শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছেন অধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ সানাউল্লাহ

চট্টগ্রাম মহানগর প্রতিনিধি

২৭ জুন, ২০২২, ১ year আগে

শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছেন অধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ সানাউল্লাহ

চট্টগ্রামের যে সকল বরেণ্য শিক্ষাবিদ শিক্ষা, সমাজসেবা, মানবসেবা ও পরিবেশ গবেষণায় অসাধারণ অবদান রাখার মাধ্যমে বাংলাদেশের গুণী ও আলোকিত সন্তানদের মাঝে বিশিষ্ট স্থান দখল করে আছেন তাঁদের মধ্যে অধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ সানাউল্লাহ্ অন্যতম।

১৯৭৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার ট্রেটা ইউনিয়নের এক সদ্ধান্ত মুসলিম পরিবারে তাঁর জন্ম। বিশিষ্ট আধ্যাত্মিক সাধক ও আলেমে দ্বীন মওলানা হাছন শরীফ তাঁর পিতা এবং মায়মুনা বেগম ছিলেন তাঁর মাতা।

শিশুকাল থেকে তিনি বেড়ে উঠেছেন চট্টগ্রামের চক্রবস্তারের বাকলিয়ায়। এখান থেকেই সাফল্যের সাথে তিনি প্রাথমিক মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক লেখাপড়া সম্পন্ন করেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হতে বি.কম (অনার্স), এম.কম (হিসাব বিজ্ঞান), এম (অর্থ বিজ্ঞান) এবং সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, চট্টগ্রাম থেকে বি.এড ও এমএড ডিগ্রি লাভ করেন।

এছাড়াও, টামস অনুমোদিত (নিট)) হতে ডিপ্লোমা ইন কম্পিউটার সায়েন্স এবং যোগ ফাউন্ডেশন হতে গুরুজী শহীদ আল বোখারী কর্তৃক ই.এস.পি. গ্রাজুয়েশন মাস্টার্স ডিগ্রী লাভ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন ভার্জিনিয়া থেকে "ইউরোপীয় ইউনিয়নের নয়া কৌশল ও মধ্য এশিয়ার উপর এর প্রভাব- একটি তুলনামূলক বিশ্লেষণ" বিষয়ে তিনি পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

ছাত্র থাকাকালীন মেরিট একাডেমি নামে একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা শুরু করেন । যেখানে ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের অসংখ্য শিক্ষার্থীকে পাঠদান করানো হতো। সে সময়ে তাঁর পাঠদানের সুনাম চট্টগ্রাম এবং এর বাইরে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল। প্রতিদিন অগণিত শিক্ষার্থী তাঁর কাছে পড়তে আসতো অথচ দাবি কিংবা চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে কখনো তিনি কোন শিক্ষার্থী থেকে টাকা আদায় করেন নি।

এমনকি মেরন সান স্কুল এন্ড কলেজ প্রতিষ্ঠার পর থেকে অন্যাবধি বেতন বকেয়ার অভাবে কোন শিক্ষার্থী টাকার সমস্যার কারনে লেখাপড়া করতে পারে নি কিংবা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি এমন কোন নজির নেই। বস্তুত, শিক্ষা ও মানুষকে ভালোবেসেই তিনি তাঁর আদর্শ শিক্ষা জীবনে কাজ শুরু করেছিলেন।

শিক্ষা-দীক্ষায় ঢাকার তুলনায় চট্রগ্রাম তখন অনেক বেশি পিছিয়ে ছিল এবং বাকলিয়া ছিল অত্যন্ত পশ্চাদপদ একটি এলাকা। পুরো চট্টগ্রামেই তখন কয়েকটি মাত্র সরকারি ও এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়া আর কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের জন্য ছিল না। এর ফলশ্রুতিতে শিক্ষার্থীদের এক বিশাল অংশ কোথাও ঠাঁই না পেয়ে অসময়ে লেখাপড়া বন্ধ করে নিতে বাধ্য হতো।

এমনই এক পরিস্থিতিতে বাকলিয়া তথা চট্টগ্রামে শিক্ষার উপযুক্ত ও পর্যান্ত পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে এবং চট্টগ্রামের শিক্ষার কাঙ্ক্ষিত মানোন্নয়নের জন্য, সর্বোপরি, জাতীয় শিক্ষার ক্ষেত্রে যথার্থ অবদান রাখার জন্য জাতীয় শিক্ষানীতির শ্লোগান 'সবার জন্য শিক্ষা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেন এবং ১৯৯৮ সালে প্রি নার্সারি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সম্পূর্ণ ক্লাসনির্ভর একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে মেরন সান স্কুল এন্ড কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন যা চট্টগ্রামের অন্যতম সাড়া জাগানো মডেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে সুধীজনদের কাছে সমাদৃত হয়েছে।

তিনি প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োজিত আছেন এবং বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানের চকবাজার ও চান্দগাঁও ক্যাম্পাস নামে আধুনিক শিক্ষার উপযুক্ত দুটো ক্যাম্পাস চালু রয়েছে যেখানে রয়েছে প্রচুর শিক্ষার্থী। বর্তমানে মেরন সান স্কুল এন্ড কলেজ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক স্বীকৃত ও অনুমোদিত একটি জনপ্রিয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

একই সাথে নগরীর প্রাণকেন্দ্র বহদ্দারহাট খাজা রোড নতুন চান্দগাঁও থানার পাশে ক্লাসনির্ভর শিক্ষা ও আধুনিক শিক্ষায় মানসম্পন্ন মেরিট বাংলাদেশ স্কুল এন্ড কলেজ নামের আরো একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন তিনি এবং এটিও সরকার কর্তৃক স্বীকৃত ও অনুমোদিত। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের ট্রেজারার দায়িত্ব পালন করছেন। পরিবেশ বিপর্যয় রোধে জনসচেতনতা তৈরিতে পরিবেশবাদী সংগঠন সবুজ আন্দোলন কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের সহ- শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

অধ্যক্ষ ডঃ মোঃ সানাউল্লাহ তার অনুভূতিতে বলেন, আমি প্রত্যন্ত এলাকায় জন্মগ্রহণ করে দেখেছি সাধারণ শিক্ষার্থীরা কি পরিমান কষ্ট করে। আমার স্বপ্ন কক্সবাজারে একটি পূর্ণাঙ্গ ক্যাম্পাস করে তোলা। যার মাধ্যমে চট্টগ্রাম অঞ্চলের পিছিয়ে পড়া মানুষের জীবনযাত্রার মানের পরিবর্তন করা যায়। আমি প্রত্যেকের সহযোগিতা কামনা করছি।

পত্রিকাএকাত্তর /ইসমাইল ইমন

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news