নাম মোঃ বাহাদুর খান কিন্তু নিজেকে মানুষের কাছে পরিচয় দেয় আমি বীর বাহাদুর। নিজের নামের সামনে বীর উপাধি দিয়ে এলাকায় আতঙ্ক পরিবেশ সৃষ্টি করেই ক্ষান্ত হননি এই বাহাদুর খান। তালতলী উপজেলার কড়ইবাড়িয়া বাজারের পূর্ব পাশে ঝাড়াখালি গ্রাম সহ আশেপাশের এলাকায় বেপরোয়াভাবে মানুষকে কুপিয়ে, লাঠি দিয়ে হাতে মেরে ইয়াবার ব্যবসা করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছেন এই মাদকাসক্ত বাহাদুর। বাবা আমির খান নিজেও ছেলের এই বাহাদুরীতে খুশি হয়ে মানুষের কাছে বলে থাকেন আমার ছেলের নামের সামনে বীর উপাধি দেয়া আছে সে যা করবে তাই সকলের মেনে নিতে হবে।
এলাকার মানুষের কাছে জানা গেছে ইয়াবা ব্যবসায়ী ও সেবনকারী এই বীর বাহাদুর বিএনপি মনোভাবপন্ন। অনেকের ধারণা বীর বাহাদুরের সাথে পুলিশের একটি সখ্যতা রয়েছে সেজন্যই বীরদর্পে অপরাধ করে এলাকার মানুষকে দাবিয়ে রেখেছে এই বাহাদুর খান।
গত ২৫.১২.২১ ডিসেম্বর সন্ধ্যার ঠিক আগ মুহূর্তে অত্র এলাকার নিরীহ কবির(৪০) পিতা বজলুর রহমান কে পিছন থেকে অতর্কিত হামলা চালিয়ে খুনের উদ্দেশ্যে মাথার উপরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ দেয় এবং এলোপাথাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে কবির আহত হয় প্রথমে বরগুনা সদর হাসপাতালে জরুরী বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়ার পর ডাক্তার কবিরের অবস্থার অবনতি দেখলে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেলে রেফার করেন। বর্তমানে কবির মুমূর্ষ অবস্থায় বরিশাল শেরেবাংলায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বাহাদুরের ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারধরের এটাই প্রথম নয় এলাকার মসজিদের ইমাম মাওলানা জাকির হোসেন বলেন, বীর বাহাদুর মানুষকে সব সময় বেপরোয়া ভাবে মারধর করে দুই বছর আগে নিজের আপন চাচা চাচীকে বেধড়ক মারধর করেছে।
বাহাদুরের চাচি শামসুন্নাহার (৫০) বলেন আমাকে আমার মেয়ের বিবাহ উপলক্ষে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে শাবল দিয়ে মারধর করেছে আমি এর কোন বিচার পাইনি বাহাদুর অত্যন্ত খারাপ মানুষ সে যাকে পায় মারধর করে এটাই তার পেশা। প্রতিবেশী রেজাউল মিয়া (৩০) কে সামান্য বিষয় নিয়ে বেধড়ক মারধর করেছে রেজাউল মিয়া বলেন, আমি বিচারের জন্য থানা পুলিশ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের কাছে গিয়েছিলাম কেহই এই বীর বাহাদুরের বিচার করতে সাহস পায় না। সে অত্যন্ত বেপরোয়া কারো কথা সে মানে না। গত এক বছর আগে নাসির (৩১) নামক একজনকে পিছন থেকে এসে মারধর করেছে কেহই বীর বাহাদুরের কাছে মারধরের কারণ জিজ্ঞাসা করতেও সাহস পায়নি।
মোঃ সোহাগ বলেন নির্বাচনের সময়ে আমরা ভোট কেন্দ্রের আশপাশেই ছিলাম বাহাদুর হঠাৎ পুলিশের গায়ে ঢিল মারে। এতে নির্বাচন পরিস্থিতির অবনতি হয়েছিল। ছোট্টন (৩২) হাওলাদার নামের একজনের তিনটি গরু কুপিয়েছে। রতন মোল্লা (৭২) পিতা আসর মোল্লা বলেন এই বীর বাহাদুর অত্যন্ত খারাপ প্রকৃতির লোক কাউকেই সে পরোয়া করে না। রাজ্জাক মোল্লা(৭৫) নামের একজনকে শুধু শুধু মারধর করেছে কেহই তার ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পায় না সে ইয়াবা ব্যবসা করে একবার ইয়াবা নিয়ে পুলিশের কাছে গ্রেফতার হয়েছিল হাজত কেটেছে। মসজিদের ইমাম সাহেব বলেন বাহাদুর এমন বেপরোয়া প্রকৃতির লোক ওর এই অন্যায়ের বিচার কোথাও আমরা পাইনি ওর বিচার করতে কেহই সাহস পায় না, আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর বিচার চাই আমরা যেন আমাদের এলাকায় শান্তিতে বসবাস করতে পারি।
কড়ইবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জনাব নূর উদ্দিন মাস্টার বলেন উভয়ের মধ্যে মারপিট হয়েছে যার কাছে যা ছিল তা দিয়েই মারামারি করেছে।বাহাদুরের কাছে দা ছিল তা দিয়ে কোপ দিয়েছে। বিষয়টি আমার কাছে অভিযোগ আকারে আসলে সমাধানের ব্যবস্থা করব।
তালতলী থানায় যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, বাহাদুর মূলত একজন মাদক সেবী তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে, অপরাধী যত শক্তিশালীই হোক তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।