ঈদুল আযহার আগেই মাওলানা মামুনুল হক সহ সকল রাজবন্দী ও ধর্মীয় নেতাদের মুক্তি দাও : নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ

নিজস্ব প্রতিনিধি

নিজস্ব প্রতিনিধি

৪ জুলাই, ২০২২, ১ year আগে

ঈদুল আযহার আগেই মাওলানা মামুনুল হক সহ সকল রাজবন্দী ও ধর্মীয় নেতাদের মুক্তি দাও : নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ

কারাবন্দী মাওলানা মামুনুল হক সহ সকল রাজবন্দী ও ধর্মীয় নেতাদের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ।

আজ ৩ জুলাই (রোববার) জাতীয় প্রেসক্লাবে গণ মতামত কেন্দ্র’র উদ্যোগে ‘হয়রানীমূলক মামলায় রাজবন্দী ও ধর্মীয় নেতার দীর্ঘ কারাবাস : নাগরিক সমাজের উদ্বেগ’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, গত বছর মোদীর আগমনের বিরোধীতা করে সকলেই প্রতিবাদ করেছে, ছাত্র সমাজ প্রতিবাদ করেছে, আমরাও প্রতিবাদ করেছি, কিন্তু একটি ছুতায় সরকার আলেমদেরকে গ্রেফতার করে বন্দী করে রেখেছে। তাদেরকে জামিন দেয়া হচ্ছে না। এটা মানা যায় না। সকলেরই জামিন পাওয়ার অধিকার রয়েছে, আলেমদেরও জামিন পাওয়ার অধিকার রয়েছে। মাওলানা মামুনুল হককে তার পরিবারের সাথে সাক্ষাতের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না, এটা খুবই অমানবিক।

সভায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, মামুনুল হক সহ সকল রাজবন্দী ও ধর্মীয় নেতাদের দ্রুত মুক্তি দাবি করেন।

সভায় সভাপতির বক্তৃতায় মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, আমরা ছাত্রদের মুক্তির জন্য ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী’র নেতৃত্বে রাজপথে আন্দোলন করেছি, তিনি হুইলচেয়ারে বসে আন্দোলনে শরীক হয়েছিলেন, আবারও তার নেতৃত্বে ধর্মীয় নেতাদের মুি্ক্তর জন্য রাজপথে আন্দোলনে নেমে আসব।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সংসদে মাওলানা মামুনুল হককে জড়িয়ে যে জঘণ্য বক্তব্য দেয়া হয়েছে, এটা ইতরামী ছাড়া কিছুই নয়। আমি রাগঢাক ছাড়াই বলতে চাই, মামুনুল হকসহ আলেমদের নিঃশর্ত মুক্তি চাই। এর জন্য আমার দলেরও যা করণীয় তাই করতে প্রস্তুত।

তিনি বলেন, হেফাজতের নেতারা যখন শেখ হাসিনাকে আগামী ২০০ বছর ক্ষমতায় থাকার অধিকার দেয় তখন আমার আপত্তি জাগে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন দিনের ভোট রাতে করেন, জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নেন তখন তার তার ক্ষমতায় থাকার অধিকার কিভাবে পায়?

ডাকসু’র সাবেক ভিপি নূরুল হক নূর বলেন, মাওলানা মামুনুল হকসহ ধর্মীয় ও রাজবন্দীদের গ্রেফতারে আমি উদ্বিগ্ন, নাগরিক সমাজ উদ্বিগ্ন, দেশের মানুষ উদ্বিগ্ন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মাওলানা মামুনুল হককে গ্রেফতারের স্ক্রিপ্ট যেভাবে সাজিয়েছেন, এটা নাটকের স্ক্রিপ্টকেও হার মানায়। তিনি প্রথমে মামুনুল হককে রিসোর্টের ঘটনার অবতারণা করেছেন, তারপর তার স্ত্রীকে দিয়ে ধর্ষণের মামলা করিয়েছেন, তারপর তাকে নিয়ে সংসদে বক্তব্য দিয়েছেন, এরপর তাকে গ্রেফতার করেছেন। এটা একটা ন্যাক্কারজনক ঘটনা। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

তিনি আরো বলেন, মোদি বিরোধী আন্দোলন আমরা সবাই করেছি, ছাত্র সমাজ করেছে, আলেম সমাজ করেছে। কিন্তু সরকার গ্রেফতার করেছে আলেম সমাজকে। কারণ আলেম সমাজকে কোণঠাসা করার জন্য সরকারের বড় একটা পরিকল্পনা ছিল সেটা বাস্তবায়ন করেছে এই মোদী বিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। কাজেই আলেমদের মুক্তির জন্য নতজানু হলে চলবে না বরং আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়েই আলেমদেরকে মুক্ত করতে হবে। আমি সরকারকে বলব, ঈদুল আযহার আগেই মাওলানা মামুনুল হকসহ রাজবন্দী ও ধর্মীয় নেতাদের মুক্তি দিন। অন্যথায় সরকারের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি এম আব্দুল্লাহ বলেন, মাওলানা মামুনুল হককে মোদী বিরোধী আন্দোলনের কারণেই কারাবন্দী করা হয়েছে। কাজেই তিনি আছেন দিল্লির কারাগারে। আমাদেরকে এই দিল্লির কাবাগার ভেঙে তাকে মুক্ত করে আনতে হবে।

গণ মতামত কেন্দ্রের সমন্বয়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দীন বলেন, মোদী বিরোধী আন্দোলনে গ্রেফতার হওয়া মাওলানা মামুনুল হক সহ আলেম—ওলামাগণ বিনা বিচারে কারা নির্যাতন ভোগ করছে যা জাতিসংঘের সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণা পরিপন্থি। মাওলানা মামুনুল হকের শিশু সন্তান ও পরিবার ১৫ মাসে তার সাথে দেখা করতে পারেনি। যা হিটলারের কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পের ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন, এবি পার্টির সদস্যসচিব মঞ্জুরুল হক মঞ্জু, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি এড. মুহসিন রশিদ, গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান, হাফেজ্জী হুজুর সেবা সংস্থার চেয়ারম্যান মাওলানা রজিবুল হক, গণ অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক খান, আরো উপস্থিত ছিলেন আধিপত্য প্রতিরোধ আন্দোলনের সভাপতি মাওলানা শওকত আমীন, সদস্য সচিব এয়াকুব শরীফ, আইনজীবী অধিকার পরিষদের সভাপতি ব্যারিস্টার জিশান মহসিন, বিপ্লব কুমার পোদ্দার, অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ।

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news