খুলনা রেলওয়ে স্টেষন। সবুজ ঘাস চিরে একে বেকে গেছে রেল লাইন। দুই পাশে সারি সারি ঝুপড়ি ঘর। চায়ের দোকানে বিভিন্ন বয়সি মানুষের জমজমাট আড্ডা। ভেতরে টেলিভিশনে চলছে বাংলা সিনেমা। উচ্চ শব্দে শোনা যাচ্ছে সিনেমার ডায়ালগ। অদূরে কোথাও বসেছে তাসের আসর। সেখান থেকে উপরের দিকে কুণ্ডলী পাকিয়ে উঠে যাচ্ছে সিগারেটের ধোঁয়া।
সব কিছু ছাপিয়ে সকলের নজর একদল শিশুর দিকে। তারা গোল হয়ে বসে মেতে উঠেছে সংস্কৃতি চর্চায়। সেখানে নেই কোনো বাদ্য, নেই কোনো আড়ম্বর। তারপরও মনোযোগে নেই এতটুকু ঘাটতি। তাদের মধ্যমণি হয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তরুন সংবাদকর্মি এম সাইফুল ইসলাম। পড়ন্ত বিকেলে এমন দৃশ্য দেখা গেল খুলনা রেল স্টেশনে।
এম সাইফুল ইসলাম জানান, খুলনা রেল লাইন এলাকায় সাধারণত ছিন্নমূল মানুষ ও পথশিশুদের বাস। তাদের খাদ্য, অন্য, বস্ত্র, বাসস্থান বা পর্যাপ্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। অথচ রয়েছে অফুরন্ত প্রতিভা। বিশেষ করে প্রতিটি শিশুই অসাধারণ প্রতিভা নিয়ে জন্মায়। পরিবেশের কারণে অনেক সময় প্রতিভার বিকাশ ঘটে না। তারা ঝরে পরে অযত্ন, অবহেলায়।
এ ধরনের শিশুদের একটু ভিন্ন পরিবেশ দিতে পারলে তারা ভালো করবেই। শিশুদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশে সবাই মিলে ‘স্বপ্নপূরী’ নামে একটি কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। এর আওতায় প্রথমত শিশুদের গান, আবৃত্তি ও নাটকের মাধ্যমে তাদের আকৃষ্ট করা হয়। পর্যায়ক্রমে তাদের পাঠ্যবইয়ের জ্ঞান দান করা হবে। প্রতিদিন যুক্ত হচ্ছে নতুন শিশু।
তাদের দেশিয় সংস্কৃতি চর্চায় উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এখান থেকে শিখে অনেক শিশু বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বেশ ভালো করেছেন। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘স্বপ্নপূরী’র সভাপতি এম সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘২০১৯ সালে আমরা ছয়জন মিলে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কাজটি শুরু করেছি। আপাতত শিশুদের উন্মুক্ত আকাশের নিচে পাঠদান করা হচ্ছে।
পত্রিকা একাত্তর / আক্তারুল ইসলাম