মুক্তিযোদ্ধাদের স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান বর্জন

উপজেলা প্রতিনিধি, ডোমার

উপজেলা প্রতিনিধি, ডোমার

২৬ মার্চ, ২০২২, ২ years আগে

মুক্তিযোদ্ধাদের স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান বর্জন

নীলফামারীর ডোমারে ‘মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস–২০২২’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত জাতীয় পতাকা উত্তোলন, প্যারেড ও কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কে রাজাকারের সন্তান আখ্যা দিয়ে অনুষ্ঠান বর্জন করেছেন মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও তাদের পরিবারবর্গ।

শনিবার (২৬শে মার্চ) সকাল সাড়ে ৮টায় উপজেলার শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম মাঠে উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দ্বারা জাতীয় পতাকা উত্তোলনের প্রতিবাদে অনুষ্ঠান বর্জন করেছেন মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ। এসময় সাময়িক বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়।

এবিষয়ে ডোমার উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নুরননবী বলেন, যুদ্ধাপরাধীর সন্তানের দ্বারা শহীদদের রক্ত আর মা-বোনদের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে লাল-সবুজের পতাকা উত্তোলন আমরা মেনে নিব না। আমরা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে দাবী জানিয়েছি রাজাকারপুত্র তোফায়েলকে অপসারণ করতে হবে।

সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. গোলাম রব্বানী জানান, ত্রিশ লাখ শহীদদের রক্তে রঞ্জিত পতাকা যুদ্ধাপরাধীর সন্তান উত্তোলন করবে, এটা দুঃখজনক। সে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে। তাকে দ্রুত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক পদ থেকে অপসারণ করা হোক।

বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জসিয়ার রহমান বলেন, স্বাধীনতাবিরোধীর সন্তানের পতাকা উত্তোলন নিয়ে মাননীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরননবী কথা বলার সময় ‘আপনি কে?’ বলার মতো স্পর্ধা ঐ রাজাকার পুত্রের কিভাবে হলো? মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আজ এদেশ স্বাধীন হয়েছে, আর স্বাধীনতা দিবসে মুক্তিযোদ্ধাদের এমন অপমানের তীব্র নিন্দা জানাই।

বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আসাদুজ্জামান চয়ন বলেন, আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি ও উপজেলা চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ একজন যুদ্ধাপরাধীর সন্তান। তার বাবা, নানা ও দাদা রাজাকার ছিলেন। তার হাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীন বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকা সুরক্ষিত নয়। আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরা স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান বর্জন করলাম। এছাড়া তার দ্বারা মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননার প্রতিবাদে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্সে মুক্তিযুদ্ধ স্বপক্ষের শক্তি অবস্থান গ্রহণ করবে। পরবর্তীতে আরও কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।

ডোমার উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের আহ্বায়ক ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মো. আল-আমিন রহমান জানান, উপজেলা চেয়ারম্যানের পরিবারের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করার অভিযোগ রয়েছে। তিনি সবসময়ই আমাদের মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের অপমান করে আসছে। মুক্তিযুদ্ধ স্বপক্ষের শক্তিকে সবসময় তিনি প্রতিহত করার অপচেষ্টা করেন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমাদের আকুল আবেদন, তার চেয়ারম্যান পদ ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব পর্যায় থেকে অপসারণ করা হোক।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন—বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জব্বার কানু, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আমিনুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. হামিদুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রবিউল হক রব্বি, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জসিয়ার রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হুমায়ুন কবির রাকিব, তাজিমুল ইসলাম শিমু প্রমূখ সহ অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও তাদের পরিবারবর্গ।

পত্রিকা একাত্তর/রিশাদ

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news