বটিয়াঘাটা ভূমি অফিসের চলছে ডিজিটাল স্টাইলে ঘুষ বাণিজ্য

উপজেলা প্রতিনিধি, বটিয়াঘাটা

উপজেলা প্রতিনিধি, বটিয়াঘাটা

২৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ২ years আগে

বটিয়াঘাটা ভূমি অফিসের চলছে ডিজিটাল স্টাইলে ঘুষ বাণিজ্য

খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলা ভূমি অফিসে চলছে ডিজিটাল স্টাইলে ঘুষ বাণিজ্য। অভিযোগ উঠেছে,নামপত্তন দাখিল করার নামে হয়রানিতে পড়ছে সাধারণ জমির মালিকরা। ভূমি অফিসে নামপত্তন কেসে সরকারি খরচ হয় ১১৫০ টাকা। কিন্তু সেখানে দেখা যায়,ভূমি অফিসে নামপত্তন করতে আশা ব্যক্তিদের কাছ থেকে ভূমি অফিসের কতিপয় কিছু দালাল চক্র হাতিয়ে নেয় ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। আবার কখনো কখনো তার চেয়ে বেশিও দিতে হয় তাদেরকে। খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়,প্রথমে নামপত্তন কেস দাখিল করতে ৫০০ টাকা অনলাইন খরচ। তারপর কেস গ্রহণ করতে হলে কেস প্রতি প্রথম ১০০, ২০০ বা কখনো কখনো ৩০০ টাকা পযর্ন্ত দিতে হয় বটিয়াঘাটা ভূমি অফিসের দেলোয়ারকে। এরপর উপজেলা জলমা ইউনিয়ন তাফসীল অফিসের নায়েব কৃষ্ণপদ দাশকে কেস প্রতি দিতে হয় ৫০০ টাকা তবে জমির কাগজপত্রের বিভিন্ন সমস্যা দেখিয়ে হাতিয়ে নেয় ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা পযর্ন্ত। তার পর কেস পরবর্তীতে ভূমি অফিসে পাঠানোর জন্য উক্ত নায়েব অফিসের সহকারী কল্লোলকে দিতে হয় ১০০ থেকে ২০০টাকা। উপরের সব তদবির যখন শেষ হয়,তখন দ্বিতীয় স্টেপ। শুরু হয় ভূমি অফিসের লীলা খেলা। চলতে থাকে কেস ফাইল এ টেবিল ও টেবিল। এরই মধ্যে চলে হাজার হাজার টাকার ছড়াছড়ি। যে যার মত টাকা ধরতে ব্যস্ত থাকে অফিসের কর্তারা। উক্ত কেস সহকারী কমিশনার ভূমির আইডিতে আসে। আসার পর আবেদনকারীরা তার সাথে যোগাযোগ করলে কেস ফাইলের উপর লিখে দেওয়া হয় কেজিও/সার্ভেয়ারের সাথে যোগাযোগ করুন। এই বলে কেস ফাইলের উপর স্বাক্ষর করে দেন ভূমি কমিশনার মোঃ আব্দুল হাই সিদ্দিকী। তার পর থেকে শুরু হয় অর্থ লেনদেন ও দেন দরবার। ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার সাকিরুল ও কানুনগো মাহমুদ উক্ত কেস ফাইল দেখে আবেদনকারীর সাথে যোগাযোগ শুরু করেন। তাদের সাথে অর্থনৈতিক চুক্তিবদ্ধ হয়। যে যত বেশি টাকা দিবে তার ফাইল ততো দ্রুত ছেড়ে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। কাগজপত্র সঠিক থাকলে আবেদন কারীদের দিতে হয় ২/৩ হাজার টাকা। আর কাগজপত্র যদি ত্রুটিপূর্ণ থাকে তাহলে চুক্তির বিনিময় তারা উক্ত কেস ফাইনাল করেন। এভাবে চলে ভুমি অফিসে নামপত্তনের নামে অর্থবানিজ‍্য।

এছাড়া প্রতিটা কেস বাবদ নোটিশ জারির জন্য প্রসেস সার্ভেয়ার জহিরকে দিতে হয় তিন থেকে পাঁচশত টাকা। তারপর নোটিশটি স্ক্যানিং করে কম্পিউটারে আপডেট করতে জন্মজয় কে দিতে হয় ১০০টাকা।

আবেদনকারীর নামপত্তন যখন কমপ্লিট হয়, তখন ফাইনাল হওয়ার পর সরকারি ডিসিআর মূল্য বাবদ ভূমি অফিসে ১১৫০ টাকা দিতে হয়। শুধু এই টাকাটাই সরকার পায়।

এখানেই শেষ নয়। এবার শুরু হয়, ওই ফাইল দেওয়ার নামে দুই থেকে তিন হাজার টাকা অর্থ-বাণিজ্য। ভূমি অফিসের জন্মজয়, দেলোয়ার ও ফারুককে কেস প্রতি ১৫০০ টাকা না দিলে ফাইল কেসের ডিসিআর দেওয়া হয় না।

ভুক্তভোগী খুলনার আনোয়ার হোসেন জানান,ভুমি অফিসের সকলকে টাকা না দিলে আশা যাওয়া করতে করতে পায়ের চটির তলা শেষ হবে,কিন্তু মিউটেশন কেস বা নামপত্তন কেস পাবেন না। তাই বাধ‍্য হয়ে উক্ত টাকা দিতে হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি জানান, সুচতুর সহকারী কমিশনার ভুমি আঃ হাই সিদ্দিকী তিনি কানুন গো এবং সার্ভেয়ারের মাধ্যমে টাকা গ্রহন করেন।

ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার সাকিরুল ইসলাম ও অফিস সহকারি দেলোয়ারের নিকট বিষয়টি জানতে চাইলে তারা বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমরা কোন ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা পয়সা নেইনা।

এ বিষয়ে বটিয়াঘাটা উপজেলা ভূমি কমিশনার আব্দুল হাই সিদ্দিকী এর মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন,আমি মিটিংয়ে আছি। পরে কলদেন।

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news