ঈদের পূর্বে জমে উঠেছে রহনপুর ঈদ বাজার: ব্যবসায়ীরা বেশ খুশি

স্টাফ রিপোর্টার, গোমস্তাপুর

২৯ এপ্রিল, ২০২২, ২ years আগে

ঈদের পূর্বে জমে উঠেছে রহনপুর ঈদ বাজার: ব্যবসায়ীরা বেশ খুশি

আসন্ন ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুরে জমে উঠেছে ঈদের বাজার। বিভিন্ন কাপড়ের দোকান, জুতা স্যান্ডেলের দোকান, কসমেটিকসের দোকান ও খাবারের দোকানে প্রচুর ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দীর্ঘ এক মাসের প্রতীক্ষা শেষে ঈদের আনন্দকে ভাগাভাগি করতে পরিবারের সদস্যদের মুখে হাঁসি ফুটিয়ে তোলার জন্য অভিভাবকগণ প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

তারই অংশ হিসেবে প্রতিদিন সকালথেকে গভীর রাত অবধি রহনপুর বড়বাজার, স্টেশন বাজার, কলেজ মোড় সহ গোমস্তাপুর উপজেলার বিভিন্ন মার্কেটগুলোতে তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে মানুষজন ভিড় করছে।

স্টেশন বাজারের গার্মেন্টস ব্যবসায়ী বিজয় চক্রবর্তী ও অহিদুজ্জামান, জুতা ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম ও নাদিম আলী জানান, সকাল থেকে গভীর রাত অবধি দোকান খুলে রাখতে হচ্ছে। দূরদূরান্ত থেকে মানুষজন ঈদের বাজার করতে রহনপুর স্টেশন বাজারে ছুটে আসছেন।

ব্যবসায়ীরা বলেন, এবারের পণ্যমূল্য ঊর্ধ্বগতি হওয়ায় গ্রাহকদের সাথে বিক্রিত পণ্যের দাম নিয়ে বেশ হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে সব আশঙ্কা দূর করে ঈদ পর্যন্ত ভালো ব্যবসা করতে পারব বলে আমরা আশা করছি।

রহনপুর বড় বাজার কসমেটিক ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম জানান, এ দোকানে গ্রাহকের মধ্যে মেয়েদের সংখ্যাই বেশি। গ্রাহকগণ তাদের পছন্দমতো পন্য ক্রয় করতে সকাল থেকে রাত্রি ১০টা পর্যন্ত তাদের পছন্দের জিনিস কিনতে দোকানে ভিড় করছেন। বেচাকেনা আল্লাহর রহমতে ভালই হচ্ছে।

জিনিসপত্রের দাম ক্রয় ক্ষমতার মধ্যেই রয়েছে। রহনপুর কলেজ মোড়ের জুতা ব্যবসায়ী বাক্কার আলী জানান, ঈদে পছন্দসই জুতা কিনার জন্য গ্রাহকগণ ভিড় জমাচ্ছেন। দাম আগের তুলনায় খুব বেশি বৃদ্ধি না হওয়ায় গ্রাহকগণ স্বাচ্ছন্দে জুতা সেন্ডেল ক্রয় করে বাড়ি নিয়ে যেতে পারছেন। ইনশাল্লাহ করোনার বছর চাইতে এবারের ব্যবসা ভালো হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। পবিত্র রমজানে রোজাদারদের কাছে আকর্ষণীয় হলো ইফতার।

বাহারি রঙের ইফতার সাজিয়ে রহনপুরের বিভিন্ন হোটেলগুলো ভালোই ব্যবসা করছে। এছাড়াও বিভিন্ন মোড়ে রাস্তার দুই ধারে ভ্রাম্যমান দোকান করে জিলাপি, পিয়াজু, বেগুনি, ছোলাসহ তরমুজ, আপেল, কমলা, পেয়ারা, কলা সহ বিভিন্ন ইফতার সামগ্রী বিক্রি করছে ভ্রাম্যমান ব্যবসায়ীগণরা। একেতো ঈদের বাজার তারপরে ইফতারের পূর্ব মূহুর্তে রোজাদারদের ইফতার সামগ্রী ক্রয় সবমিলিয়ে অসহনীয় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে রহনপুরের বিভিন্ন জায়গায়।

রহনপুরের হোটেল ব্যবসায়ী মহানন্দা মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিক আব্বাস আলী জানান, পবিত্র রমজানে ইফতার সামগ্রী বেশ ভালোই কেনাবেচা হচ্ছে। ঈদ উপলক্ষে মিষ্টি ক্রয় করতে ইতিমধ্যে গ্রাহকগণ দোকানে ছুটে আসছেন। ইনশাল্লাহ ব্যবসা ভালোই হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন বিভিন্ন টেইলার্সের দর্জিরা।

আমাদের ভাষায় এখানে যাদেরকে খলিফা বলা হয়। খলিফাগণ ছেলেদের প্যান্টশার্ট, পাঞ্জাবি পায়জামা, মেয়েদের সালোয়ার কামিজ, মেক্সি সহ বিভিন্ন কাপড় প্রস্তুত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সকাল ৮টা থেকে শুরু করে রাত ১টা পর্যন্ত তারা নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। ঈদের পূর্বদিন পর্যন্ত তাদের এ ব্যস্ততা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। রহনপুর স্টেশন বাজারে ওরিয়েন্ট টেইলার্সের মালিক বেলাল উদ্দিন জানান,

তৈরি পোশাকের যুগেও গ্রাহকগণ সেলাই করা পোশাকের প্রতি তাদের আগ্রহ ও আস্থা রাখছেন। তাই দোকানের ৮-১০ জন কর্মচারীকে নিয়ে দিনরাত পরিশ্রম করতে হচ্ছে। ঈদের সময় যেন গ্রাহকদের হাতে তাদের কাক্সিক্ষত পোশাকটি তুলে দিতে পারে এ আশায়। অপরদিকে ঈদকে সামনে রেখে মাংস এবং মসলার বাজার ঊর্ধ্বমুখী।

খাসির মাংস কেজি প্রতি ৮৫০ টাকা, গরুর মাংস ৬৫০ টাকা, দেশি মুরগি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৭০ থেকে ৩০০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। তাছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজির বাজার ঊর্ধ্বমুখী ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গ্রাহকগণ তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে হিমশিম খাচ্ছে বলে অনেকেই ধারণা করছেন।

পত্রিকা একাত্তর/ ইয়াহিয়া খান রুবেল

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news