কুরিয়ে পাওয়া নবজাতকে দত্তক নিতে ৩০০ মানুষের আগ্রহ

শেরপুর, বগুড়া প্রতিনিধি

শেরপুর, বগুড়া প্রতিনিধি

১৬ জুলাই, ২০২২, ১ year আগে

কুরিয়ে পাওয়া নবজাতকে দত্তক নিতে ৩০০ মানুষের আগ্রহ

বগুড়ার জলেশ্বরী তলা নামাক এলাকায় বাজার করা ব্যাগে ফেলে রাখা শিশুটিকে দত্তক নিতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষ ভিড় করছেন হাসপাতাল ও পুলিশের কাছে।

আবার অনেকে শিশুটির চিকিৎসা ব্যয় বহনসহ বিভিন্ন উপহার সামগ্রী দিয়ে সহযোগিতা করতে চাচ্ছেন। তবে কারো কাছেই কোন প্রকার সহযোগিতা নিচ্ছেন না বগুড়া সদর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক তাজমিলুর রহমান। তিনি প্রাথমিক অভিভাবক হিসেবে ব্যক্তিগত উদ্যোগে শিশুটির দেখভাল করছেন।

শনিবার (১৬ জুলাই) এতথ্য জানিয়েছেন বগুড়া সদর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক তাজমিলুর রহমান। গত বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকায় পৌরসভা লেনের একটি গলিতে কে বা কারা বাজার করা ব্যাগে আনুমানিক তিন দিন বয়সী কন্যা শিশু সন্তান ফেলে রেখে যায়।

শিশুটির পড়নে নতুন পোশাক এবং সাথে ফিডার ভর্তি দুধ ছিল। এ থেকে পুলিশের ধারনা কোন ভাল পরিবার শিশুটিকে এভাবে ফেলে রেখে যায়। সদর ফাঁড়ি পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করার পর হাসপাতালে ভর্তি করে দেন। সেদিন থেকেই শিশুটি শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নবজাতক ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

পুলিশ পরিদর্শক তাজমিলুর রহমান বলেন, শিশু উদ্ধারের সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এরপর থেকে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ শিশুটিকে দত্তক নেওয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে ফোন করছেন, আবার অনেকে সরাসরি যোগাযোগ করছেন। তিনি বলেন, শুক্রবার (১৫ জুলাই) বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪৯ জন ফোন করে আগ্রহ দেখিয়েছেন শিশুটিকে দত্তক নেওয়ার জন্য।

শনিবার (১৬ জুলাই) পর্যন্ত দত্তক নিতে আগ্রহীর সংখ্যা ৩০০ জন ছাড়িয়েছে। আগ্রহীদের মধ্যে বেশ কয়েকজন চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সেনা কর্মকর্তা, পুলিশ কর্মকর্তা, আনসার সদস্য, নার্স, সাংবাদিক, ধর্নাঢ্য ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে মুদি দোকানিও রয়েছেন।

পুলিশ পরিদর্শক তাজমিলুর রহমান বলেন, দেখতে ফুটফুটে সুন্দর শিশুটিকে দেখার জন্য হাসপাতালেও ভিড় জমাচ্ছেন অনেকে। সেখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ও নার্সগণ আন্তরিকতার সাথে শিশুটিকে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। হাসপাতালে কর্মরত একজন নার্স বলেন, এই ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন এমন প্রসুতিদের অনেকেই নিজের সন্তানের পাশাপাশি এই শিশুটিকে বুকের দুধ পান করানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু শিশুটি কারো বুকের দুধ পান করছে না।

চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী শনিবার (১৬ জুলাই) সকাল থেকে শিশুটিকে বাজার থেকে কেনা গুড়ো দুধ পান করানো হচ্ছে। শিশুটি শুক্রবার পর্যন্ত অসুস্থ থাকলেও এখন স্বাভাবিক রয়েছে। পুলিশ পরিদর্শক তাজমিলুর রহমান বলেন, শিশুটিকে সুস্থ করে তোলা প্রথম দায়িত্ব। দত্তক দেওয়ার বিষয়টি আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হবে।

পত্রিকাএকাত্তর /নুর আলম

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news