কবরস্থানের জায়গাকে কেন্দ্র করে দু'পক্ষের সংঘর্ষে ওসিসহ আহত অর্ধশতাধিক

উপজেলা প্রতিনিধি, বানিয়াচং

৬ মে, ২০২২, ১ year আগে

কবরস্থানের জায়গাকে কেন্দ্র করে দু'পক্ষের সংঘর্ষে ওসিসহ আহত অর্ধশতাধিক

হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে সৈদ্যরটুলা ছান্দের কবরস্থানে জায়গা ইসু ও গ্রাম্য আদিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু'পক্ষের ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে ওসিসহ অর্ধশতাধিক লোকজন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এবং উভয় পক্ষের ২০জনকে আটক করে পুলিশ।

সংঘর্ষে ২নং উত্তর পশ্চিম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দারুজ্জামান খানের বসত বাড়িতে হামলা চালিয়েছেন গ্রাম্য প্রতিপক্ষ ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান জামাত নেতা ইকবাল বাহার খানের লোকজন। এই হামলা ও সংঘর্ষে ২০টি বসত বাড়ি, দোকানপাট ভাংচুর, লুটপাট ও অর্ধ শতাধিক লোক আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়।গুরুতর আহত টেটা বিদ্ধ ৫ জনকে সিলেট ও ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে, (৫মে-বৃহস্পতিবার) সকাল ১০টায় স্থানীয় ২নং ইউনিয়নের সৈদ্যরটুলা ছান্দে। সংঘর্ষ থামাতে বানিয়াচং থানা পুলিশ ২৪ রাউন্ড টিয়ারশেল ও ১৪৮ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনেন।মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান থানা পুলিশ।

এলাকাবাসী ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়,২নং ইউপি চেয়ারম্যান হায়দার উজ্জামান খান ধন মিয়া সৈদরটুলা ছান্দের তোপখানা মহল্লার কবরস্থানের জন্য পাশের এক সংখ্যালঘু পরিবারের কাছ থেকে ১১শতক জায়গা ক্রয় করা হয় তোপখানা কবরস্থানের জন্য ফান্ডের টাকা দিয়ে।

কিন্তু এখান থেকে চেয়ারম্যানের পছন্দের ও একজন লোকের কাছে বেশী টাকা দিয়ে ব্যক্তিগত ভাবে ৭শতক জায়গা বিক্রি করার পায়তারা চালিয়ে যাচ্ছেন চেয়ারম্যান ও তার কাছের লোকজনদের নিয়ে। এছাড়াও ছান্দের লক্ষীবাওর জলাবন(খরতির জঙ্গলের)আয়কৃত কোটি টাকার হিসাব না দিয়ে টালবাহানা এমনকি ছান্দের কাগজ পত্রের জায়গার সাথে বিরুদীতা করে আসছিলেন।

এছাড়াও তার প্রতিপক্ষ একজনকে ছান্দের সর্দার নির্ধারনের বিষয় মেনে নিতে পারছিলেননা চেয়ারম্যান ও তার লোকজন। এনিয়েও উভয় পক্ষের মধ্যে মাস খানেক ধরে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করে আসছিলো। এ অবস্হায় কবরস্থানের বিষয়টিকে ইসু তৈরী করে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলেও ছান্দবাসী অনেকেই এসব তথ্য প্রদান।

এই ছান্দের দুটি পক্ষের মধ্যে একটি পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ২নং ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দারুজ্জামান খান ও অপর পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল বাহার খান ও বর্তমান ছান্দ সর্দার এডভোকেট নজরুল ইসলাম খান।

বৃহস্পতিবার সংঘর্ষের সময় তোপখানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে দুই পক্ষের লোকজনের কবরস্থানের বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এবিষয়টি মুহুর্তেই ইকবাল বাহার খান ও ছান্দের সর্দার এডভোকেট নজরুল ইসলাম এবং হায়দারুজ্জামান খান ধন মিয়ার লোকজনের নিকট পৌঁছলে শুরু হয় ছান্দের বিভিন্ন মহল্লায় উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র সস্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।

এসময় চেয়ারম্যান ও তার ভাইয়ের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। পরবর্তীতে হায়দারুজ্জামানের লোকজন প্রতিপক্ষের উপর হামলা চালায়। কিন্তু প্রতিপক্ষ লোকজন বিপুল শক্তিতে দফায় দফায় হামলা ও বাড়িঘর ভাংচুর করে। এসময় হায়দারুজ্জামান খান ধন মিয়াও তার বর্তমান বাড়ি তোপখানা থেকে পৈতৃক বাড়ি সৈদরটুলায় এসে লাইসেন্সকৃত বন্দুক দিয়ে প্রতিপক্ষের লোকজনের উপর এলোপাতাড়ি গুলি চালান।

খবর পেয়ে বানিয়াচং থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এব্যাপারে বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ এমরান হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,তিনিসহ তাদের ১০পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এবং পুনঃরায় সংঘর্ষ এড়াতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।

পত্রিকা একাত্তর /আকিকুর রহমান রুমন

ভিডিও দেখতে সাবস্ক্রাইব করুন

youtube
Patrika71.com
news