায় ফ্লাইট নিরাপত্তা প্রভাবিত হয়নি।
বিমান কর্তৃপক্ষ এই ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা মোকাবিলায় নিয়মিত সিমুলেটর প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পাইলটদের প্রস্তুত করছে এবং ভবিষ্যতে এর পুনরাবৃত্তি রোধে সবরকম ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেছে।